ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী, পার্থপ্রতিম ঘোষ, কলকাতা: কখনও কারার ওই লৌহ কপাট ! কখনও উই শ্যাল ওভারকাম। ২২ ঘণ্টা প্রতিবাদ-অবস্থানের পর নিজেদের শর্তে অনড় জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি মেনে নিতে হল কলকাতা পুলিশকে। সরল প্রায় ১২ ফুট উঁচু ব্যারিকেড। প্রায় ন’ফুট সমান উচ্চতার গার্ডরেলের দেওয়াল! পিছনে আবার বাঁশের ব্যারিকেড। তাও আবার বাঁধা দড়ি দিয়ে। সবই খুলল শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের চাপে।
সামনেই লালবাজার। অথচ প্রথম থেকে পুলিশ বদ্ধপরিকর ছিল যে আন্দোলনকারীদের এগোতে দেওয়া যাবে না। তাই তাঁদের আটকাতে ৯৮ ফুটের বড় লোহার ব্য়ারিকেড তৈরি করা হয়। সেগুলিকে বেঁধে ফেলা হয় একদম জাহাজ বাঁধার শিকল দিয়ে। যাতে দুর্ভেদ্য এই প্রাচীর না টপকাতে পারেন জুনিয়র ডাক্তাররা। আর চিকিৎসকরাও জানিয়েছিলেন তাঁরাও কোনওরকম অশান্তি করবেন না। নিজেদের কথা মেনে অত্য়ন্ত শান্তিপূর্ণ ভাবে আন্দোলন করতে থাকেন তাঁরা। ডা ক্তারদের হাতে ছিল গোলাপ আর প্রতীকী শিরদাঁড়া। 'কলকাতা পুলিশের শিঁরদাড়া হারিয়ে গেছে?' প্রশ্ন তোলেন প্রতিবাদীরা।
নিজেদের শর্তে অনড় ছিলেন চিকিৎসকরা। তিনটি অপশন দেন তাঁরা পুলিশের কাছে। এক, তাঁদের সামনে থেকে তুলে দেওয়া হোক ব্যারিকেড। তাঁরা আরও কিছুটা এগোবেন বেন্টিঙ্ক স্ট্রিটের দিকে। তারপর তাঁদের একটি প্রতিনিধি দল ঢুকবে লালবাজারে। তাঁরা কমিশনারের সঙ্গে দেখা করে ডেপুটেশন জমা করবেন। অথবা পুলিশ কমিশনার বিনীত গোয়েল নিজেও আসতে পারেন প্রতিবাদীদের সঙ্গে দেখা করতে। তিনি এলে , তাঁর কাছে ডেপুটেশন দেবেন জুনিয়র ডাক্তাররা। অথবা বিনীত গোয়েলকে ইস্তফা দিতে হবে।
কিন্তু কাল কোনওটিই হয়নি। জুনিয়র ডাক্তারদের প্রতিবাদে পুলিশ কমিশনারের প্রতিনিধি হিসেবে, ফিয়ার্স লেনে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে দফায় দফায় দেখা করতে আসেন পুলিশের পদস্থ অফিসাররা। কথা বলতে আসেন অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার অশেষ বিশ্বাস। তিনি জুনিয়র চিকিৎসকদের প্রতিনিধি দলকে লালবাজার যেতে বললেও আন্দোলনকারীরা রাজি হননি। তাঁরা জানান, বেন্টিঙ্ক স্ট্রিট পর্যন্ত যেতে দিলে তবেই লালবাজার যাবেন। এরপর আসেন জয়েন্ট সিপি ট্রাফিক। কিন্তু তাঁকেও ফিরে যেতে হয়। এভাবেই আন্দোলনে অনড় ছিলেন আন্দোলনরত পড়ুয়ারা।
২২ ঘণ্টা পর অবশেষে ব্যারিকেড তুলতে রাজি হয় পুলিশ। পুলিশের পদক্ষেপকে স্বাগত জানান আন্দোলনকারী চিকিৎসকরা।
ব্যারিকেড তোলার পর লালবাজারের দিকে আরও ১০০ মিটার এগোবেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। তারপর লালবাজারের ভিতরে যাবেন আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের ২২ জন প্রতিনিধি।
আরও পড়ুন :
'দিদি পাঠিয়েছে, CM কে ফোন করুন' চড়া গলা, হুমকি বর্তমান অধ্যক্ষকে ! কে এই সন্দীপ ঘনিষ্ঠ আফসার?
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে