কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডে সুপ্রিম কোর্টে ফের পিছিয়ে গেল শুনানি। আজ সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানি হচ্ছে না। প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় রাষ্ট্রপতি ভবনে যাচ্ছেন বলে শুনানি হচ্ছে না আজ। আজ শুনানি না হলেও, কাল অর্থাৎ বুধবার শুনানি হবে মামলার। আগামী কাল সকাল ১০.৩০টায় শুনানি হবে বলে ঠিক হয়েছে। (RG Kar Case Hearing)


গত ১৫ অক্টোবর শীর্ষ আদালত যে নির্দেশ দিয়েছিল, তাতে বলা ছিল, ৫ নভেম্বর ৩টের সময় শুনানি হবে। সেই মতো আজ অপেক্ষা করছিলেন আইনজীবীরা। এদিন সকাল থেকে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ উত্তরপ্রদেশে মাদ্রাসা, ব্যক্তিগত সম্পত্তি, বিচারপতিদের বেতন ও পেনশন নিয়েও শুনানি হয়েছে। তাতে প্রায় ৩.৩০টে বেজে যায়। সলিসিটর জেনারেল তুষার মেহতা জানান, এখনও ২১ নম্বর অর্থাৎ আর জি কর শুনানি বাকি রয়েছে। সলিসিটর জেনারেল জানান, আজ হয়ত আদালত তাড়াতাড়ি বন্ধ হয়ে যাবে, সেক্ষেত্রে অন্য তারিখ দেওয়া হয় যেন। (Supreme Court)


এর পর প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড় জানান, আজ আদালত আগে উঠে যেতে পারে। মামলায় শুনানি করতে সময় লাগবে। কিন্তু আজ রাষ্ট্রপতিভবনে যেতে হবে তাঁকে। তাই আগামী কাল মামলার শুনানি করবেন তিনি। সকাল ১০.৩০টায় কোর্ট বসলে, প্রথম আর জি কর মামলারই শুনানি হবে। অর্থাৎ আগামী কাল সেখানে তদন্ত নিয়ে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা (CBI) স্টেটাস রিপোর্ট জমা দেবে। হলফনামা জমা দেবে রাজ্য সরকারও। (CJI DY Chandrachud)


সাধারণত সকাল ১০.৩০টায় আদালত বসে। সেক্ষেত্রে আর জি কর নিয়ে শুনানি শুরু হতে ১১টা বেজে যাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেখানে CBI-এর তদন্ত কতটা এগোল, জানা যাবে। রাজ্যও নিজের অবস্থান জানাবে। সেখানে সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগের প্রক্রিয়া সংক্রান্ত তথ্য আদালতে তুলে দেবে রাজ্য। আর জি কর কাণ্ডে অভিযুক্ত সঞ্জয় রায় সিভিক ভলান্টিয়ার। সেই প্রসঙ্গেই সিভিক ভলান্টিয়ার নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। হাসপাতালের পরিকাঠামো সংক্রান্ত কাজকর্ম কত এগিয়েছে, তাও জাানাতে হবে রাজ্যকে। পাশাপাশি, আর জি কর কাণ্ডে অন্যদের ভূমিকা নিয়ে কী তথ্য মিলেছে, আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগেই বা কী হাতে এসেছে, সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট দিতে হবে CBI-কে।


আর জি কর কাণ্ডের শুনানির দিকে তাকিয়ে গোটা দেশ। আজ শুনানি পিছিয়ে পড়ায় হতাশা উগরে দিয়েছেন আর জি করের জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের কারও কারও বক্তব্য, "আমরা হতাশ হয়েছি। ভেবেছিলাম, এই মামলাকে দৃষ্টান্তমূলক ঘটনা হিসেবে দেখা হবে। আমরা চেয়েছিলাম আদালতের পর্যবেক্ষণে বিচারবিভাগীয় তদন্ত হোক, দ্রুত নিষ্পত্তি হোক মামলার। কিন্তু আমরা পেয়েছি CBI তদন্ত। কিন্তু আদালত বলুন বা CBI, কোথাও আমরা যাঁরা আন্দোলন শুরু করেছিলাম, উত্তরগুলি অধরাই রয়ে গিয়েছে। কী মোটিফ, কতজন জড়িত, এতদিন পরও কিছু পাচ্ছি না। তিন মাস ধরে আন্দোলন চলল, গোটা দেশ তাকিয়ে ছিল, তার পরও তারিখের পর তারিখ, অবশ্যই হতাশ আমরা।"


আর এক পড়ুয়া ডাক্তার বলেন, "আমরা ভেবেছিলাম, এই মামলাটিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে। এর আগে, একবার শুনানি পিছিয়ে গিয়েছে। আর একবার আমাদের মামলা একেবারে শেষে রাখা হয়। স্থগিত হতে হতে শেষে শুনানি হয়। গতকাল CBI চার্জশিট দিয়েছে, তা নিয়ে হাজারো প্রশ্ন রয়েছে। আজ শুনানি পিছিয়ে যাওয়া আমাদের কাছে হতাশাজনক। এতদিন সর্বোচ্চ আদালতের উপর ভরা রেখে এসেছি। আদালতকে আর্জি, আমাদের সেই ভরসা যেন টলে না যায়।" আগামী কাল আদালতের শুনানির দিকেই আপাতত তাকিয়ে তাঁরা।