ঝিলম করঞ্জাই, কলকাতা : আর জি কর মেডিক্যালের জরুরি বিভাগে সিলড বাক্সে রক্তমাখা গ্লাভস ! আর জি কর কাণ্ডের প্রতিবাদে যখন অনশনে বসেছিলেন জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধিরা, তখনই উঠে আসে এরকম চাঞ্চল্যকর অভিযোগ। এই প্রসঙ্গটি নবান্নে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠকের সময়ও তুলে ধরেন আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিনিধিরা। কিন্তু সেই গ্লাভস কোথা থেকে এল হাসপাতালে ? তদন্তে উঠে আসছে চাঞ্চল্যকর তথ্য।
আর জি কর মেডিক্যালের উপাধ্যক্ষ সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায় জানালেন তদন্তে উঠে এসেছে নতুন তথ্য। হাসপাতালে যে গ্লাভসগুলিতে রক্তের দাগ রয়েছে বলে হইচই পড়ে যায়, সেগুলি নাকি আদতে রক্তের দাগ নয় ! তার প্রমাণ মিলেছে বায়োকেমিস্ট্রি বিভাগের ল্যাবে। তবে ওটা আসলে কীসের দাগ? তা জানতে সেগুলি পাঠানো হচ্ছে ফরেন্সিক ল্যাবে।
এছাড়া আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, যে বাক্সে গ্লাভস এসেছিল তার ব্যাচ নম্বরের সঙ্গে গ্লাভসের প্যাকেটের নম্বরের মিল নেই । তাহলে এই গ্লাভস হাসপাতালে ঢুলে পড়ল কীকরে ? কীভাবেই বা পৌঁছে গেল অপারেশন থিয়েটার পর্যন্ত ? তা জানতে আরও তদন্তের প্রয়োজন বলে জানান. আর জি কর মেডিক্যালের উপাধ্যক্ষ সপ্তর্ষি চট্টোপাধ্যায়।
গত ১০ অক্টোবর এক জুনিয়র চিকিৎসক দাবি করেন, জরুরি বিভাগে HIV আক্রান্ত এক রোগীকে পরীক্ষা করছিলেন। সিল করা প্যাকেট খুলতেই, তা থেকে দাগ লাগা গ্লাভস বের হয়। চিকিৎসকের দেখেই সন্দেহ হয় এই দাগ রক্তের। বিষয়টি সামনে আনেন তিনি। সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরে বিষয়টি জানানো হয়। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা আর জি কর হাসপাতালে গিয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখেন।
বিষয়টি নিয়ে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকরা গর্জে ওঠেন। অভিযোগ করেন নার্সরাও। ডা. আসফাকুল্লা নাইয়া বলেন, ' স্টেরাইল গ্লাভস না দিয়ে ইউজড গ্লাভস দেওয়া এটার মানে কী? এটার মানে একটা গ্লাভস রিপিটেডলি ইউজ করলে পরের বার গ্লাভসের টাকাটা যে বেঁচে যায়, সেই টাকাটা কোনও বাবুদের পকেটে যায়।'
চাঞ্চল্যকর দাবি করেন নার্সরাও। বলেন, ইদানিং নাকি হাসপাতালে অনেক ব্যবহৃত সিরিঞ্জও আসছে। অন্যদিকে, এই সোমবার আর জি কর মেডিক্যালে গ্লাভস-কাণ্ডের পরে এবার সামনে আসে এসএসকেএম হাসপাতালে 'কাঁচি কেলেঙ্কারি'। হাসপাতালে প্রসূতির অস্ত্রপচারের সময় মরচে ধরা কাঁচি ভেঙে যাওয়ার অভিযোগ করেন এক জুনিয়র ডাক্তার। এসএসকেএম হাসপাতালে কাঁচি কেলেঙ্কারি সামনে আসতেই সরব হন জুনিয়র ডক্টর্স ফ্রন্টের সদস্যরা। জুনিয়র ডাক্তারদের পাল্টা আক্রমণ করেছে তৃণমূল।