কলকাতা : 'রাত দখলের' কর্মসূচির প্রেক্ষাপটে নতুন করে গড়িয়া মোড় উত্তপ্ত হয়ে উঠল। 'ভিতরের ইনফর্মার, তৃণমূলের দালাল' হিসাবে ছবি-ভিডিও তুলছিলেন, এই অভিযোগ তুলে এক যুবককে বেধড়ক মারধর করল উত্তেজিত জনতা। পুলিশের সামনেই তাঁকে ফেলে মারধর করা হয়। কোনও রকমে ওই যুবককে উদ্ধার করে গাড়িতে তোলে পুলিশ। ঘটনার জেরে তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে এলাকায়।


পুলিশ গাড়িতে করে তাঁকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে প্রথমে বাধা দেন বিক্ষোভকারীরা। গেট খুলে গাড়ি থেকে উত্তেজিত জনতা তাঁকে বের করে আনার চেষ্টা করেন। কিন্তু পুলিশ বাধা দিলে ধস্তাধস্তি শুরু হয়ে যায়। পুলিশের সঙ্গে বচসায় জড়ান বিক্ষোভকারীরা। আক্রোশ গিয়ে পড়ে পুলিশের উপর। সেই সময় একাধিক স্লোগানও ওঠে।


এক বিক্ষোভকারী বলেন, 'চুরি পরা সরকার আর নেই দরকার।' অপর এক বিক্ষোভকারী বলেন, 'গড়িয়া মোড়ে মিছিল করছিলাম। উনি সকলকে যাচাই করছিলেন।' স্থানীয় এক যুবকের বক্তব্য, 'সবার ভিডিও করছিলেন। কে, কী করছে সেগুলো দেখছিলেন। বাড়ির ঠিকানা জিজ্ঞাসা করছে। ইনি পুরোপুরি ইনফর্মার। যাচাই করলে বোঝা যাবে।'


এদিকে রবিবারের পর বুধবারও। এবার গড়িয়ায় রাত দখলের কর্মসূচিতে কটূক্তির অভিযোগ ওঠে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে পুলিশকে ঘিরে চলল বিক্ষোভও। 


ঘটনাস্থল গড়িয়া মোড়। এদিন গড়িয়ায় প্রতিবাদ চলাকালীন সেখানে একজন ঢুকে পড়েন। এক মহিলাকে তিনি কটূক্তি করেন বলে অভিযোগ। পুলিশ এসে তাঁকে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়। 


ঘটনায় প্রত্যক্ষদর্শী এক মহিলা বলেন, "একজন মহিলা অফিস থেকে ডিউটি করে আসছিলেন। একজন মদ্যপ তাঁকে নোংরাভাবে অফার দিয়েছেন। ৫ হাজার টাকা রেট বলে ! তাকে পুলিশ এসে গার্ড করে নগর থানায় নিয়ে যায়।"


তিলোত্তমায় আজও 'রাত দখল'


মধ্যরাত পার। এখনও কলকাতার বিভিন্ন প্রান্তে শ'য়ে শ'য়ে মানুষ। তাঁদের গলায় একটাই স্বর ...'Justice For RG Kar।' তীব্র প্রতিবাদে গর্জে উঠেছে নাগরিক সমাজ। জাস্টিসের দাবিতে স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলন চলছে। দিকে দিকে প্রতিবাদের আওয়াজও চড়ছে। 


লেকটাউনে এখনও জমায়েত করে আছেন বহু মানুষ। গানে-বাজনায় মুখরিত হয়ে ওঠে এলাকা। আন্দোলনে শামিল এক তরুণ বলেন, "বিচারটা যেন তাড়াতাড়ি হয়। বিচার যদি তাড়াতাড়ি না হয়, যদি তারিখ পে তারিখ চলতে থাকে, তাহলে আমরা আন্দোলনে আরও তীব্র হয়ে নামব। সবাই এক হয়ে নেমেছি। পুরো পশ্চিমবঙ্গ এক হয়ে সরকারের বিরুদ্ধে নামব।" এরমধ্যে সুপ্রিম কোর্টে বৃহস্পতিবার যে শুনানি ছিল, তা পিছিয়ে গেছে। তা নিয়ে কি হতাশ ? এর উত্তরে এক তরুণী বলেন, "হতাশা হয়তো কোথাও রয়েছে। কিন্তু, সেই হতাশাটা আমাদের কোথাও দমাতে পারেনি। সেটা সব মানুষ প্রমাণ করে দিয়েছে। আমরা লেকটাউন কমিউনিটি। অরাজনৈতিক মঞ্চ। কিন্তু, সেটা লেকটাউন কমিউনিটির অনেক ঊর্ধেব চলে গিয়েছে কারণ, বহু লোক আমাদের সঙ্গে এসে মিলিত হয়েছে। আমাদের সবারই একটাই বক্তব্য, তিলোত্তমার বিচার চাই।" 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।