কলকাতা: আর জি কর কাণ্ডের (RG Kar Incident) সেই ভয়াবহ রাতের এক মাস পার। এখনও বিচার মেলেনি। সেই বিচারের দাবিতেই ৩০ দিন পেরোলেও একভাবে চলছে প্রতিবাদ। কালিম্পং থেকে কসবা, সাধারণ মানুষের একটাই স্বর, একটাই দাবি, 'উই ওয়ান্ট জাস্টিস'। আর জি কর কাণ্ডের বিচার চাই। সেই বিচারের দাবিতেই দিকে দিকে রাতদখল, ভোরদখল। সেই প্রতিবাদে সামিল সাধারণ মানুষ থেকে বিশিষ্টজনেরা।


সোমবার, সুপ্রিম-শুনানির আগে বিচার চেয়ে পথে মানুষ। যাদবপুরে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতিবাদে আওয়াজ তুললেন কৌশিক গঙ্গোপাধ্যায় (Kaushik Ganguly), অনুপম রায়রা। এত প্রতিবাদ, আন্দোলন দেখে গর্বিত কৌশিক। তিনি সুপ্রিম কোর্টের কাছে একদিকে যেমন দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানালেন, তেমনই ন্য়ায়বিচারের দাবিতে প্রতিবাদ চালিয়ে যাওয়া সাধারণ মানুষের কাছে একটু ধৈর্য্য ধরারও আর্জি জানালেন।


কৌশিক বলেন, 'আমি সকলকে একটু ধৈর্য্য ধরতে বলব। তথ্যপ্রমাণ লোপাটের যে চেষ্টা হয়েছে, এটা আমি বলছি না,যাদের বোধ আছে, তারা সকলেই জানেন। তাই বিচার পেতে সময় লাগবে। কাসভের ফাঁসি হতে পাঁচ বছর সময় লেগেছিল। তাই ধৈর্য্য তো একটু ধরতেই হবে। তবে হ্যাঁ, যতদ্রুত সম্ভব তদন্তের গতি বাড়িয়ে শাস্তি দিতেই হবে। সুপ্রিম কোর্টের দায়িত্ব একটা দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া, যাতে এই শাস্তি উদাহরণ তৈরি করে। ন্যায়বিচার চান না, এমন কোনও রাজনৈতিক দল আছে বলে আমার মনে হয় না। কিন্তু যারা এই ঘটনাকে প্রশয় দিয়েছে, তথ্য লোপাটের চেষ্টা করেছে, তারাও ধর্ষকদের মতোই সমান দোষী। তারাও শাস্তি না পাওয়া পর্যন্ত মানুষের এই যন্ত্রণা কমবে না।'


আন্দোলনরত চিকিৎসকরা বারংবারই জানিয়েছেন এই প্রতিবাদ সাধারণ মানুষের প্রতিবাদ, এতে কোনও রাজনৈতিক রং নেই। অভিনেতা, পরিচালক কৌশিকের কথাতেই সেই বিষয়টাই উঠে এল। তাঁর মতে সাধারণ মানুষ কোণঠাসা হতে হতে অন্য়ায়, অবিচারের বিরুদ্ধে প্রতিবাদে নেমেছেন। 'গাছে ডালপালা শুকোতে শুকোতে একসময় সেই গাছে আগুন লেগে যায়। সেই আগুন লাগার জন্য একটা ফুলকিই যথেষ্ট। সেই ফুলকি থেকেই দাবানলের সৃষ্টি হয়। তেমনভাবেই এটা মানুষের বহুদিনের জমা কষ্ট, অভিমানের বহিঃপ্রকাশ। নয়তো উত্তরবঙ্গ থেকে ক্যানিং, সকলে একইভাবে, একই সুরে এমনভাবে ফেটে পড়ত না। এটা নাটক নয়, ম্যাটাডোরে করে ডিম্ভাত খাওয়ানোর লোভে আসা দর্শক নয় এঁরা। এঁরা সবাই সাধারণ মানুষ।' মত কৌশিকের।


তিনি আরও যোগ করেন, 'এখানে সবার হাতে রয়েছে জাতীয় পতাকা। আমি গর্বিত আমি এমন এক শহরে থাকি যেখানে মানুষ বুক চিতিয়ে নিজেদের অভাবের কথা বলতে পারে, অভিযোগ জানাতে পারে। এমন সাহস অন্য কোনও রাজ্যের মানুষজনের মধ্যে পাওয়া যাবে না। এই জাতীয় পতাকা প্রমাণ করে দেয় আমরা কোনও রাজনৈতিক দলের নই। রাজনৈতিক পতাকাগুলি যার যার দলের। সাধারণ মানুষের একটাই পতাকা সেটা দেশের পতাকা। আমরা ভারতবাসী এবং আমরা স্বাধীনতার জন্য, ন্যায়বিচারের জন্য এইভাবে আজ পথে নেমেছে।'



'তিলোত্তমা' কি বিচার পাবে? দোষীরা কি শাস্তি পাবে? সেই আশাতেই আট থেকে আশি সকলে। আর সকলেরই নজর সোমবার সুপ্রিম কোর্টের শুনানির দিকে।


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।


আরও পড়ুন: 'সদুত্তর চাই, যেগুলো লুকনোর চেষ্টা চলছে সেই সত্যিগুলো জানতে চাই', দাবি সুদীপ্তা চক্রবর্তীর