কলকাতা : আবারও নীতিপুলিশি। এবার রাত-দখল করতে যাওয়া মহিলাদের কটাক্ষ করতে গিয়ে মদ খাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে আনলেন রাজ্যের মন্ত্রী। রাত দখলের আন্দোলন নিয়ে এর আগে মহিলাদের কার্যত হুঁশায়ারি দিয়েছিলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী। এবার প্রাণিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী। সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চ থেকে মন্ত্রীর দাবি, রা দখল করতে গিয়ে কেউ কেউ রাস্তায় বসে মদ খাচ্ছে ! এবার মেয়েরা রাত দখলের নামে কোথায় যাচ্ছে, বাবা- মায়েদের খোঁজ রাখতে বলেন তিনি।
উদয়ন গুহর পর এবার স্বপন দেবনাথ। সোমবার কালনায় একটি সরকারি অনুষ্ঠানের মঞ্চে দাঁড়িয়ে মহিলা প্রতিবাদীদের এভাবেই আক্রমণ করেন প্রাণিসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী। মন্ত্রীর দাবি, তাঁর এলাকায় কোন মহিলা মদ্যপান করছেন, তা দেখতে তিনি ২ দিন বিভিন্ন হোটেলে খোঁজ নেন। মন্ত্রীর দাবি, তাঁর এলাকায় কোন মহিলা মদ্যপান করছেন, তা দেখতে তিনি ২ দিন বিভিন্ন হোটেলে খোঁজ নেন। জানতে পারেন, একটি রেস্টুরেন্টে একটি মেয়ে দুই জন পুরুষের সঙ্গে বসে মদ্যপান করছেন। তা দেখে পুলিশকে জানান মন্ত্রী। পুলিশ এসে তাঁদের তুলে নিয়ে যায় ! বাবা - মাকে ফোন করে জিগ্যেস করা হয়, তাঁরা কি জানেন, তাঁদের মেয়েরা কোথায় গিয়েছেন ?
মন্ত্রীর দাবি, রাতে রাস্তায় বসে মদ খাচ্ছে মেয়েরা। বাবা-মায়ের উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, রাত ২টোয় আপনার মেয়ে কোন রাতজাগা আন্দোলনে গেছে, খোঁজ নিয়েছেন? আমাদের ছেলেরা যদি পাহারা না দিত, মত্ত অবস্থায় মেয়েটার কিছু হয়ে গেলে তখন তো দায় আমাদের ঘাড়ে চাপত।
দেখা যাচ্ছে, একের পর এক তৃণমূল নেতারা প্রতিবাদীদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন। ফের তৃণমূলের নিশানায় আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদীরা। স্বপন দেবনাথের দাবি, তিনি তাঁর এলাকার হোটেল মালিকদের বলেও দিয়েছেন, তাঁরা যেন মহিলাদের মদ না সার্ভ করে। একথা নিজেই জানিয়েছেন মন্ত্রী। বিতর্কিত মন্তব্যের পরেও অবস্থানে অনড় স্বপন দেবনাথ। তাঁর দাবি, রাত বিরেতে রাস্তায় মদ্যপান করার সময় কোনও মেয়ের কিছু হলে তাঁদের উপরই দায় বর্তাবে। তাই তিনি আগে থেকেই নজর রেখেছেন ও পদক্ষেপ করেছেন !
এর আগে আন্দোলনকারীদের আক্রমণ করতে গিয়ে মাত্রা ছাড়ান উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ এবং বাঁকুড়ার তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী। উদয়ন বলেছিলেন, যদি অরাজকতা সৃষ্টি করতে চাও, যদি নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চাও, রাস্তায় নেমে তাকে প্রতিহত করবার রাস্তা আমাদের জানা আছে। তৃণমূল সাংসদ অরূপ চক্রবর্তী বলেছিলেন, 'ডাক্তাররা যদি ডাক্তারি না করে অবরোধের নাম করে বাড়ি চলে যায়, যদি বয়ফ্রেন্ড নিয়ে ঘুরতে যায়, তাহলে তো অটোমেটিক হবেই। রোগী যদি বিনা চিকিৎসায় হাসপাতালে মারা যায়, তাহলে কি ছেড়ে দেবে গ্রামের মানুষ?'
আরও পড়ুন :