কলকাতা: ইডি হেফাজতে থাকা তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহার আরও 'কীর্তি' ফাঁস। নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ED চাঞ্চল্যকর দাবি করল। কেন্দ্রীয় এজেন্সির দাবি, বিধায়ক হওয়ার আগে চাকরি বিক্রির এজেন্টের কাজ করতেন জীবনকৃষ্ণ।
নবম-দশমে নিয়োগ দুর্নীতি মামলায়, সোমবার ফের নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার হয়েছেন বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। ED সূত্রে দাবি, তৃণমূলের বিধায়ক হওয়ার আগে চাকরি-বিক্রির এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন জীবনকৃষ্ণ সাহা। বড়ঞার বিধায়ক হওয়ার পর ১০-১২ জনকে নিয়ে তৈরি করে ফেলেন চাকরি-বিক্রির নেটওয়ার্ক। এই এজেন্টদের দিয়েই ‘ঘুষ দিলে চাকরি’ হবে বলে চাকরিপ্রার্থীদের টোপ দেওয়া হত। সূত্রের দাবি, লাখ লাখ টাকার বিনিময়ে, অযোগ্য়দের সরকারি চাকরি বিক্রি করেছেন তিনি। শুধু তাই নয়, চাকরি না পেয়ে কেউ টাকা ফেরত চাইলে, তাঁকে গ্রেফতার করানো বা তাঁর নামে FIR করার হুমকিও দিয়েছেন। ED সূত্রে দাবি, ২০১৯-’২০-’২১, এই ৩ বছরে জীবনকৃষ্ণ সাহা ও তাঁর স্ত্রীর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ধাপে ধাপে জমা পড়েছিল ৫০ লক্ষ টাকা। এই টাকার উৎস সম্পর্কে কোনও সদুত্তর দিতে পারেননি বড়ঞার তৃণমূল বিধায়ক। চাকরি-বিক্রির টাকা নগদে নেওয়া ছাড়াও অ্যাকাউন্ট ট্রান্সফারও হয়েছে বলে ED দাবি করেছে।
এবিষয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, "আইন আইনের পথে চলুক। যদি সত্যিই কেউ দোষ করে থাকে, তাহলে তদন্তে উঠে আসবে। আদালতে যাবেন। এই নিয়ে একটি শব্দও বলব না। কিন্তু সময় নিয়ে অবশ্যই বলব। যে প্রধানমন্ত্রী দু-চারদিন আগে একটা ভোট চাই-ভোট দিন এরকম গোছের কিছু কথা বলে... সেদিন থেকেই আমরা অনুমান করছিলাম যে, এবার নামবে কেন্দ্রীয় এজেন্সিগুলো।'' এর আগে CBI হানার সময় বাড়ির ছাদ মোবাইল ফোন পুকুরে ছুড়ে ফেলেছিলেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ সাহা। আর ED সূত্রে দাবি, সোমবার অফিসাররা তৃণমূল বিধায়কের বাড়িতে পৌঁছলে তিনি নিজেই বাড়ির ছাদ থেকে ঝাঁপ দেন। সোজা গিয়ে পড়েন বাড়ির পাশে জঙ্গলে কাদার মধ্যে। তারপরই গ্রেফতার। এর আগে সিবিআইয়ের হাতেও নাটকীয়ভাবে গ্রেফতার হয়েছিলেন তৃণমূল বিধায়ক জীবনকৃষ্ণ। এবার ইডি-র হাতে। তবে, কংগ্রেস প্রশ্ন তুলছে, শুধু গ্রেফতারি আর জামিনই হচ্ছে। সবাই যেটা চাইছে, সেই দোষীদের সাজা কোথায়! প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ অধীর চৌধুরী বলেন, "ED-র অধীনে যে তদন্ত, সেই তদন্তের সাজাপ্রাপ্তের পরিসংখ্যান কী বলুন? সবাই দেখতে পাচ্ছে, কে পালাচ্ছে, কে পাঁচিল টপকাচ্ছে, কে মোবাইল ফেলছে, সবাই দেখতে পাচ্ছে। কিন্তু যেটা দেখতে পাচ্ছে না, সেটা হচ্ছে শাস্তি।''