সন্দীপ সরকার, কলকাতা : ক্রাইম সিন নয় সেমিনার রুম, অন্য কোথাও খুন অভয়া? আর জি কর-কাণ্ডে CFSL-রিপোর্টে নতুন করে সন্দেহ। চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুন, সেমিনার রুমে 'উধাও' ধস্তাধস্তির চিহ্ন। ধর্ষণ, খুন, তাও সেমিনার রুমে মেলেনি প্রতিরোধের কোনও চিহ্ন। সেমিনার রুমে আততায়ীর সঙ্গে নির্যাতিতার ধস্তাধস্তিরও প্রমাণ নেই। আর জি কর-কাণ্ডে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবের রিপোর্টে বিস্ফোরক তথ্য, খবর সূত্রের। বিছানা কিংবা সেমিনার রুমের কোথাও কোনও ধস্তাধস্তির চিহ্নও মেলেনি। ২৪ ঘণ্টা চিকিৎসক-নার্স, তাও একজন এল, অপরাধ করে চলে গেল? সেমিনার রুমেই চিকিৎসককে ধর্ষণ-খুনের তত্ত্বে সন্দেহ খোদ CFSL-র, খবর সূত্রের। তাহলে কি অন্য কোথাও অপরাধ করে দেহ আনা হয়েছিল সেমিনার রুমে? তাহলে কি অন্য কোথাও খুন তিলোত্তমা? CFSL-রিপোর্টে নতুন করে তৈরি হয়েছে সন্দেহ।
চার তলার সেমিনার রুম নয়, অন্য কোথাও ক্রাইম সিন ?
সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবের ১২ পাতার রিপোর্টের একদম শেষ পাতায় দু'টি পয়েন্টে বলা হয়েছে যে জায়গায় দেহ পাওয়া গিয়েছে, অর্থাৎ আর জি কর হাসপাতালের সেমিনার হলের যে ম্যাট্রেসের উপর নির্যাতিতার দেহ পড়েছিল, সেখানে ধস্তাধস্তির কোনও প্রমাণ পাওয়া যায়নি। 'পসিবল স্ট্রাগল' যেখানে হওয়ার কথা ছিল, সেখানেই তথ্যপ্রমাণ পাওয়া যায়নি। শুধুমাত্র যে ম্যাট্রেসে তথ্যপ্রমাণ নেই তাই নয়, সেমিনার হলের ওই সংলগ্ন এলাকাতেও কোনও ধস্তাধস্তির প্রমাণ পাওয়া যায়নি। আর তাতেই উঠছে প্রশ্ন। এতদিন সকলে আর জি কর কাণ্ডে যে জায়গাকে 'ক্রাইম সিন' বলে জেনে এসেছিলেন, সেই চিন্তাভাবনাই বদলে দিচ্ছে সেন্ট্রাল ফরেন্সিক সায়েন্স ল্যাবের রিপোর্ট।
চিকিৎসক বিপ্লব চন্দ্রের কথায়, একটা ম্যাট্রেস পরিপাটি করে রয়েছে। জলের বোতল, ল্যাপটপ দেখলে মনে হবে যেন মেয়েটি রাতে ব্যবহার করতে করতে ঘুমিয়ে পড়েছে। পরে জলের বোতল, অন্যান্য জিনিসের জায়গা বদলে গিয়েছে। পরে যাঁরা ওখানে ঢুকেছেন, মানে পুলিশ এবং আর যাঁরা ঢুকেছেন প্লেস অফ অকারেন্স মানে ওই সেমিনার হলে, তখন কিছু পরিবর্তন হয়নি তো? সেমিনার হলের দরজা ভেতর থেকে বন্ধ করা যায় না। তাহলে সেখানে সঞ্জয় রায়ের মতো একজন ঢুকল, একজনকে ধর্ষণের চেষ্টা করল, একটা ইয়ং মেয়ে তো ফাইট করার চেষ্টা করবে, অবশ্যই ধস্তাধস্তি হবে, অথচ বাইরে থেকে কেউ কিচ্ছু টের পেল না? এটা কিন্তু হওয়ার কথা নয়। আমরা এতদিন যেটা বারবার বলছি যে সঞ্জয় একা নয়, আরও কেউ কি যুক্ত রয়েছে? আদৌ কি ওখানেই খুন হয়েছে, নাকি অন্য কোথাও খুন করে ওখানে দেহ রাখা হয়েছে, এই প্রশ্ন উঠছে। কলকাতা পুলিশ যেভাবে তথ্যপ্রমাণ লোপাট করেছে এবং সিবিআই যেভাবে কলকাতা পুলিশের রিপোর্টেই শিলমোহর দিয়েছে, সেখানে মনে হচ্ছে একটা বিরাট সত্যকে গোপন করার চক্রান্ত চলছে।