কলকাতা : মানিক ভট্টাচার্যকে কোর্টে বিচারকের ধমক। 'আইন কলেজের একজন অধ্যক্ষ ছিলেন, আইন জানেন না?' বলেই মন্তব্য করেন বিচারক।এদিন আদালতে মানিক ভট্টাচার্যের (Manik Bhattacharya) আইনজীবী বলেন, আমার মক্কেল কিছু বলতে চান। তখন বিচারক বলেন, আমরা সবাই আইনের ছাত্র। শুনেছি উনি আইন কলেজের প্রিন্সিপাল ছিলেন। ওনার নিশ্চই জানেন, একবার আইনজীবী নিয়োগ করলে আর আদালতে নিজে বলা যায় না। কোর্টের ডেকোরাম তো জানা উচিত।

এরপর, মানিক ভট্টাচার্য বলেন, আমি আর্টিকল ২১ ব্যবহার করতে চাই। তখন বিচারক বলেন, আর্টিকল ২১-এর জন্য হাইকোর্টে যেতে হয়। তখন মানিক ভট্টাচার্য বলেন, একটি কথা বলতে চাই। এর বিরোধিতা করে ED-র আইনজীবী বলেন, ওনার ভাই হীরালাল ভট্টাচার্য। অনেকগুলি অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে। তাঁর নামেও অ্যাকাউন্ট আছে। উনি (হীরালাল ভট্টাচার্য) জানিয়েছেন যে, আমার দুর্ভাগ্য আমি মানিক ভট্টাচার্যর দাদা। জোর করে অ্যাকাউন্ট ব্যবহার করা হয়েছিল। একজন বাবার কর্তব্য তাঁর স্ত্রী ও ছেলেকে রক্ষা করা। মানিক ভট্টাচার্যর জন্য তাঁর স্ত্রী ও ছেলে জেলে রয়েছেন। জামিনের আবেদনের বিরোধিতা করছি।

শুনানি শেষে বিচারক মানিক ভট্টাচার্যের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে বলেন, আইন কলেজের প্রিন্সিপালকে বলে দেবেন আর্টিকল ২১-এর জন্য হাইকোর্ট যেতে। শেষ অবধি মানিক ভট্টাচার্যকে ১৮ মে পর্যন্ত জেল হেফাজতের নির্দেশ দেয় আদালত। অর্থাৎ আগামী প্রায় ২ মাস প্রেসিডেন্সি জেলেই কাটাতে হবে তৃণমূল বিধায়ককে।

প্রসঙ্গত, এবার ED-র স্ক্যানারে ২০১২-র TET-ও। ধৃত কুন্তল ঘোষের বয়ান থেকে জানা গেছে যে, ২০১২ এবং ২০১৪-র TET-এ বহু অযোগ্য প্রার্থীকে পাস করিয়ে দিয়ে, তাঁদের থেকে প্রায় ১০০ কোটি টাকা তুলেছিলেন অয়ন শীল। গোটা বিষয়টা জানতেন প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের তৎকালীন সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য। এরইমধ্য়ে একাধিক পুরসভায় নিয়োগের ক্ষেত্রেও দুর্নীতির চাঞ্চল্য়কর অভিয়োগ উঠেছে !

এর পাশাপাশি, ED-র আইনজীবী এদিন আদালতে দাবি করেন, মানিক ভট্টাচার্য গোটা পরিবারকে নিয়ে একাধিকবার বিদেশ ভ্রমণ করেছেন। কার্যত বিশ্বভ্রমণ করেছেন। কিন্তু ব্যাঙ্ক থেকে এক টাকাও খরচ হয়নি। মনে করা হচ্ছে, নিয়োগ দুর্নীতির টাকা দিয়েই এই বিদেশ ভ্রমণ করেছেন মানিক ভট্টাচার্য। ২০১৪-র TET-এর বিষয়টা ED-র তদন্ত করার কথা। সেই মামলায় মানিক ভট্টাচার্য হেফাজতে রয়েছেন। এখন তারা TET ২০১২-র কথা বলছেন। যেটা সবে সামনে এসেছে। ED বলছে কুন্তল এবং অয়ন ২০১২-র TET-এর পরীক্ষার্থীদের বেআইনিভাবে চাকরি দিয়েছেন।

আরও পড়ুন- চাকরি বিক্রির দুর্নীতির টাকায় টলিউডে শান্তনু-ঘনিষ্ঠ অয়নের বিনিয়োগ ? রুপোলি জগতে পা রেখেছিলেন অয়ন ঘনিষ্ঠ শ্বেতা