সৌমেন চক্রবর্তী, ডেবরা: রোগী পরিচয় দিয়ে বাড়িতে ঢুকেছিলেন একদল লোক। তার পরই বাড়ি থেকে দেহ উদ্ধার হল চিকিৎসক এবং তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ। এই ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে ডেবরায়। গন্ডগোল কিছু একটা হচ্ছে বলে ঠাহর করতে পেরেছিলেন এলাকার বাসিন্দারা। কিন্তু কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যান বলে জানা যায়। পরে এই ঘটনায় দু'জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। (Debra Murder Case)
পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডেবরার ভগবানবাসান এলাকার ঘটনা। সেখানে ১৬ নং জাতীয় সড়কের পাশে একটি বাড়িতে এই ঘটনা ঘটেছে। ওই বাড়ির মালিক পেশায় চিকিৎসক, তাঁর নাম শেখ আলাউদ্দিন। স্ত্রীর নাম রূপসারা বিবি। জাতীয় সড়কের পাশে ওই বাড়িতে বেশ কয়েক জন প্রবেশ করেন বলে জানা গিয়েছে। রোগী পরিচয় দিয়ে চিকিৎসকের সঙ্গে দেখা করতে চান বলে জানান। তার পর ঢোকেন বাড়ির ভিতর। (Paschim Medinipur News)
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, মোটর সাইকেলে চেপে বেশ কয়েক জন এসে পৌঁছন। নিজেদের রোগী বলে দাবি করে ভিতরে ঢোকেন। তাঁদের আচরণে সন্দেহ জাগে অনেকেরই। এর পর বাড়ির ভিতরেও কিছু একটা ঘটছে বলে বুঝতে পারেন সকলে। কিন্তু কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগে মোটর সাইকেল ফেলে রেখেই দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যান বলে দাবি স্থানীয়দের। বাড়িতে ঢুকে চিকিৎসক এবং তাঁর স্ত্রীর মৃতদেহ দেখতে পান সকলে।
খবর পেয়ে ওই বাড়িতে পৌঁছয় পুলিশ। বাড়ির বাইরে রাখা দু'টি মোটর সাইকেল এবং দুই জোড়া জুতা উদ্ধার করা গিয়েছে। ওই মোটর সাইকেলের নম্বর ধরেই এর পর দৃষ্কৃতীদের খোঁজ শুরু হয়, তাতে দু'জনের খোঁজ মেলে। তাঁদের গ্রেফতার করেছে ডেবরা থানার পুলিশ। ধৃতদের নাম বান্টি মাহাত এবং ঝড়েশ্বর সাউ। বান্টির বাড়ি খড়্গপুরে, ঝড়েশ্বরের কেশপুরের বিশ্বনাথপুরে।
জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে ধৃতরা জানিয়েছে, আর্থিক লেনদেন নিয়ে ঝামেলা বেধেছিল। সেই নিয়েই ওই বাড়িতে প্রবেশ করেন তাঁরা এবং শেখ আলাউদ্দিনকে ধারাল অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে খুন করেন। সেই সময় তাঁর স্ত্রী এসে পড়ায়, খুন করা হয় তাঁকেও। ধৃতদের কাছ থেকে আরও একটি মোটর সাইকেল উদ্ধার হয়েছে। একটি ছুরি বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। পরিকল্পনা করেই তাঁরা এই ঘটনা ঘটিয়েছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে অনুমান পুলিশের। বুধবারই ধৃতদের মেদিনীপুর আদালতে তোলার কথা।