কলকাতা : একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ। তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে যখন আজও রাত দখলে নেমেছে গোটা নাগরিক সমাজ, ঠিক তখনই কলকাতা পুলিশের বিরুদ্ধে তীব্র ক্ষোভ উগরে দিল নির্যাতিতার পরিবার। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যে প্রশ্ন বারবার উঠছে, কার্যত তাতেই সিলমোহর দিলেন নির্যাতিতার কাকিমা। এদিন আরজি করে আন্দোলনরত জুনিয়র চিকিৎসকদের ডাকে 'বিচার পেতে আলোর পথে'-তে যোগ দিতে হাসপাতালে আসে তিলোত্তমার পরিবার। সেখানেই আন্দোলনমঞ্চ থেকে সেদিনের বিভীষিকাময় অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরলেন নির্যাতিতার স্বজনরা।
কলকাতা পুলিশকে কাঠগড়ায় তুলে নির্যাতিতার কাকিমা বলেন, "৯ তারিখ আমাদের বাড়ির মেয়ে...অভয়া, তিলোত্তমা যা-ই বলে চেনেন আপনারা...আমাদের হতভাগ্য মেয়েটাকে... আমরা যখন সকাল ১০টা ৫৫ মিনিটে খবর পাই বাড়ির লোক। আমাদের কাছে আসে। আমরা কাকা-কাকিমা হিসাবে বলছি। যে মুহূর্তে খবর পাই তার এক ঘণ্টার মধ্যে আমরা গাড়ি বুক করে আমরা যখন হাসপাতালে আসি...২টো ১০ থেকে-২টো ১৫ মিনিট হবে। তার আগে কী ঘটেছে সেটা আমি বলতে পারব না। কিন্তু তার পরে যে ঘটনাগুলোর সাক্ষী আমি হয়েছি বা আমরা হয়েছি...আমরা চারজন..আমরা চারজন এসেছিলাম। আমি, আমার মেজো ভাসুর, আমার ছেলে, আর পিছনে আমার জা আছে। চারজন আমরা একসঙ্গে এসেছিলাম। আমরা এসে যখন ঢুকলাম...তারপর থেকে দেখেছিলাম সেমিনার রুমে ঢোকার ওখানে পুলিশে ছয়লাপ...আর যাঁরা ছাত্র ছিলেন তাঁরা ছিলেন। অতি কষ্টে ঢুকে আমরা ভিতরে ঢুকে সেমিনার হলের উল্টোদিকে আমরা যখন গিয়ে ঢুকলাম, তখন দেখেছি আমার দাদা-দিদিকে একটা ঘরে বসিয়ে পাখার নীচে কেউ জল এনে দিচ্ছে, কেউ এই ঘর থেকে ওই ঘরে নিয়ে যাচ্ছে ...একবার এই ঘর একবার ওই ঘর...জল খান , পাখার নীচে বসুন এই চলছে। ২টোয় যদি আমরা পৌঁছে থাকি, ৪টে অবধি এই জিনিসগুলো হয়েছে। সাড়ে ৩টে অবধি। এই জিনিসগুলোই হয়েছে। তারমাঝে পুলিশ এসে বারবার ঘিরে ধরে বারবার একটাই কথা...আপনারা চলুন প্রিন্সিপ্যালের ঘরে যাবেন। আমরা তখন পুরো পরিবার দাদা-দিদিকে ঘিরে রেখে বলেছি, না ওঁরা কোথাও যাবে না। দরকার হলে প্রিন্সিপ্যাল এখানে আসবেন। কিন্তু পুলিশ আমাদের এত জোর করেছে...এত ফোর্স করেছে...মানে ওরা হাইজ্যাক করে এই দুটো মানুষকে প্রিন্সিপ্যালের ঘরে নিয়ে যেতে পারলে ...মানে ওরা জানে আমরা বেঁচে গেলাম। কোনওভাবে ৫ মিনিটের জন্য বলে ওরা নিয়ে গেলেন এই ২টো মানুষকে। তারপর থেকে আর এই দুটো মানুষকে দেখতে পাইনি।"