নয়া দিল্লি: আরজি কর কাণ্ডে 'অভয়া'র বিচার, হাসপাতালে নিরাপত্তা সুরক্ষিত করতে এবং আর জি কর মেডিক্যালে চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের ঘটনায় জড়িতদের দ্রুত চিহ্নিত করা এবং ঘটনার মোটিভ সামনে আনা এবং দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা- এই দাবি নিয়েই আন্দোলনে নেমেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। এমনকী, তথ্যপ্রমাণ লোপাটে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িতদের চিহ্নিত করে তদন্ত ও বিচারের আওতায় আনারও দাবি জানিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। সোমবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে ৫ ঘণ্টার বৈঠকের পরও আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকরা জানিয়ে দিয়েছিলেন কর্মবিরতি কবে তুলবেন তাঁরা তা সুপ্রিম শুনানির পর জিবি বৈঠকের পরই জানান হবে।
মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানিতে রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল জুনিয়র চিকিৎসকদের কর্মবিরতি নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। যদিও জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী ইন্দিরা জয়সিং জানিয়ে দেন আদালতের নির্দেশ মেনে কাজে ফিরতে চান আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা। কিন্তু যে দাবি বা যে বিষয় নিয়ে তাঁরা আশঙ্কা প্রকাশ করে এসেছে সেই বিষয়টির সমাধান না হলে তাঁরা কাজে ফিরতে ভয় পাচ্ছেন। সওয়ালে কপিল সিব্বল বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পর জুনিয়ার চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন তারা কাজে ফেরত যাবেন, এখনও যাননি।
সেই প্রসঙ্গেই এদিন ইন্দিরা জয়সিং বলেন, জুনিয়র চিকিৎসকরা মনে করছেন এই ঘটনায় আরও অনেকে জড়িত যারা এখনও হাসপাতালে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। এখন যদি তাঁরা হাসপাতালে কাজে ফেরেন তাহলে তাঁরাও আক্রান্ত হতে পারেন। এই মুহূর্তে ভয়ের পরিবেশ তৈরি হয়েছে সেখানে। এই প্রেক্ষাপটে জেনারেল বডি মিটিং হতে পারে আজ অথবা কাল। সেই মতোই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে কর্মবিরতি তোলা হবে কি না।
এ বিষয়ে সওয়াল জবাবের সময়ই রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিব্বল বলেন, মুখ্যমন্ত্রী ওঁদের আশ্বস্ত করেছেন, আর কী চাই? কারও বিরুদ্ধে কোনও শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে না এও জানান হয়েছে। যদিও এখানেই থেমে থাকেননি জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী। তিনি বলেন, যারা এই ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছিল তারা এখনও ওই হাসপাতালে কাজ করছেন। ফলে প্রশাসনকে এটা নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা কাজে ফিরলে যেন আমাদের ওপর কোনও আক্রমণ না হয়। সিব্বলের এদিন পাল্টা দাবি ছিল, 'কেন কড়া পদক্ষেপ হবে? আমরা কি ঘটনা চাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছি? মুখ্যমন্ত্রী অভয় দিয়েছেন যে কোনও কড়া পদক্ষেপ করা হবে না'।.
এদিনের শুনানিতে উঠে আসে তদন্তের গতিপ্রকৃতিও। সে প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বলেন, 'এখনও তদন্ত অনেক বাকি, আমাদের সিবিআইকে যথেষ্ট সময় দিতে হবে। সত্য উদঘাটনে সিবিআইয়ের সময় প্রয়োজন। সিবিআই তাদের রিপোর্টে যা লিখেছে, তা দেখে আমরা বিচলিত তদন্তে যে সমস্ত সূত্র মিলেছে, তাতে বোঝা যাচ্ছে মৃত চিকিৎসকের বাবার উদ্বেগ যথাযথ।' এই প্রেক্ষিতেই জুনিয়র চিকিৎসকদের আইনজীবী বলেন, যারা খুনের জায়গায় ছিল, তাদের নাম মুখবন্ধ খামে জমা দিতে পারি, খোলা আদালতে এসব নাম বলব না'।
এখনও স্বাস্থ্যভবনের সামনে ধর্নামঞ্চে অবস্থান করছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। রাজ্যের মেডিকেল কলেজগুলির সঙ্গে জেনারেল বডি মিটিংয়ের পরই তাঁরা আগামী সিদ্ধান্ত নেবেন।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে