কলকাতা: আদালতে প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বিরুদ্ধে 'রাজসাক্ষী' তাঁরই জামাই! প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতে ইডির মামলায় 'রাজসাক্ষী' পার্থর জামাই কল্যাণময় ভট্টাচার্য।  



ইডি সূত্রে খবর, বিচারপ্রক্রিয়া চলাকালীন রাজসাক্ষী হতে চেয়ে আবেদন পার্থর জামাইয়ের। ব্যাঙ্কশাল আদালতে ইডির স্পেশাল কোর্টে আবেদন কল্যাণময় ভট্টাচার্যর। কীভাবে দুর্নীতি হয়েছে, কোথায় গিয়েছে দুর্নীতির টাকা কোর্টকে জানাতে চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। কোনও চাপ নেই, সদিচ্ছায় কোর্টকে জানাতে চান পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের জামাই। ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে 'রাজসাক্ষী' কল্যাণময়র বয়ান রেকর্ড হবে। রাজসাক্ষী হওয়ার কোনও রাড়তি সুবিধা পাবেন না কল্যাণময় ভট্টাচার্য।


সম্প্রতি জ্য়োতিপ্রিয় মল্লিকের জেলমুক্তির পরই প্য়ানিক অ্য়াটাক হয়েছিল পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়ের, প্রেসিডেন্সি জেল সূত্রে খবর। বালুর জামিনের পরই বুকে ব্য়থা শুরু হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীর, খবর সূত্রের। পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে পরীক্ষা করেছিলেন হাসপাতালের হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ। জেল কর্তৃপক্ষের তরফে চিকিৎসার জন্য় SSKM- এ চিঠি দিয়ে মেডিক্য়াল টিম গঠনের কথা বলা হয়েছিল।


 গত বছরের শেষে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতিকাণ্ডে CBI-এর মামলায় পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের জামিনের আবেদন খারিজ করে দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট। আর ওইদিনই নিম্ন আদালতে বিচারকের কড়া ভর্ৎসনার মুখে পড়েছিল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। 'আপনাদের জন্যই চার্জ গঠনে দেরি হচ্ছে।প্রয়োজনে সারারাত বসে কাজ করুন ', পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়দের বিরুদ্ধে চার্জগঠনের শুনানিতে ED-কে এভাবেই ভর্ৎসনা করেছিলেন বিচারক।


আগেই নিম্ন আদালতের বিচার প্রক্রিয়ার জন্য সময় নির্দিষ্ট করে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। জানুয়ারি মাসের দ্বিতীয় এবং তৃতীয় সপ্তাহের মধ্যে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ করতে হবে। এদিকে নতুন বছর পড়তেই  নিয়োগ দুর্নীতি মামলায় ইডির চার্জ গঠনের সময় পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়-ঘনিষ্ঠ অর্পিতা মুখোপাধ্য়ায় বিচারককে বলেছিলেন, 'সরকারের সঙ্গে যুক্ত ছিলাম না।' কোনও অনৈতিক কাজের সঙ্গে তিনি যুক্ত নন বলেই জানিয়েছিলেন। 


 যদিও ইডির মামলায় তাঁকে ইতিমধ্যেই জামিন দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। কিন্তু সিবিআই-এর মামলায় কিছুতেই শিকে ছিঁড়ছে না পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের। গত বছরের শেষে উল্টে আরও বিপাকে পড়তে হয়েছিল প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রীকে। তাঁর বিরুদ্ধে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট দিয়েছিল সিবিআই। চার্জশিটে নাম ছিল পার্থ-ঘনিষ্ঠ ব্যবসায়ী সন্তু গঙ্গোপাধ্যায়, ও অয়ন শীলের। প্রথমে পুর-নিয়োগ-দুর্নীতিতে অয়নে নাম সামনে এলেও, পরে প্রাথমিক নিয়োগ দুর্নীতিতেও উঠে আসে তাঁর নাম। 


আরও পড়ুন, 'পুরভোটে হারিয়েছিলাম, বিধানসভা ভোটেও হারাব', শুভেন্দুর নিশানায় তাপসী !


 গত বছর ১ অক্টোবর, পার্থ চট্টোপাধ্য়ায়কে শোন অ্যারেস্ট করেছিল CBI. এর ৮৮ দিনের মাথায় চার্জশিট পেশ করেছিল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ৪৫ পাতার চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছিল ব্যাঙ্কশাল কোর্টে। ৪৫ পাতার চার্জশিটের সঙ্গেই জমা দেওয়া হয়েছিল ১০০০ পাতার নথিও।  সেখানে প্রাথমিকে নিয়োগ দুর্নীতির ক্ষেত্রে পার্থ চট্টোপাধ্যায়, সন্তু গঙ্গোপাধ্যায় ও অয়ন শীলের সিন্ডিকেট কীভাবে কাজ করেছিল, সেই বিষয়টি উল্লেখ করেছিল  সিবিআই।