অরিত্রিক ভট্টাচার্য এবং সৌরভ বন্দ্যোপাধ্যায়, হুগলি: পুজোর বাকি আর মাত্র কয়েকদিন। তবে প্রতি বছরের মতো পরিস্থিতি হয়তো এক নয়। অনেকেই আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদে সরকারের পুজো-অনুদান ফিরিয়ে দিয়েছেন। সেই তালিকায় এবার জুড়ল হুগলির নবগ্রামের মহাদেশ পরিষদ ক্লাবের নাম। দুর্গাপুজোর অনুদান ৮৫ হাজার টাকা ফেরতের পথে হাঁটল এই ক্লাব। 


আর জি কর ঘটনার প্রতিবাদে তাঁরা এই অনুদান ফেরাচ্ছেন, এমনটাই জানিয়েছেন পুজো উদ্যোক্তারা। উৎসবে না ফিরতে চাইলেও দুর্গাপুজো চিরাচরিত নিয়মরীতি মেনে করতে চাইছেন ক্লাবকর্তারা। পুজোর জাঁকজমকও কমানো হচ্ছে। স্থানীয় মানুষদের থেকে প্রাপ্য চাঁদা দিয়েই তাঁরা পুজো করবেন, এমনটাই জানিয়েছেন ক্লাবের সম্পাদক দেবাশিস গুহ ঠাকুরতা। তিনি এও বলেন, 'অনুদান নেওয়ার ফলে মানুষের কাছে যাওয়ার প্রবণতা কমছে। সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ে পুজো করার বিষয়টা কমে যাচ্ছে। এটা আগামী দিনের জন্য মোটেও ভাল নয়।' 


মহাদেশ পরিষদ ক্লাব পরিচিত তাদের সাবেকি পুজোর জন্য। পুজোর দিনে এখানে বহু মানুষের ভিড় জমান। মূলত তরুণ তরুণীদের আকর্ষণের জায়গা মহাদেশ পরিষদের দুর্গাপুজো। একসময় এই মহাদেশ পরিষদকে বলা হত 'নবগ্রামের ম্যাডক্স স্কোয়ার'। কারণ গান, আড্ডা, ধুনুচি নাচ, ঢাকের প্রতিযোগিতা সব মিলিয়ে এই পুজোর চারদিন এই ক্লাবের আবহটাই আলাদা থাকত।


আরও পড়ুন, জুনিয়র ডাক্তারদের ধর্না শেষ হতেই স্লোগানে আলকাতরার প্রলেপ! বেনজির এক দৃশ্য!


কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে আর জি কর ঘটনার প্রতিবাদে এই বছর সরকারি অনুদান ৮৫ হাজার টাকা ফেরত দিচ্ছে এই ক্লাব। এই মর্মে চন্দননগর পুলিশ কমিশনারেট এর কাছে একটি লিখিত আবেদনও দায়ের করেছেন তাঁরা। এই নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক চাপানউতোর।


শহর তৃণমূল কংগ্রেসের যুবর ব্লক প্রেসিডেন্ট শতদ্রু কর বলেন, 'ওটাকে ক্লাব না বলে সিপিএম-এর পার্টি অফিস বলাই ভাল। সিপিএম-এর মিটিং, অন্যান্য কাজ হয়। দুর্গাপুজোর মধ্যে রাজনীতির রঙ লাগানোর চেষ্টা করছে। নবগ্রামে ৫০টার উপর ক্লাব আছে। ১-২টো ক্লাব শুধু নিচ্ছে না। বরং ভালই হচ্ছে। যাদের অনুদান সত্যিই দরকার তাঁরা পাবে।  


এ বিষয়ে বিজেপি শ্রীরামপুর সাংগঠনিক সম্পাদক ইন্দ্রনীল দত্ত বলেন, 'আরজিকর ঘটনায় যেভাবে শাসক দল গোটা ঘটনাকে ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেছে। যেভাবে তথ্য-প্রমাণ লোপাট করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ তার প্রতিবাদে নেমেছে। নবগ্রাম মহাদেশ পরিষদ শুধু নয় সারা বাংলার বহু ক্লাব এর প্রতিবাদে পুজোর অনুদান প্রত্যাখ্যান করছে। তৃণমূল সরকারের শেষের সময় এসে গেছে। আগামী নির্বাচনে মানুষ ভোটের ফলাফলের মাধ্যমে তা যথাযথ প্রমাণ দেবে।' 



আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে