কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালে তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনার পর নয় নয় করে কেটে গিয়েছে ৪৯ দিন। এখনও তিলোত্তমার বিচারের আশায় জ্বলছে মশাল, হাঁটছে মানুষ। পথে-ঘাটে, অলি-গলিতে কোথাও না কোথাও রোজ উঠছে স্লোগান।ভরা আশ্বিনে বাংলায় এবার পুজো এসেও যেন আসছে না। আর এই আবহেই, সোমবার ফের সুপ্রিম কোর্টে আর জি কর মামলার শুনানি। (RG Kar Case)

প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের ডিভিশন বেঞ্চে সোমবার ফের আর জি কর মামলার শুনানি রয়েছে। গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি নেতৃত্বাধীন ওই বেঞ্চই মামলার শুনানি করে।  এর পর, ২৭ শে সেপ্টেম্বর হওয়ার কথা ছিল পরবর্তী শুনানি। কিন্তু রাজ্য সরকারের আবেদনের প্রেক্ষিতে শুনানি পিছিয়ে যায়। সোমবার ফের শুনানি হতে চলেছে। (Supreme Court)

তিলোত্তমার বিচারের দাবি তো বটেই, পাশাপাশি ১৭ ই সেপ্টেম্বরের শুনানিতে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে নিরাপত্তাহীনতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছিল। সেই সময় লাগাতার কর্মবিরতিতে ছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁদের কর্মবিরতি প্রত্যাহার করা নিয়ে যখন রাজ্য সরকারের তরফে ক্রমাগত সওয়াল করা হচ্ছিল, সেই সময় পাল্টা নিরাপত্তা চেয়ে রাজ্য সরকারের ওপর চাপ বাড়াচ্ছিলেন জুনিয়র ডাক্তাররা।


সেই প্রেক্ষিতে, প্রধান বিচারপতি মন্তব্যেও উঠে এসেছিল পারস্পরিক বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি হওয়ার প্রসঙ্গ। সেই সময় রাজ্যের তরফে আইনজীবী কপিল সিবলকে বলতে শোনা যায়, "আমরা সবকিছুতেই রাজি হয়েছি। এবার কর্মবিরতি তুলে নেওয়া উচিত। কাজে ফেরা উচিত ওঁদের (জুনিয়র ডাক্তারদের)।"


এর পাল্টা প্রধান বিচারপতি বলেন, "ইন্দিরা জয়সিংহ জুনিয়র ডাক্তারদের হয়ে কথা বলছেন। তিনি বলছেন, বিশ্বাস গড়ে তোলায় যদি পদক্ষেপ করে সরকার, জুনিয়র ডাক্তারদের কাজে ফিরতে অসুবিধা নেই। বলা হয়েছে, জুনিয়র ডাক্তারদের একমাত্র বক্তব্য, কর্মস্থলে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা।" সেই সওয়াল-জবাব পর্বের পর সোমবার ফের শুনানি হতে চলেছে। 


কিন্তু উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, এর মধ্যে সাগর দত্ত হাসপাতালে জুনিয়র চিকিৎসকদের আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এমন পরিস্থিতিতে 
জুনিয়র ডাক্তারদের পাশে দাঁড়িয়েছেন সিনিয়র ডাক্তাররাও। রাজ্যের স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে একাধিক প্রশ্ন উঠে আসছে। ফলে আর জি কর কাণ্ডের বিরুদ্ধে এই প্রতিবাদ শুধুমাত্র ডাক্তারদের আন্দোলন হয়ে আটকে নেই। বরং নাগরিক আন্দোলন হয়ে উঠেছে। 
শিল্পী সমাজের বড় অংশও এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। সোমবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানি নিয়ে আশায় বুক বাঁধছেন তাঁরাও।