কলকাতা : আরজি কাণ্ডের পর থেকেই তাঁর ভূমিকা প্রশ্নের মুখে। তাঁর গ্রেফতারি, সাসপেনশনের দাবি উঠেছে। তরুণী চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তদন্ত-প্রক্রিয়া যত এগিয়েছে, তত তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ সামনে এসেছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁর বিরুদ্ধে আরজি করে 'দুর্নীতির অভিযোগের পাহাড়' সামনে আসে। তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ চালিয়ে যাচ্ছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সি। এবার সন্দীপ ঘোষকে তথা আর জি কর মেডিক্যালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে গ্রেফতার করল সিবিআই।


চিকিৎসক ধর্ষণ-খুনের ২৬ দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হল তাঁকে। টানা ১৫ দিন জিজ্ঞাসাবাদের পর গ্রেফতার করা হল আরজি মেডিক্যালের প্রাক্তন অধ্যক্ষকে। ম্যারাথন জিজ্ঞাসাবাদের পর সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা। তাঁর এই গ্রেফতারি নিয়ে নির্যাতিতার বাবা বলেন, 'সন্দীপ ঘোষের ফাঁসি হোক। আরও অনেকে জড়িত আছে। আরও আসুক সামনে। ব্যাপারটা, আমার মেয়ে তো দুর্নীতিরই বলি হয়েছে। যা হয়েছে ভালই হয়েছে। এখনও খুশি হওয়ার মতো কিছু হয়নি।'


মহিলা চিকিৎসককে ধর্ষণ এবং খুনের ঘটনার পাশাপাশি হাসপাতালের আর্থিক দুর্নীতির ইস্যুরও তদন্ত করছিল CBI। প্রতিদিন সন্দীপ ঘোষকে ম্য়ারাথন জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন গোয়েন্দারা। এবার তাঁকে গ্রেফতার করল CBI।


আর জি করের চেস্ট মেডিসিন বিভাগের চিকিৎসক-পড়ুয়ার মৃতদেহ উদ্ধারের পর থেকেই প্রশ্নের মুখে পড়ে আর জি কর মেডিক্য়াল কলেজের প্রাক্তন অধ্য়ক্ষ সন্দীপ ঘোষের ভূমিকা। তিনি নিহত চিকিৎসকের পরিবারের সঙ্গে চরম অসংবেদনশীল আচরণ করেন বলে অভিযোগ। কাজেই, গোড়া থেকেই তাঁর গ্রেফতারির দাবিতে সরব হয়েছিল নাগরিক সমাজ। শেষমেশ তাঁকে গ্রেফতার করল কেন্দ্রীয় এজেন্সি।


এ প্রসঙ্গে আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে অনিকেত মাহাতো বলেন, 'এই মুহূর্তে নয়। ন্যায়বিচারের দাবিতে আমাদের আন্দোলন। ৩,৪,৫ আমাদের কর্মসূচি আছে। ৫ তারিখে সুপ্রিম কোর্টের দিকে আমরা তাকিয়ে আছি।' তাঁর সংযোজন, 'আমি যেটুকু খবর পেয়েছে, তাতে স্যারকে আর্থিক তছরূপ থেকে শুরু করে হাসপাতাল সংক্রান্ত যে কেস ছিল CBI-এর আন্ডারে, সেখান থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সন্দীপ ঘোষ স্যারকে যে গ্রেফতার করা হয়েছে...আমাদের স্বাস্থ্য ভবনের কাছে দাবি ছিল তাঁর সাসপেনশন। আমি মনে করি, মেডিক্যাল এথিক্সের যে জায়গা , সেই জায়গা থেকে মনে হয় আমাকে আর এরপর স্বাস্থ্য ভবনকে বলে দিতে হবে না তাদের কী করা উচিত। তাহলে আমরা আন্দোলনকারীরা মনে করি, মেডিক্যাল এথিক্সের যে লজ্জা ছিল, সেই জায়গা থেকে যে গ্রেফতার হয়েছেন, সেখান থেকে এটা একটা সদর্থক পদক্ষেপ বলে মনে হয়েছে। আন্দোলনের একটা জয়ের হিসাবেও আমরা এটাকে দেখছি। আংশিক জয় হিসাবে দেখছি। এই জন্য আমাদের আরজি করের, সমস্ত মেডিক্যালসের ছাত্র-ছাত্রী এবং সিনিয়র চিকিৎসক এবং সর্বোপরি সাধারণ মানুষ যাঁরা আমাদের সঙ্গে ছিলেন, তাঁদের আমরা কুর্নিশ জানাচ্ছি। কুর্নিশ জানিয়ে বলতে চাই, যে কেসে স্যার অ্যারেস্ট হয়েছেন, আমাদের আন্দোলন কিন্তু তার ধারাতেই এসেছে।' 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।