কলকাতা: আর জি কর হাসপাতালে তরুণীকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় তিন সপ্তাহ পার। কিন্তু যত দিন যাচ্ছে, আরও ঘোরাল হচ্ছে রহস্য। সেই আবহেই এবার ভাইরাল অডিও ক্লিপ ঘিরে তৈরি হচ্ছে ধন্দ। তরুণী চিকিৎসকের দেহ উদ্ধারের পর হাসপাতালের তরফে পরিবারকে পর পর যে তিনবার ফোন করা হয়, সেই কথোপকথনই ওই অডিও ক্লিপে ধরা পড়েছে বলে দাবি। যদিও ওই ভাইরাল অডিও ক্লিপের সত্যতা যাচাই করেনি এবিপি আনন্দ। (RG Kar Viral Audio Clip)
৯ অগাস্ট মেয়ে অসুস্থ বলে প্রথমে ফোন করা হয় এবং পরে আত্মহত্যার তত্ত্ব দেওয়া হয় বলে প্রথম থেকেই দাবি করছিলেন নির্যাতিতার পরিবারের লোকজন। ভাইরাল হওয়া অডিও ক্লিপটিতেও তেমনই ধরা পড়েছে। প্রথম বার ফোন করে বলা হয়, তরুণী চিকিৎসক অসুস্থ। দ্বিতীয় বার ফোন করে বলা হয়, ইমার্জেন্সিতে আনা হয়েছে। জলদি এসে পৌঁছন পরিবার। তৃতীয় বার ফোন করে বলা হয়, তরুণী আত্মহত্যা করেছেন হয়ত। (RG Kar Case)
যে মহিলার গলা শোনা গিয়েছে অডিও ক্লিপে, হাসপাতালের অ্যাসিস্ট্যান্ট সুপার বলে পরিচয় দেন তিনি। বার বার তাঁর বয়ান বদল নিয়ে যেমন প্রশ্ন উঠছে, তেমনই নির্যাতিতার পরিবারের সঙ্গে তাঁর কথা বলার ধরন নিয়েও সমালোচনা শুরু হয়েছে। অসুস্থ, ইমার্জেন্সিতে ভর্তি বা নির্যাতি আত্মহত্যা করেছেন হয়ত বলে শুধু পরিবারকে বিভ্রান্তই করেননি তিনি, তাঁর সমবেদনার কোনও ছোঁয়া ছিল না বলে উঠছে অভিযোগ। সেই নিয়েও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে কাঠগড়ায় তুলছেন অনেকে।
এ নিয়ে এবিপি আনন্দে মুখ খোলেন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ সব্যসাচী মিত্র। তিনি বলেন, "ইংরেজিতে এমন দুঃসংবাদ দেওয়াকে 'ব্রেকিং ব্যাড নিউজ' বলা হয়। এক্ষেত্রে কোনও রকম ট্রেনিংই তো শুনতে পেলাম না! যে কণ্ঠস্বর বলছেন, তিনি খুব তাড়াহুড়ো করছেন। ওঁকে উৎকণ্ঠিতও, গলার স্বর থেকে বোঝা যাচ্ছে। ফোনটা যে তড়িঘড়ি করা, অতি সামান্য তথ্য দিয়ে দ্রুত কথা শেষ করতে চাইছেন, বোঝা যাচ্ছে সেটাও।"
সব্যসাচী আরও বলেন, "এটা অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। সহানুভূতির সঙ্গে কথা বলতে হয়। সাধারণত ফোনে দুঃসংবাদ দেওয়া উচিত নয়। এই যে বলা, আপনার সুইসাইড করেছে হয়ত, এটা যাঁকে বলা হচ্ছে, তিনি আরও উদভ্রান্ত হয়ে পড়বেন। সহানুভূতি বলে যা আছে, তা এই কথোপকথনে কোথাও নেই। দুঃসংবাদ দেওয়ার প্রোটোকল আছে, ট্রেনিং হয়, ভিতর থেকেও আসতে হয়। এখানে কোনও কিছুই পেলাম না।"