কলকাতা : তরুণী চিকিসককে ধর্ষণ করে খুনের ঘটনার পর থেকেই গর্জে উঠেছে আরজি কর মেডিক্যাল কলেজের জুনিয়র ডাক্তাররা। অভিযুক্ত বা অভিযুক্তদের শাস্তির দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা। টানা আন্দোলন চলছে। আর এই আন্দোলন পর্বে তাঁদের 'হাতিয়ার' হয়ে উঠেছে 'We Want Justice' স্লোগান। কিন্তু, সেই স্লোগান তুলেই এবার আরজি করে বেলাগাম তাণ্ডব চালাল দুষ্কৃতীরা। কার্যত তছনছ করে দেওয়া হয়েছে বহু টাকার সম্পত্তি।


স্বাধীনতা দিবসের মধ্যরাতে অবাধ 'দুষ্কৃতী স্বাধীনতা' দেখা গেল আরজি করে। জাতীয় পতাকা হাতেই ঐতিহ্যের আরজি কর মেডিক্যালে ভাঙচুর চালাল তারা। আন্দোলনকারীদের ভিড়ে মিশে গিয়ে হামলা, ভাঙচুর চালানো হয়। আরজি কর হাসপাতাল থেকে শ্যামবাজার রাতে প্রায় ৩ ঘণ্টা দুষ্কৃতীদের মুক্তাঞ্চল হয়ে রইল বিস্তীর্ণ এলাকা। নার্সিং স্টাফদের ঘরেও দুষ্কৃতী তাণ্ডব চলে। পুলিশের সামনেই ৪০ মিনিট ধরে ভাঙচুর চালানো হয়। আর এই সময়ে তাদের মুখে শোনা গেল 'We Want Justice' স্লোগান। রড, কাচের বোতল, ইট হাতে এমার্জেন্সি, এইচডিইউ, ইএনটি ইউনিটে একের পর এক ভাঙচুর চালানো হয়। এর জেরে রেফ্রিজারেটর উল্টে মাটিতে পড়ে লক্ষ লক্ষ টাকার ওষুধ নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ভেন্টিলেটর, অক্সিজেনের পাইপও নষ্ট করে দেওয়া হল। এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন উঠছে, কেন আগাগোড়া চুপ রইল পুলিশ ?


ঘটনার প্রসঙ্গে আর জি কর মেডিক্যালসের চিকিৎসক অনিকেত মাহাতো বলেন, "আরজি কর মেডিক্যালে যে ছাত্র আন্দোলন চলছিল তাতে আমাদের পরবর্তী কর্মসূচি ছিল, মহিলাদের প্রতিবাদ মিছিল করার। হাতে মোমবাতি ও তেরঙ্গা নিয়ে। আমাদের শ্য়ামবাজারের দিকে যাওয়ার কথা ছিল। ঠিক সেই মুহূ্র্তে হঠাৎ একদল এসে হামলা করে, ব্যারিকেড ভেঙে দেয়। ধর্নামঞ্চ থেকে শুরু করে সমস্ত জায়গায় ভাঙচুর চালানো হয়। এর ফলে ধর্নামঞ্চ ভেঙে যায়। বিভিন্ন জায়গায় তছনছ হয়ে যায়। আমরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যাই। বিভিন্ন কলেজ, হস্টেল, এমার্জেন্সতে গিয়ে আমরা আশ্রয় নিই। কলেজে যারা কর্তব্যরত পুলিশ ছিল তাদের সঙ্গে বারবার এই মিছিলের আগে এবং পরে আমরা যোগাযোগের চেষ্টা করি। কিন্তু, কাউকে আমরা ফোনে ধরতে পারিনি। এই ঘটনার পর সমস্ত কলেজজুড়ে এখনও ভাঙচুর চলছে। আমরা ছাত্র-ছাত্রীরা বিভিন্ন কলেজ হস্টেল, ট্রমা, এলসি-এলটিতে আছি। সাধারণ মানুষের কাছে আবেদন, এই আন্দোলনের গভীরতাকে সমবেদনার সঙ্গে বুঝবনে। এই ভাঙচুর হল কেন ? এর দায় কার ? পুলিশ প্রশাসন সম্পূর্ণ রূপে ব্যর্থ হয়েছে। কেন এত সুন্দর এখটা শান্তিপূর্ণ আন্দোলনের মধ্যে কেন এই মবকে ঢুকতে দিল ? এখানে কি পুলিশ প্রশাসন , রাজ্য সরকার তার দায় এড়াতে পারে ? আমরা এখনই কলেজে সম্পূর্ণ সুরক্ষার দাবি জানাচ্ছি। এমার্জেন্সি ওয়ার্ড, তার উপরের ফ্লোরে, ট্রমায় হামলা চালিয়েছে। এর পিছনে অবশ্যই রাজনৈতিক উদ্দেশ্য আছে। কী তার উদ্দেশ্য ? সমস্ত কিছু প্রকাশ্যে আনা হোক। আমরা চাই, পুলিশ প্রশাসন ও রাজ্য সরকার হস্তক্ষেপ করে আরজি করে সুরক্ষা নিশ্চিত করুক।"


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।