ভাস্কর ঘোষ, হাওড়া: বালির (bali) জাতীয় সড়কের (national highway) উপর ভয়াবহ দুর্ঘটনায় চূর্ণবিচূর্ণ প্রাইভেট কার (private car)। পুলিশ ও স্থানীয়রা ৬ জনকে বের করতে পারলেও গভীর রাত পর্যন্ত গাড়ির ভিতরেই আটকে থাকেন ২ জন। প্রায় ৫ ঘণ্টার চেষ্টায় গ্যাস কাটার (gas cutter) দিয়ে গাড়ির চূর্ণবিচূর্ণ (damaged) অংশ থেকে কেটে উদ্ধার করা হয় দুজনকে।
কী ঘটেছিল?
১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক বালি নিশ্চিন্দার মাইতি পাড়া ব্রিজের কাছে ভয়াবহ দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। রবিবার রাত দশটা নাগাদ পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলদা থেকে একটি প্রাইভেট গাড়িতে করে আট জন ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক ধরে বারাসাতের দিকে যাচ্ছিলেন। গাড়িটি মাইতি পাড়ার ব্রিজের কাছে জিরো পয়েন্টে পৌঁছালে আচমকা পিছন থেকে এক বড় ট্রেলার তাকে সজোরে ধাক্কা মারে। তীব্র অভিঘাতে সেটি চূর্ণ-বিচূর্ণ হয়ে যায়। ভিতরেই আটকে পড়েন ৮ যাত্রী। পুলিশ এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ছ' জনকে বের করতে পারলেও গভীর রাত পর্যন্ত দুজন গাড়ির ভেতরেই আটকে পড়ে ছিলেন। অবশেষে প্রায় পাঁচ ঘণ্টার চেষ্টায় রাত তিনটে নাগাদ গ্যাস কাটার দিয়ে গাড়ি কেটে উদ্ধার করা হয় তাঁদের। আশার কথা একটাই। যাত্রীদের কারও আঘাতই তেমন গুরুতর নয়। তবে যে ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে তাতে উনিশ-বিশ হলে আট জনের কী পরিণতি হতে পারত ভেবেই শিউরে উঠছেন পরিজনেরা।
বার বার সড়ক দুর্ঘটনা...
হাওড়া-সহ রাজ্যের নানা প্রান্তে সড়ক দুর্ঘটনার খবর এখন নিত্য পরিচিত হয়ে উঠেছে। বালির ক্ষেত্রে মর্মান্তিক পরিণতি এড়ানো গেলেও সব সময় বরাত সহায় হয় না। যেমন গত অক্টোবরে এক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ যায় মা এবং মেয়ের। উলুবেড়িয়ার জগৎপুর জোড়াকলতলায় ১৬ নম্বর জাতীয় সড়কের উপর ওই মর্মান্তিক ঘটনায় জানা, একটি অ্যাম্বুলেন্স ধাক্কা দিয়েছিল দুজনকে। ঘটনার দিন সকালে মেয়েকে বৃত্তি পরীক্ষার জন্য নিয়ে যাচ্ছিলেন মা। তখনই ওই দুর্ঘটনা। প্রত্যক্ষদর্শীদের একাংশ জানিয়েছিলেন, দুজনে তখন রাস্তা পার হচ্ছেন। ঠিক তখনই দ্রুত গতিতে আসা একটি ফাঁকা অ্যাম্বুলেন্স তাঁদের ধাক্কা মারে। ঘটনাস্থলেই মারা যান দুজন। তার পর স্থানীয় বাসিন্দারা দেহ দুটি আটকে রেখে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে জাতীয় সড়ক অবরোধ করেন। জ্বালিয়ে দেওয়া হয় ঘাতক অ্যাম্বুলেন্সটিও। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে ছুটে আসে উলুবেড়িয়া থানার পুলিশ। বেশ কিছু ক্ষণ ১৬ নম্বর জাতীয় সড়ক যান চলাচল বন্ধ। স্থানীয়দের অভিযোগ আন্ডারপাস না থাকায় ওই এলাকায় প্রায় দুর্ঘটনা ঘটছে। এদিনের মর্মান্তিক অভিজ্ঞতার পর তাঁদের দাবি একটাই, অবিলম্বে আন্ডারপাসের ব্যবস্থা করতে হবে। এর পর নভেম্বরের প্রথম দিনেই ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনা ঘটেছিল পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দকুমারে। চার চাকার গাড়ির সঙ্গে মোটরবাইকের একেবারে মুখোমুখি সংঘর্ষে জখম হন এক মহিলা। তাঁকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তমলুক জেলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বস্তুত, এরকম একঝাঁক ঘটনার উদাহরণ রয়েছে রাজ্যজুড়ে। কিন্তু কেন? বার বার এমন দুর্ঘটনা সত্ত্বেও কেন নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না বিষয়টি? গাফিলতি কোথায়? এখনও উত্তর অধরা।
আরও পড়ুন:শেষপর্বের গোলে কাটল বিপত্তি, স্পেনকে রুখে বিশ্বকাপে ভেসে থাকল জার্মানি