কলকাতা: যাদবপুরকাণ্ডে (Jadavpur University) এসএফআইয়ের নিশানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার। 'ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার দায়িত্বে রেজিস্ট্রার, অথচ ঘটনার পর থেকে ওঁরই পাত্তা নেই। এখনও পর্যন্ত ক্যাম্পাসে আসার প্রয়োজন বোধও করেননি রেজিস্ট্রার। ২১ জুলাইয়ের সমাবেশে যেতে পারেন, অথচ ছাত্রমৃত্যুর পর ক্যাম্পাসে আসতে পারছেন না।'
ছাত্র মৃত্যুর ঘটনায় তোলপাড়: যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মর্মান্তিক পরিণতির জন্য় দায়ী কারা? এই প্রশ্ন ঘিরে যখন রাজ্য উত্তাল হচ্ছে, তখন রবিবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই পড়ুয়াকে গ্রেফতার করল পুলিশ। প্রথমে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তনী এবং মেন হস্টেলের প্রভাবশালী দাদা, সৌরভ চোধুরীকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাঁকে জেরা করে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে এবার গ্রেফতার করা হল মনোতোষ ঘোষ এবং দীপশেখর দত্ত নামে বিশ্ববিদ্যালয়ের আরও দুই পড়ুয়াকে। ধৃত দীপশেখর (১৯) অর্থনীতির দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। এবং মনোতোষ (২০) সোশিওলজির দ্বিতীয় বর্ষের পড়ুয়া। তাঁদের বিরুদ্ধেও খুন ও সম্মিলিতভাবে অপরাধ সংগঠিত করার অভিযোগে মামলা রুজু হয়েছে।
যাদবপুরের প্রথম বর্ষের পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনায় ক্রমশ জোরাল হচ্ছে র্যাগিং-তত্ত্ব। পুলিশ সূত্রে খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়াদের জিজ্ঞাসাবাদ করে চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। পড়ুয়াদের দাবি, ওই ছাত্রকে রক্তাক্ত অবস্থায় পাওয়ার পর, সিনিয়ররা জুনিয়রদের শিখিয়ে দেয়, কারও বাড়ি থেকে ফোন এলে বলতে হবে মানসিকভাবে অসুস্থ ছাত্র ঝাঁপ দিয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, ওইদিন রাত ১১টা নাগাদ যাদবপুর থানার ল্যান্ড লাইনে ফোন করে জানানো হয়, হস্টেলের এক ছাত্র পড়ে গিয়েছে।খবর পেয়ে রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ থানার পাশেই মেন হস্টেলে পৌঁছয় পুলিশ। কিন্তু গেট ভিতর থেকে তালাবন্ধ থাকায় পুলিশ ঢুকতে পারেনি। এরপর পৌনে ১২টা নাগাদ একটি হলুদ ট্যাক্সি হস্টেল থেকে বেরোলে পুলিশ সেই গাড়ি অনুসরণ করে। রাত ১২টা নাগাদ কেপিসি হাসপাতালে পৌঁছে পড়ুয়াদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ গোটা বিষয়টি জানতে পারে।
শুধু নদিয়ার ওই ছাত্রই নয়, হস্টেলে থাকতে আসা প্রথম বর্ষের সব পড়ুয়াদের ওপরই অমানসিক অত্যাচার চলে। পুলিশের কাছে এমনই বিস্ফোরক বয়ান দিয়েছেন যাদবপুরের মেন হস্টেলের রাঁধুনি। পুলিশ সূত্রে দাবি, প্রথম বর্ষের পড়ুয়াদের ওপর কীভাবে অত্যাচার চলত।সিনিয়রদের কী কী কাজ করে দিতে হত।কীভাবে চাপ দেওয়া হত, তা জানিয়েছেন ওই রাঁধুনি। রবিবার আদালতে সরকারি আইনজীবী সেই বয়ান পেশ করেন। পুলিশ জানিয়েছে, মনোতোষ ও দীপশেখরের মোবাইল ফোন বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। খতিয়ে দেখা হচ্ছে পরিচয়-পর্বের কোনও ভিডিও তোলা হয়েছিল কি না। ভিডিও বা ছবি থাকলে তা মুছে দেওয়া হয়েছে কি না। তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এছাড়া, ওই দুই পড়ুয়ার ফোন থেকে কোনও টেক্সট মেসেজ করা হয়েছিল কি না, করলে কাদের ফোন করা হয়েছিল। তাও দেখছে পুলিশ। ধৃতদের আদালতে তোলা হলে ২ জনকে ২২ তারিখ পর্যন্ত পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দেন বিচারক।