কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনে চার্জশিট পেশ করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI. সঞ্জয় রায়কেই ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত হিসেবে চিহ্নিত করেছেন কেন্দ্রীয় গোয়েন্দারা। ফরেন্সিক রিপোর্ট তুলে ধরে তার সাপেক্ষে একাধিক বিষয়ও তুলে ধরা হয়েছে। বলা হয়েছে, সঞ্জয়ের লালা এবং দেহরসের নমুনা যেমন ঘটনাস্থল থেকে সংগৃহীত নমুনার সঙ্গে যেমন মিলে গিয়েছে, তেমনই অপরাধস্থলে পাওয়া চুলও সঞ্জয়েরই। (RG Kar Case)
শিয়ালদা আদালতে মোট ৪৫ পাতার চার্জশিট জমা দিয়েছে CBI. চার্জশিটে ১২৮ জন সাক্ষীর বয়ান সংগ্রহের কথা উল্লেখ রয়েছে। পাশাপাশি, ৯০টি নথির উল্লেখ রয়েছে চার্জশিটে। অপরাধস্থল এবং সংলগ্ন জায়গায় থেকে পাওয়া ৬৫টি সামগ্রীর তালিকার উল্লেখও রয়েছে। সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে একাধিক তথ্যপ্রমাণের উল্লেখও করেছে CBI. (RG Kar CBI Investigation)
CBI জানিয়েছে, সঞ্জয়ের বিরুদ্ধে একাধিক তথ্যপ্রমাণ মিলেছে। সিসিটিভি ক্যামেরায় দেখা গিয়েছে তাঁকে। মোবাইল ফোনের লোকেশন অনুযায়ীও ঘটনাস্থলে ছিলেন তিনি। DNA-র যে নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছিল, তা পুনরায় যাচাই করেও সঞ্জয়ের উপস্থিতির প্রমাণ মিলেছে। ঘটনার যে বিবরণ দিয়েছে CBI, তা হল-
- সন্ধে ৬টা ১০ নাগাদ বাড়ি থেকে ড্রাইভার নিয়ে বেরোন হাসপাতালের উদ্দেশে। চেস্ট ওপিডি-তে ডিউটি ছিল তাঁর। রেফারাল মেডিক্যাল কেসের জন্য পোস্ট ওপিডি-র রাউন্ডেও ডিউটি করতে হয়েছে। রাত ১০টা বেজে ১৫ মিনিট নাগাদ অনলাইন পাঁচ জনের জন্য খাবার অর্ডার করেন তিনি।
- আরও যে চার জন ছিলেন, রাত ১২টা থেকে ১টা পর্যন্ত অলিম্পিক্সের জ্যাভলিন ম্যাচ দেখেন মোবাইল ফোনে। এর পর তিন জন বিশ্রাম নিতে চলে যান অন্যত্র। একজন ডিউটি জয়েন করেন।
- এর পর ঘটনায় সঞ্জয়ের ভূমিকা কী ছিল? CBI জানিয়েছে, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজে ৪টে বেজে ৩ মিনিটে করিডরে দেখা যায় সঞ্জয়কে।
৪টে বেজে ৩২ মিনিটে নাগাদ বেরিয়ে আসে। ৪টে বেজে ৩৭ মিনিটে বেরিয়ে যায় মোটর বাইক নিয়ে। - CBI জানিয়েছে, আর জি কর মেডিক্যালে চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনে সঞ্জয়ই জড়িত। ফরেন্সিক পরীক্ষায় সঞ্জয়ের লালা এবং দেহরস মিলেছে। অপরাধস্থলে প্রাপ্ত চুলও সঞ্জয়েরই। ধস্তাধস্তিতেই নির্যাতিতার চশমার কাচ ভেঙে যায় বলে জানিয়েছেন গোয়েন্দারা।
১২৮ জন সাক্ষীর বয়ান নেওয়া হয়েছে চার্জশিটে, তাদের মধ্যে আছেন একাধিক পুলিশকর্মী, খবর সূত্রের। নেওয়া হয়েছে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের বয়ান, চার্জশিটে আছে ফরেন্সিক রিপোর্ট ও সেমিনার রুমের একাধিক ছবি।
চার্জশিটে রয়েছে আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার রুমের স্কেচ ও ফ্লোর প্ল্যান, খবর সূত্রের। সঞ্জয়ের মোবাইলের কল ডেটা রেকর্ডের তথ্যও আছে চার্জশিটে, খবর সূত্রের।
মোট ১১টি পয়েন্ট তুলে ধরে CBI. ১৬.২৯-এ বলা হয়েছে, অভিজিৎ মণ্ডল এবং সন্দীপ ঘোষকে যে গ্রেফতার করা হয়েছে, তাতে বৃহত্তর ষড়যন্ত্র হয়েছে কি না, তথ্যপ্রমাণ নষ্ট হয়েছে কি না, কোনও ভাবে ঘটনাকে চেপে দেওয়া হয়েছে কি না, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। পরের চার্জশিটে তা তুলে ধরা হবে।
সে কিছু করেনি, ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানে না বলে আদালতে দাবি করে সঞ্জয়। সপ্তাহে চার থেকে পাঁচ দিন এই মামলার ইন ক্যামেরা শুনানি হবে বলে জানিয়েছে বিচারক।