ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালের জরুরি বিভাগে ফের উত্তেজনা। বাক্সবন্দি অবস্থায় উদ্ধার রক্তমাখা গ্লাভস। বিষয়টি সামনে এনেছেন হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক এবং নার্সরা। অভিযোগ, একাধিক গ্লাভসে রক্তের দাগ রয়েছে। সংক্রমণের আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকরা। এর আগেও, আর জি কর মেডিক্যালে বর্জ্য দুর্নীতির অভিযোগ করেছিলেন প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। এদিনের বিষয়টি সেন্ট্রাল মেডিক্যাল স্টোরকে জানানো হয়েছে। স্বাস্থ্য দফতরের আধিকারিকরা হাসপাতালে গিয়েছেন বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্য দফতরের প্রধান সচিব। (RG Kar Hospital News)


অভিযোগ, বৃহস্পতিবার সকালে একজন HIV পজিটিভ রোগী আসেন। তাঁর শুশ্রূষায় এগিয়ে যান জরুরি বিভাগের এক চিকিৎসক। স্টোর থেকে গ্লাভস নিতে যান। সিলড প্যাকেট থেকে গ্লাভস বের করতে গিয়ে দেখেন গ্লাভসে দাগ লেগে রয়েছে। ওই চিকিৎসকের দাবি, একটি গ্লাভসে দাগ রয়েছে বলে ভেবে অন্য গ্লাভস বের করেন। কিন্তু দেখা যায়, প্রত্যেকটি গ্লাভসেই দাগ রয়েছে। ওই দাগ রক্তের দাগ বলে সন্দেহ চিকিৎসক এবং নার্সদের। বিষয়টি নিয়ে চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানালে, তাঁদের থেকে আশ্বাস মেলে বলে জানা গিয়েছে। (Kolkata News)


তবে এই ঘটনায় উদ্বিগ্ন চিকিৎসক এবং নার্সরা। তাঁদের মতে, এই ধরনের সংক্রমিত গ্লাভস যদি হাসপাতালে আসে, সেগুলি যদি ব্যবহার করা হয়, চিকিৎসক এবং রোগীদেরও সংক্রমিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসা বর্জ্য নিয়ে এর আগে মারাত্মক অভিযোগ ওঠে। বানতলার কাছে চিকিৎসা বর্জ্য জল দিয়ে ধুয়ে পাচারের বিষয়টি ধরা পড়ে এবিপি আনন্দের অন্তর্তদন্তেও। ফলে আজকের ঘটনা নিয়েও একাধিক প্রশ্ন উঠছে।


অন্য দিকে, এখনও আমরণ অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন জুনিয়র চিকিৎসকরা। ষষ্ঠীর রাতে স্বাস্থ্য ভবনের সঙ্গে তাঁদের বৈঠকও নিষ্ফলা রয়ে যায়। রফা সূত্র না মেলায় শুধুই সময় নষ্ট বলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন তাঁরা। আন্দোলনকারীরা জানান, রাজ্য সরকারের যে সদিচ্ছার অভাব রয়েছে, তা আবারও বোঝা গেল। বৈঠকে আলোচনার কিছু নেই, স্বাস্থ্যসচিব এমন মন্তব্য করেন বলেও দাবি আন্দোলনকারীদের। রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে এখনও অনমনীয় অবস্থানের অভিযোগও করেন। 


যদিও মুখ্যসচিব জানান, কোর্টের নির্দেশ এবং আগের বৈঠকের প্রেক্ষিতে আলোচনা হয়েছে। সেন্ট্রাল রেফারেল সিস্টেম-সহ একাধিক বিষয়ে আলোচনা হয়েছে দুই পক্ষের মধ্যে। ১৫ অক্টোবর পাইলট প্রজেক্ট এবং ১ নভেম্বর থেকে কার্যকর করা হবে বলেও জানান তিনি। হাসপাতালে নিরাপত্তারক্ষী নিয়োগ নিয়ে আলোচনার পাশাপাশি, নির্বাচন নিয়েও কথা হয় বলে জানান মুখ্যসচিব। পর্যালোচনা করে নির্বাচন সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান। তাঁর বক্তব্য, "ওঁরা সবকিছুর ডেডলাইন চাইছেন। আশাকরি ইতিবাচক হিসেবেই নেবেন। বলেছি, একদিনেই সব কিছুর সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব নয়। আবার আলোচনা হবে। আলোচনা চলছে, অনশন তোলার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে।"