কলকাতা: 'শেষ হয়েও হইল না শেষ..', নিয়োগ দুর্নীতির (Recruitment Scam) 'মিডলম্যান' প্রসন্ন রায়ের অফিসে ইডি হানায় (ED Raid) উদ্ধার হয়েছে একরাশ নথি-পত্র। 'মিডলম্যানের' হাত ধরে কার কার পকেটে গিয়েছিল? নিয়োগ দুর্নীতির কোটি কোটি টাকা কোথায় ব্যবহার করা হয়েছে? মূলত 'মানি ট্রেল' খুঁজে বার করতেই তৎপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ইডি সূত্রে খবর, মিডলম্যান প্রসন্নর নিউটাউনের অফিসে ৪৫০টির বেশি সম্পত্তির দলিল উদ্ধার হয়েছে। মিলেছে ১০০-র বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের নথিও। ৫ হাজার পাতার বেশি নথি উদ্ধার হয়েছে তল্লাশিতে।


রাজ্যের উত্তর থেকে দক্ষিণ, হোটেল সাম্রাজ্য বিস্তার করেছিলেন প্রসন্ন রায়। উত্তরবঙ্গ থেকে সুন্দরবন, হোটেল ব্যবসা চালাচ্ছিলেন প্রসন্ন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি, প্রসন্ন রায়ের অন্তত ৪০০ থেকে ৪৫০ টি জায়গায় সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। কোথাও নিজের নামে, কোথাও পরিবারের সদস্যদের নামে সম্পত্তি কিনে রেখেছেন নিয়োগ দুর্নীতির 'মিডলম্যান'। এই সম্পত্তিগুলির 'ডিড ভ্যালু' ১২৫ কোটি।


কিন্তু 'মার্কেট ভ্যালু' ৪০০ থেকে ৫০০ কোটি টাকা। আর এই বিপুল সম্পত্তিতেই নজর রয়েছে ইডির। শুধু ট্রাভেল এজেন্সির ব্যবসা করেই ৪০০ কোটির সম্পত্তি কেনা সম্ভব? উত্তর খুঁজতেই  নিউটাউনের আইডিয়াল ভিলায় প্রসন্ন রায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন ইডি আধিকারিকরা। আইডিয়াল ভিলা ১০৫ নং বাংলোতে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তাঁকে। ১০৬ নম্বর আইডিয়াল ভিলায় নিয়ে যাওয়া হয় তাঁর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদরে।


ইডি সূত্রে খবর,এর বাইরে আরও কী সম্পত্তি রয়েছে? আর কী কী ব্যবসা রয়েছে? ব্যবসার বাইরে আয়ের উৎস কী? কোথা খেকে এইসব সম্পত্তি কেনা হয়েছে? নিয়োগ দুর্নীতিতে কী ভূমিকা ছিল?পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও যোগাযোগ ছিল কি? মূলত এই প্রশ্নগুলিই ইডির তরফে করা হয় প্রসন্ন রায়কে। এদিনই প্রসন্নকে জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসে পাথুরিয়াঘাটায় তাঁর বাগান বাড়ির প্রসঙ্গ।


ইডি সূত্রে এমনটাও দাবি করা হচ্ছে যে, জামিন পাওয়ার পর থেকেই প্রসন্ন রায় তাঁর একের পর এক সম্পত্তি বিক্রি করতে শুরু করেছিলেন। যদিও, ৪ টি মামলায় অভিযুক্ত প্রসন্ন রায়কে ১ টি মাত্র সম্পত্তিই বিক্রি করার অনুমতি দিয়েছিল আদালত। ইডি সূত্রে খবর, প্রসন্ন বাদেও খোঁজ মিলেছে 'নতুন' মিডলম্যানের। প্রসন্ন রায়ের সহযোগী হিসাবে নতুন করে নাম উঠে এল মিডলম্যান রোহিত ঝা-র। প্রসন্নর সহযোগী ছিলেন আরেক মিডলম্যান প্রদীপ সিং-ও। এরা তিনজনে মিলেই বিস্তার করেছিলেন দুর্নীতির চক্রের সাম্রাজ্য।


আরও পড়ুন,'রাজ্যজুড়ে চাকরি লুঠ করেছে TMC সরকার', দাবি শুভেন্দুর


কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সূত্রে দাবি, নিয়োগ দুর্নীতির মিডলম্যান প্রসন্ন রায়ের সংস্থায় কাজ করতেন রোহিত। তাঁকে নিয়োগ দুর্নীতির টাকা তোলার কাজে ব্যবহার করতেন প্রসন্ন। রোহিতের হাত দিয়েই টাকা যেত এসপি সিনহার কাছে।এর সঙ্গে আরও কেউ যুক্ত কিনা, তার খোঁজ করছেন তদন্তকারীরা।