কলকাতা : আরজি কর হাসপাতালে নরকীয় ঘটনার প্রতিবাদ ছড়াচ্ছে সর্বত্র। রাজ্য ছাড়িয়ে রাজধানী দিল্লি, সর্বত্র আছড়ে পড়েছে প্রতিবাদের ঢেউ। সকাল গড়িয়ে সন্ধে হয়ে রাত। আছড়ে পড়ছে বিক্ষোভের ঢেউ ! উঠছে মুর্হুমুহ স্লোগান। শহর ছাড়িয়ে জেলা...রাজ্য ছাড়িয়ে রাজধানী দিল্লি... চিকিৎসকের ধর্ষণ-খুনের প্রতিবাদে উত্তাল গোটা দেশ। আজও দিনভর সামনে এল একাধিক তথ্য। আরজি কর কাণ্ডে সোমবার কী কী আপডেট সামনে এল একবার একনজরে দেখে নেব।


আজ দিনভর আরজি করকাণ্ডের আপডেট-


ঠিক কী ঘটেছিল শুক্রবার ভোররাতে ? মহিলা চিকিৎসককে খুনের আগে-পরের ঘটনাক্রম সাজাতে এবার ভিডিওগ্রাফির সাহায্য নিচ্ছে লালবাজার। আজ ভোর ৪টে নাগাদ কলকাতা গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল RG কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যায়। সেমিনার রুম ও চারতলার বাকি অংশের ভিডিওগ্রাফি করে সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ তারা বেরিয়ে যায়। ইতিমধ্যেই চেস্ট মেডিসিন বিভাগের CC ক্যামেরার ফুটেজ সংগ্রহ করেছে পুলিশ। 


RG করকাণ্ডের প্রেক্ষিতে পড়ুয়া-চিকিৎসকদের প্রতিবাদ-আন্দোলনের চাপে অবশেষে পদত্যাগ করেন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ। পদত্যাগী অধ্যক্ষের দাবি, তাঁর মুখে কথা বসিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী রাজনৈতিক খেলা খেলেছেন। কেউ তাঁকে পদত্যাগ করতে বলেননি। কিন্তু পড়ুয়া, রাজ্যের মানুষ এটাই চেয়েছিলেন, তাই স্বেচ্ছায় ইস্তফা বলে দাবি করেন সন্দীপ ঘোষ। স্বাস্থ্য ভবনে গিয়ে ইস্তফাপত্র জমা দেন RG কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের অধ্যক্ষ।


আরজি করকাণ্ডে ধৃত সঞ্জয়ের কাছে থাকা পুলিশের বাইক বাজেয়াপ্ত করে পুলিশ। পুলিশের টহলদারির বাইক চেপেই ঘুরত সঞ্জয়। সরকারি বাইকে সরকারের টাকায় তেল ভরে ঘুরতে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছিল সঞ্জয়কে। ঘটনার দিন ওই বাইক চেপেই এসেছিল আরজি কর হাসপাতালে, এমনই খবর সূত্রের।


আরজি করকাণ্ডে ক্ষোভে ফুঁসছে বাংলা। কলকাতায় প্রতিবাদ মিছিল। পথে নামল নাগরিক সমাজ। বিশিষ্ট চিকিৎসক থেকে জুনিয়র ডাক্তার, পড়ুয়া, তারকা, সমাজকর্মী। বিচারের দাবিতে মিছিলে পা মেলালেন সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রের মানুষ।  


কেউ চাইলে CBI তদন্তে আপত্তি নেই বলে জানিয়েছিলেন আগেই। সোমবার আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিহত চিকিৎসকের বাড়ি থেকে বেরিয়ে পুলিশকে একেবারে ডেডলাইন বেঁধে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, 'আমার এখানে কোনও পাওয়ার, লেনাদেনা কিছু নেই। আমি প্রথম থেকেই বলছি, মানুষের স্যাটিসফেকশনের জন্য যদি কেউ ভাবতে পারে যে পুলিশ ঠিকমতো করতে পারছে না, যদিও কলকাতা পুলিশ ইজ দ্য বেস্ট পুলিশ ইন দ্য ওয়ার্ল্ড, তাদের তদন্তের যে সিস্টেমটা এবং সবচেয়ে ভাল অফিসারকে লাগানো হয়েছে। সমস্ত কিছু দিয়ে। আমরা রবিবার পর্যন্ত সবাইকে ডাকব, আমাদের পুলিশ ডাকবে।'


আরজি করে অন ডিউটি মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ, খুন। প্রতিবাদে সরব প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ও। আরজি মেডিক্যাল কলেজের সামনে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করে প্রেসিডেন্সির পড়ুয়া ও শিক্ষকদের একাংশ।


আরজি কর হাসপাতালে নারকীয় হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে এবার হাসপাতালের উল্টোদিকে অবস্থানে বসে এসএফআই, ডিওয়াইএফআই। দোষীদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ধর্না আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি।


RG কর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মহিলা চিকিৎসককে সঞ্জয় রায় একাই খুন করেছে ? নাকি এই পাশবিক ঘটনায় আরও কেউ জড়িত? জানতে এবার সঞ্জয়ের DNA ম্যাপিং করাতে চলেছে পুলিশ। সূত্রের খবর, পড়ুয়া-চিকিৎসকের থেকে যে সিমেন স্যাম্পল বা দেহরসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে, তার সঙ্গে সঞ্জয়ের রক্তের নমুনা মিলিয়ে DNA ম্যাপিং করা হবে। এর থেকে অনেকটা স্পষ্ট হতে পারে, সঞ্জয় একাই আততায়ী, নাকি এই মহিলা চিকিৎসককে যৌন নির্যাতন ও নৃশংস খুনের নেপথ্যে আরও কারও যোগ রয়েছে।


আরজি কর কাণ্ডে ধৃত সঞ্জয় রায়ের আরেক কীর্তি ফাঁস ! সাহায্যের অছিলায় মহিলাকে ফোনে উত্যক্ত করার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ পরিচয়ে ফোন, আপত্তি করলে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ। সঞ্জয়ের মোবাইল ফোন থেকে উদ্ধার করা হয় মহিলার নম্বর। ওই মহিলাকেই সঞ্জয় ফোন করে উত্যক্ত করত বলে অভিযোগ। 'সঞ্জয়ের সঙ্গে দীর্ঘ সময় ধরে ফোনে কথা', কল লিস্ট দেখে মহিলাকে লালবাজারে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ।


কলকাতায় এসেই নির্যাতিতার বাড়িতে যায় জাতীয় মহিলা কমিশন। আর জি কর কাণ্ডের প্রেক্ষিতে কলকাতায় জাতীয় মহিলা কমিশন। বিমানবন্দর থেকে লালবাজার যান জাতীয় মহিলা কমিশনের প্রতিনিধিরা। সেখানে পুলিশ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন মহিলা কমিশনের ২ প্রতিনিধি।


সকালে এক মেডিক্যাল থেকে ইস্তফা, বিকেলেই আরেক মেডিক্যালে ! সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই নতুন পদ! গৃহীত হল না সরকারি চাকরি থেকে ইস্তফা, নতুন দায়িত্বে সন্দীপ ঘোষ । ন্যাশনাল মেডিক্যালে কলেজের অধ্যক্ষ করা হল সন্দীপ ঘোষকে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।