কলকাতা : ডেডলাইন শেষ। দাবি পূরণ হয়নি। পুজোর মধ্যেই আমরণ অনশনে বসলেন জুনিয়র ডাক্তাররা । আজ থেকে জুনিয়র ডাক্তারদের তরফে আমরণ অনশনে বসলেন ছয়জন জুনিয়র চিকিৎসক। কলকাতার বিভিন্ন মেডিক্যাল কলেজের প্রতিনিধিরা রয়েছেন অনশনমঞ্চে। অনশনকারীরা হলেন- কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের স্নিগ্ধা হাজরা, এনআরএস মেডিক্যালের পুলস্ত আচার্য, কেপিসি মেডিক্যালের সায়ন্তনী ঘোষ হাজরা, কলকাতা মেডিক্যালের তনয়া পাঁজা, এসএসকেএমের অর্ণব মুখোপাধ্যায় ও কলকাতা মেডিক্যালের অনুষ্টুপ মুখোপাধ্যায়।


এক জুনিয়র চিকিৎসক বলেন, "আমরা খুব সুস্পষ্ট এবং সামান্য দাবি রেখেছিলাম। যেটা, মেনে নিতে সরকারের খুব একটা কসরত করার কথা নয়। খুব একটা অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। কিন্তু, আমরা খুব দুঃখের সঙ্গে দেখলাম সামান্য দাবি সরকার মানতে পারল না। আমরা ২৪ ঘণ্টা টাইমলাইন দিয়েছিলাম। এরমধ্যে সামান্যতম সদিচ্ছা থাকলেও দাবি মেনে নেওয়া যেত। কিন্তু, না মানায় বাধ্য হয়ে আমাদের অনশনে বসতে হচ্ছে। আমরা তো অনন্তকাল কর্মবিরতি করে যেতে পারি না। রোগীর পরিষেবার কথা মাথায় রেখে এখন আমরা কাজে যোগ দিয়েছি। আমাদের হাতে আর কী রয়েছে ! আমরা তাই বাধ্য হয়ে অনশনে গেছি। জীবন বাজি রেখে লড়তে হচ্ছে।"


গতকালই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। ঘড়ি এনে টাইমও বেঁধে দিয়েছিলেন। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে দাবি পূরণ না হলে তাঁরা আমরণ অনশনে বসবেন বলে ঘোষণা করেছিলেন। সেই ডেডলাইন শেষ। আমরণ অনশনে বসে পড়লেন জুনিয়র ডাক্তাররা। সাংবাদিক বৈঠক করে একথা জানিয়ে দেন তাঁরা। কাজে ফিরলেও, খাবার খাবেন না বলে হুঁশিয়ারি দেন জুনিয়র ডাক্তাররা। প্রথম দফায় আমরণ অনশনে বসলেন ৬ জন জুনিয়র ডাক্তাররা।


এদিন আন্দোলনকারীদের তরফে এক জুনিয়র চিকিৎসক এই মর্মে ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, "আমাদের আশা, আমরা যখন এরপর নিজের হাতে খাবার তুলে নেব তখন সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভয়ের রাজনীতি নিয়ে মানুষ সোচ্চার হবেন। জনস্বাস্থ্যের প্রশ্নে প্রতিটি রোগী-রোগী পরিজন-সাধারণ মানুষ মৌলিক প্রশ্নগুলি করবেন। হাসপাতালে যখন কোনও রোগী বেড পান না, আইসিইউ বেড পান না, যখন চিকিৎসাগুলো পান না...সেগুলোর জন্য আসল দায়ী কারা ? এই প্রশ্নগুলি মানুষ অনশনের মধ্যে দিয়ে বুঝবেন। তাঁরা জানবেন এবং এই প্রশ্নগুলি প্রত্যেকেই তাঁদের পাড়ায় পাড়ায়, ঘরে ঘরে ছড়িয়ে দেবন। যতদিন না আমাদের দাবিগুলো পূরণ হচ্ছে, অবধি আমরা চিকিৎসা পরিষেবা ফেরত দেব, কাজে আমরা ফিরছি...কিন্তু খাবার আমরা খাব না। জুনিয়র ডাক্তারদের পক্ষ থেকে আমরা যে সবসময় রাজ্য সরকারের কাছে স্বচ্ছতার দাবি করেছি, আমরা এই অনশনের প্রশ্নও নিজেরাও সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা মেনে চলব। তারজন্য আমরা নিজেরা এই অনশনমঞ্চে সিসিটিভি বসাব। সেই সিসিটিভি মানুষের কাছে ওপেন করে দেব। তাঁরা দেখবেন, আমরা বসে আছি, আমরা গান করছি...আমরা কথা বলছি। সাধারণ মানুষ আমাদের পথে এসে দাঁড়াচ্ছেন। এটি আমরা জনসমক্ষে তুলে ধরব। আমরা আপাতত প্রথম সারিতে ছয়জন বসছি। যতদিন না আমাদের দাবিগুলো মানা হচ্ছে ততদিন আমরা এইআমরণ অনশন চালিয়ে যাব।"


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।