কলকাতা: আর জি কর কাণ্ড নিয়ে এবার কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI-এর দফতরে অভিযান। চার্জশিটে কেন একজনের নাম রয়েছে শুধু, সেই প্রশ্ন তুলে CBI দফতর অভিয়ানের ডাক দিল চিকিৎসক এবং নার্সদের তিনটি সংগঠন। আগামী কাল, অর্থাৎ বুধবার CGO কমপ্লেক্স অভিযানে যাবে ডক্টর্স ফোরাম, মেডিক্যাল সার্ভিস সেন্টার এবং নার্সেস ইউনিটি সংগঠন। (RG Kar Protests)


আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনায় সোমবার শিয়ালদা আদালেত চার্জশিট পেশ করে CBI. চার্জশিটে অভিযুক্ত হিসেবে শুধুমাত্র সঞ্জয় রায়ের নামই রয়েছে বলে সূত্রের খবর। সেই নিয়েই আপত্তি জানিয়েছে চিকিৎসক এবং নার্সদের সংগঠনগুলির। CBI চার্জশিটে যে দাবি করেছে, তা হতাশাজনক বলে মন্তব্য করেছে তারা। বুধবার দুপুরে করুণীময়ী মোড় থেকে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান হবে। (RG Kar Case)


কেন চার্জশিটে মাত্র একজনের নাম দেখানো হল, CBI তদন্ত নিয়ে প্রশ্ন তুলে আগামী কাল সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানের ডাক দেওয়া হয়েছে। চিকিৎসক এবং নার্সদের মতে, CBI-এর চার্জশিট অসম্পূর্ণ। তদন্ত এখনও অনেকটা বাকি। সেই পরিস্থিতিতে তড়িঘড়ি এই চার্জশিট দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করছেন তাঁরা। তাই ন্যাশনাল মেডিক্যাল কলেজ, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, এসএসকেম, আর জি কর, এন আর এস-এর চিকিৎসক এবং নার্সদের সংগঠনরা সিজিও কমপ্লেক্স অভিযানে যাচ্ছেন। CBI-এর উপর চাপ রাখতে চাইছেন তাঁরা।


চিকিৎসক ও নার্সদের সংগঠনের তরফে বলা হয়, "৯ অক্টোবর বেলা ৩টেয় করুণাময়ী মোড় থেকে সিজিও কমপ্লেক্স অভিযান করব আমরা। দাবি কী? গতকাল CBI যে অন্তর্বর্তী চার্জশিট পেশ করেছে, তা হতাশাজনক এবং হাস্যকরও বলা যেতে পারে। ৫৫ দিন গবেষণার পর সঞ্জয় রায় নামের একজন ব্যক্তিকেই পেলেন, যিনিই নাকি ধর্ষণ এবং খুন করেছেন। অথচ পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী, এই রিপোর্ট কখনও একজন করতে পারে না। আমার মনে করি, এটা CBI-এর ব্যর্থতা, অপদার্থতা। আসলে কি কিছু গোপন করতে চাইছে? যেভাবে রাজ্য প্রশাসন প্রথম চার দিন তথ্য গোপন করছিল? আগামী কাল ষষ্ঠী। সকলকে বলব, দরকারে পুজোর প্যান্ডেল ছেড়ে কিছু ক্ষণের জন্য আসুন। আমরা সিজিও কমপ্লেক্স যাব।"


CBI-এর চার্জশিট ঘিরে রাজনৈতিক তরজাও শুরু হয়েছে। রাজ্যর মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, "আমরা তো প্রতিবাদ সবাই করেছি। সবাই চাইছি ফাঁসি হোক। কাল চার্জশিট দেওয়া হল। ওই কথা সাত দিনেই তুলে ধরেছিল কলকাতা। ৫৮ দিনে দিল CBI. সুরক্ষার বিষয়েও সরকারের তরফে অনেক বৈঠক হয়েছে। একদিনে ম্যাজিক তো হয় না! সব কাজ একদিনে হয় না, সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে সব চলছে।"


বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর কথায়, "তিনটে পার্ট আছে, একটা ধর্ষণ-খুন, দ্বিতীয়টা প্রমাণ লোপাট, তৃতীয়টা আর্থিক দুর্নীতি। ৬০ দিনের মধ্যে প্রাথমিক চার্জশিট না দিলে সঢ্জয় রায় জামিন পেয়ে যেত। এর পর অনেকগুলি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট হবে। তিনটি পার্টে কাজ করছে CBI. পাঁচ দিন করে দেওয়া হয়েছে। ধর্ষণের যা প্রমাণ, তা লোপাট করেই CBI-এর হাতে মামলা দেওয়া হয়েছে। CBI ভাল কাজ করছে। সুপ্রিম কোর্টের তত্ত্বাবধানে চলছে। আমরা ভরসা রাখি CBI-এর উপর। ধর্ষণের মামলায় আর কেউ জড়িয় নয় বলে যদি মনে করেন, তাঁরাই ঠিক করবেন। কিন্তু প্রমাণ লোপাট এবং ন্যায় বিচার থেকে বঞ্চিত করার যে চেষ্টা, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, সন্দীপ ঘোষ, বিনীত গোয়েলরা যা করেছেন, তার বিরুদ্ধে CBI যেন কড়া ব্যবস্থা নেয়।"