কলকাতা : অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থা এখনও সঙ্কটজনক হলেও স্থিতিশীল। উঠে বসেছেন অনিকেত, সাড়া দিচ্ছেন চিকিৎসায়।  স্বাভাবিক ভাবে কথা বলতে পারছেন তিনি। জ্বর নেই, পালস রেটও স্বাভাবিক। তবে এখনই CCU থেকে বের করা হচ্ছে না বলে খবর হাসপাতাল সূত্রে।


বৃহস্পতিবারই শারীরিক অবস্থার অবনতি হতে শুরু করে। সন্ধের পর থেকে অবস্থা আরও খারাপ হলে তাঁকে তড়িঘড়ি আরজি কর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। তিনি ভর্তি সিসিইউতে। অনিকেতের শরীরে অক্সিজেন পৌঁছনো নিয়ে জটিলতা দেখা দেয়। তাঁর শরীরে কিটোন পাওয়া গিয়েছে বলে জানা যায়। যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন চিকিৎসকরা। কিন্তু, কী এই কিটোন ? কী ক্ষতি হতে পারে ? তা জানালেন চিকিৎসক দীপ্তেন্দ্র সরকার। 


তিনি বলেন, "ইউরিনে কিটোনটা দেখা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কনফিডেন্সিয়াল কারণে কারো নাম নেব না। একজনের ইউরিনে কিটোন পাওয়া যাচ্ছে। বারে বারে পাওয়া যাচ্ছে। তাঁরা ভাল নেই। যখন খেতে পায় না তখন বডির মাসল ব্রেক-ডাউন হয়, সেইটার জন্য কিটোনটা বাড়ে। আশা রাখব, ছাত্ররা ওঁদের বারে বারে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করছেন। সেই স্বাস্থ্য-পরীক্ষা অনুযায়ী তাঁরা নিশ্চয়ই দায়িত্ব নিয়ে একটা জায়গায় পৌঁছবেন।"


অনিকেত মাহাতোর শারীরিক অবস্থার অবনতি, দ্রুত হাসপাতালের CCU-তে ভর্তির কথা বলে আর জি কর মেডিক্যালের সুপারকে চিঠি লেখেন হাসপাতালের ক্রিটিক্যাল কেয়ার মেডিসিন ও অ্যানাস্থেশিওলজি বিভাগের প্রধান সোমা মুখোপাধ্যায়। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, অনিকেতের শরীরে সিভিয়র ডিহাইড্রেশন, মেটাবলিক ডিরেঞ্জমেন্টের সমস্যা রয়েছে, মিলেছে মাত্রাতিরিক্ত কিটোন বডি। এর জন্য কার্ডিওলজি, মেডিসিন, নেফ্রোলজি এবং গ্যাসট্রোএন্টেরোলজির বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিয়ে ৫ সদস্যের মেডিক্যাল বোর্ড গঠনের কথাও বলা হয় চিঠিতে।  


শারীরিক অবস্থার অবনতি হলেও অনশন থেকে সরে আসতে রাজি ছিলেন না অনিকেত। তিনি বলেন, ' আমাদের যেরকম কর্মসূচি চলছে, চলবে। আমরা মনে করি রাজ্য প্রশাসন অতি দ্রুততার সঙ্গে ব্যবস্থা নিক। আলোচনায় বসুক। ' তবে  রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অনিকেত মাহাতোর পরিস্থিতির আরও অবনতি হওয়ায়, আর ঝুঁকি নেননি আন্দোলনকারী  জুনিয়র ডাক্তাররা। তাঁকে তড়িঘড়ি ভর্তি করা হয় হাসপাতালে। 


গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টা থেকে ধর্মতলায় মেট্রো চ্যানেলের সামনে আমরণ অনশনে বসেছেন জুনিয়র ডাক্তাররা। যে ৭ জন অনশন করছেন, তাঁদের মধ্যে অনিকেতই একমাত্র আর জি কর মেডিক্যালের ডাক্তার। অনিকেতের জন্য ৫ সদস্যের চিকিৎসকদের টিম তৈরি করা হয়েছে।