কলকাতা: পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের (Partha Chatterjee) জামিন মামলায় ইডির বিশেষ অধিকর্তার রিপোর্ট তলব। '১ বছর ৭ মাস জেলে আছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। অনির্দিষ্টকালের জন্য কাউকে হেফাজতে রাখা যায় না। কবে থেকে নিম্ন আদালতে বিচারপর্ব শুরু করা সম্ভব? জানাতে হবে রিপোর্টে', নির্দেশ বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষের। গুরুতর অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত, সেটা ঠিক আছে, কিন্তু কতদিন? ইডিকে প্রশ্ন বিচারপতির। ২৭ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।

  


গতবছরের শেষে রেশন দুর্নীতি, নিয়োগ দুর্নীতি -সহ একাধিক মামলায় সক্রিয়ভাবে তদন্তে নামে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। এদিকে লোকসভা নির্বাচনের বছর পড়তেই অন্যতম ফোকাসে ছিল রাম মন্দির উদ্বোধন। এদিকে জানুয়ারির বাইশ তারিখের আগে আরও বেশি সক্রিয় পদক্ষেপ নেবে কেন্দ্রীয় সংস্থা, এমন চাপানউতোর ছিল আকাশে-বাতাসে। তবে এই সব কিছুর মাঝেই, জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহে আচমকাই আলো টানে সন্দেশখালিকাণ্ড। ফেব্রুয়ারি শেষের পথে। এখনও অধরা সন্দেশখালিকাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত শেখ শাহজাহান। তবে ইতিমধ্যেই শ্রীঘরে শাসকদলের একাধিক হেভিওয়েট। তারমধ্যে বলার অপেক্ষা রাখে না, অন্যতম পার্থ চট্টোপাধ্যায়। 


আড়ালে থেকে দুর্নীতিতে কলকাঠি নেড়েছেন পার্থই, দাবি সিবিআইয়ের। 'এমনভাবে অভিযুক্তরা অপরাধ করত, যাতে ধরা না পড়েন। তদন্তে দেখা যাচ্ছে গোটা নিয়োগ দুর্নীতির ছবিতেই রয়েছেন পার্থ চট্টোপাধ্যায়। যাঁরা দুর্নীতিতে থাকতে চাইতেন না, প্রশ্ন তুলতেন, তাঁদের পদত্যাগে বাধ্য় করা হত', কথা না শুনলে হুমকিও দেওয়া হত বলে অভিযোগ সিবিআইয়ের আইনজীবীর। '৮ জানুয়ারি, ২০২০: পার্থর বাড়িতে বৈঠক থেকে এক আধিকারিককে পদত্যাগে বাধ্য করা হয়। শিক্ষক সমাজ গড়েন, চিকিৎসক ভুল করলে একজনের ক্ষতি। যেভাবে অযোগ্য প্রার্থীদের শিক্ষক করা হয়েছে, তাতে সমাজ কোথায় যাবে?', পার্থর জামিনের বিরোধিতা করে চাঞ্চল্যকর দাবি সিবিআইয়ের আইনজীবীর। 


২০২২ সালের ২৩ জুলাই ১৯ ঘণ্টা ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর নাকতলার বাড়ি থেকে পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছিল ED। তাঁর ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্যায়ের জোড়া ফ্ল্যাটে মিলেছিল গুপ্তধনের খোঁজ। ডায়মন্ড সিটি সাউথ আবাসনের ফ্ল্যাট থেকে উদ্ধার হয়েছিল ২১ কোটি ২০ লক্ষ টাকা। বেলঘরিয়ার ফ্ল্য়াট থেকে পাওয়া গিয়েছিল ৩০ কোটি নগদ ও কয়েক কোটি টাকার গয়না। হদিশ মেলে পার্থ ও অর্পিতার নামে একাধিক ফ্ল্য়াট, বাংলো, বাগানবাড়ির।


আরও পড়ুন, ব্যারাকপুরে জনতার রাজ চলছিল না? রাজ চক্রবর্তীর জন্মদিনের পোস্টারে 'গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে'র গন্ধ


এখানেই শেষ নয়। তদন্তে উঠে এসেছিল একের পর এক চোখ কপালে তোলা তথ্য। হাইকোর্টে (Calcutta High Court) রিপোর্ট জমা দিয়ে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা দাবি করে, নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় প্রায় ৩৫টি ভুয়ো কোম্পানির হদিশ পেয়েছিল তারা। ওই সমস্ত কোম্পানি খুলেছিলেন ধৃত প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। সে সংস্থার মাধ্যমে চাকরি বিক্রির কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করা হয়েছিল বলে রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল।