কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, কলকাতা : পুজোর মধ্যেও কি লাগাতার কর্মবিরতি চালিয়ে যাবেন জুনিয়র ডাক্তাররা? আন্দোলনের রূপরেখা নিয়ে আজই সিনিয়র ও জুনিয়র ডাক্তারদের বৈঠক হওয়ার কথা। তারই আগে জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়া কতটা সঙ্গত হবে, তা নিয়ে ভেবে দেখতে বললেন সিনিয়র ডাক্তারদের একাংশ। এবার তাঁদের ফের কর্মবিরতিতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত পুর্নবিবেচনার জন্য় পরামর্শ দিচ্ছেন বিশিষ্টদের একাংশও। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভেনশনে বক্তব্য রাখতে গিয়ে, জুনিয়র ডাক্তারদের উদ্দেশে আন্দোলন জারি রাখলেও কাজে ফেরার পরামর্শ দিলেন বিশিষ্ট চিকিৎসক কুণাল সরকারও।


জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে কুর্নিশ জানিয়েই ডা. সরকার বলেন, তাঁদের ওপর যে দায়িত্ব আছে, তাতে দ্বিতীয় দফার কর্মবিরতিতে কি যাওয়াটা ঠিক হবে কিনা ভাবা দরকার। টিচার্স ফোরামে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, গত বেশ কিছু বছর ধরে ভারতে স্বাক্ষরতার হার আটকে আছে ৮০ শতাংশ। বাকি ২০ শতাংশকে কিছুতেই স্বাক্ষরতার আওতায় আনা যাচ্ছে না, সমস্যা আছে। তা নিয়ে ভাবতে হবে। শিক্ষাক্ষেত্রে যা সমস্যা আছে , তার থেকে চারগুণ বেশি সমস্যা রয়েছে স্বাস্থ্যক্ষেত্রে । তা নিয়ে ভাবতে হবে, বসতে হবে, কিন্তু একই সঙ্গে সাধারণ মানুষের পাশে দাঁড়াতে হবে। 


ডা. কুণাল সরকার আরও বলেন, যতই পরিসংখ্যান দেওয়া হোক না কেন, আমাদের রাজ্যের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে, পিজিটি , জুনিয়র ডাক্তারদের ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। এটা মানতেই হবে। আন্দোলন থেকে অনেকগুলি দাবি উঠে আসছে। কিন্তু তিনি অনুরোধ করেন, এটা ভাবতে হবে, এটাকে কতটা আমরা সামাজিক সমস্যা হিসেবে ভাবছি, কতটা রাজনৈতিক সমস্যা হিসেবে ভাবছি, সেই দৃষ্টিভঙ্গিটাও পরিষ্কার করা দরকার। 


ডা. কুণাল সরকার বলেন, 'আবার হাত জোড় করে বলব, যে সমস্যাগুলো জুনিয়র ডাক্তাদের মধ্যে, সার্ভিস ডক্টরদের মধ্যে, প্রশাসনের মধ্যে রয়েছে, এই ত্রিপাক্ষিক আলোচনাটার মধ্যে সুপ্রিম কোর্টকে এনে সালিশি বসিয়ে সমস্যাটা সহজ করছি, নাকি আরও এই সমস্যাটাকে আমরা বিকৃত করছি ' 


তিনি আরও বলেন, এই সমস্যার সমাধান যদি আমরা নিজেরা বের করতে না পারি তাহলে স্বাস্থ্য ব্যবস্থার শিরদাঁড়া ভেঙে পড়বে। তিনি বলেন, ' স্বাস্থ্য ব্যবস্থায় অনেক সমস্যা আছে.... সরকারি হাসপাতালে গেলে সুতো ফুরিয়ে যায় আর বেসরকারিতে গেলে টাকা ফুরিয়ে যায়'। কিন্তু এই মুহূর্তে নিজেরা আলোচনা করে ঝামেলার একটা সমাধান বের করার পরামর্শ দিলেন কুণাল সরকার। তিনি বলেন, আর যাই হোক না কেন, এই আন্দোলন যেন ৭০ দশকের ট্রেড ইউনিয়ন আন্দোলন না হয়ে যায় ! দুটো পাথর ঘষলে উত্তাপ বেরোয় ঠিকই, কিন্তু পাথর ক্ষয়ে যায়। 


আরও পড়ুন :


'মানুষ ফাঁদে পড়ুক বা কষ্ট পাক এটা আন্দোলনের উদ্দেশ্য তো নয়', আন্দোলনরতদের কী বার্তা মোনালিসা মাইতির?