কলকাতা: আরজি কর সরকারি মেডিক্য়াল কলেজের অন্দরে বেনিয়মের ঢালাও অভিযোগ। মহিলা চিকিৎসর ধর্ষণ-খুনের ঘটনার পরে থেকে ক্রমশ সামনে আসে একের পর এক অভিযোগ। আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষের নেতৃত্বে অপরাধের একটি চক্র তৈরি হয়েছিল বলে অভিযোগ। অনেক আগেই আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ আখতার আলি তথ্যপ্রমাণ দিয়ে একাধিক অভিযোগ সামনে এনেছিলেন। এদিন এবিপি আনন্দের অনুষ্ঠানে করলেন আরও বড় অভিযোগ।


আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি বলেন, 'দেবাশিস সোম সরকারের থেকে বেতন নিয়ে সন্দীপ ঘোষের হয়ে কাজ করতেন। ছাত্রদের থেকে টাকা নেওয়ার নেটওয়ার্কে উনি ছিলেন। টাকা নিয়ে ময়নাতদন্ত রিপোর্ট ম্যানুপুলেশন করেছেন। ফ্রেশ বডি ওয়ার্কশপে দেওয়া হয় ময়নাতদন্তের আগে। মর্গে কুলিং চেম্বারে দেহ রাখার জন্য টাকা নেওয়া হতো। এই নেটওয়ার্কে দেবাশিস সোম ছিলেন। এই টাকার অংশ সন্দীপ ঘোষের কাছে যেত।' মর্গে যে এমন নানা বেআইনি কাজ হতো তা এবিপি আনন্দকে জানিয়েছেন আরজি করের ফরেন্সিক বিভাগের প্রাক্তন হেড ক্লার্ক। তাঁর থেকেই খবর পেয়েছিলেন বলে জানিয়েছেন আখতার আলি।


চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ঘটনা নিয়েও বড় অভিযোগ করেছেন আখতার আলি।  ঘটনার দিন নাকি ফোন যায় সন্দীপ ঘোষের কাছে। দেবাশিস সোম যিনি এখন ওয়েস্ট বেঙ্গল হেলথ রিক্রুমেন্ট বোর্ডে রয়েছেন তিনি না কি ফোন করেছিলেন। 'তিনি আরজি করে কী করছেন? ঘটনার দিন কেন এতবার ফোন করেছেন?' প্রশ্ন আখতার আলির। ঘটনার পরে মর্গে ছিলেন দেবাশিস সোম- এমনটা অভিযোগ আখতার আলির। মর্গে তিনি কী করছিলেন? প্রশ্ন আরজি করের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির।  তাঁর আশঙ্কা, 'উনি ফরেন্সিক মেডিসিনের লোক... উনি তথ্য লোপাট করেছেন, প্রমাণ নষ্ট করেছেন.. এমন নয় তো?' এই মামলায় দেবাশিস সোমকেও আতসকাচের তলায় আনা উচিত বলে মনে করছেন তিনি। এদিন দেবাশিস সোমের বাড়িতে এদিন গিয়েছিল সিবিআই -এর টিম। 


আর জি কর হাসপাতালে আর্থিক অনিয়ম নিয়ে প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলির করা ১৫টি অভিযোগ খতিয়ে দেখছে সিবিআই। এর মধ্যে রয়েছে, সরকারি অর্থের অপচয়ের অভিযোগ। স্বাস্থ্য ভবন এবং কলেজ কাউন্সিলের অনুমতি ছাড়া সরকারি সম্পত্তি বিভিন্ন ব্যক্তি বা সংগঠনকে দেওয়ার অভিযোগ। খাবারের স্টল, ক্যাফে, ক্যান্টিন, সুলভ কমপ্লেক্সের মতো জায়গা টেন্ডার না ডেকেই বণ্টন করার অভিযোগ। হাসপাতালে কাজের টেন্ডার দেওয়ায় স্বজনপোষণের অভিযোগ রয়েছে। কোটি কোটি টাকার টেন্ডার নির্দিষ্ট কয়েকজনকে দেওয়া, এই তালিকায় অযোগ্যরাও আছেন বলে অভিযোগ। হাসপাতালের সরবরাহকারীদের কাছ থেকে ২০ শতাংশ হারে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ। মেডিক্যাল কলেজের শিক্ষা সংক্রান্ত কাজে বরাদ্দ টাকা নিয়েও অনিয়মের অভিযোগ। হাসপাতালের বায়োমোডিক্যাল বর্জ্য বেআইনিভাবে বাইরে বিক্রি করার অভিযোগ। কলকাতা পুরসভাকে ফাঁকি দিয়ে বিভিন্ন বেনামি ব্যবসা চালানোর অভিযোগ। হাসপাতালে চুক্তিভিত্তিক কর্মী নিয়োগে দুর্নীতির অভিযোগ। জিম এবং নিজের চেম্বারের সৌন্দর্যায়নের জন্য কোভিড ফান্ডের অপব্যবহারের অভিযোগ। টাকার বিনিময়ে বেআইনিভাবে চিকিৎসক-অফিসারদের বদলি-সহ নানা রকম অনিয়মের অভিযোগ।



আরও পড়ুন: জঙ্গলে উদ্ধার মহিলার দেহ! বিষ্ণুপুরে পরিবারের অভিযোগে চাঞ্চল্য


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।