সনত্‍ ঝা ও জয়দীপ হালদার, শিলিগুড়ি ও ঘোড়ামারা : স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে দুঃস্থদের হাতে খাদ্যসামগ্রী তুলে দিলেন রবিন হুড আর্মির (Robin Hood Army) সদস্যরা। দেওয়া হল চাল, ডাল, শুকনো নানা খাবার। উত্তরবঙ্গে শিলিগুড়ি (Siliguri) ও দক্ষিণবঙ্গে ঘোড়ামারা দ্বীপে দুঃস্থদের হাতে খাদ্য সামগ্রী তুলে দেওয়া হয়। 


কিংবদন্তি রবিনহুড ! নটিংহামশায়ারের শেরউড ফরেস্টে থেকে দুষ্টের দমন আর শিষ্টের পালনই ছিল তাঁর লক্ষ্য। রবিনহুডের সেই কীর্তি কাহিনি হয়ত শোনেননি শিলিগুড়ি বা ঘোড়ামারার অনেক বাসিন্দা। কিন্তু তাতে কী ? তাঁদের কাছে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে গেল রবিনহুড আর্মি। স্বাধীনতা দিবসের ২৪ ঘণ্টা আগে, রবিবার, রবিন হুড আর্মির সদস্যরা দক্ষিণ ২৪ পরগনার ঘোড়ামারা ও শিলিগুড়ির মাটিগাড়ায় লেনিন কলোনির বাসিন্দাদের হাতে তুলে দিলেন চাল ডাল সহ নানা খাবার সামগ্রী। 


উদ্বৃত্ত খাবার অভুক্তদের হাতে-


রেস্তোরাঁ, পার্টি ও বিভিন্ন অনুষ্ঠানে অনেক সময় প্রচুর খাবার নষ্ট হয়। অথচ খাবার নষ্ট না করে, উদ্বৃত্ত খাবার অভুক্তদের হাতে পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে। সেই কাজটাই করে রবিন হুড আর্মি। রবিবার ঘোড়ামারা দ্বীপে প্রায় ১ হাজার পরিবারের হাতে রবিনহুড আর্মির তরফে চাল, ডাল, বিস্কুট, সয়াবিন, চিড়ে তুলে দেওয়া হয়। সেইসঙ্গে দেওয়া হয়, একটি করে জাতীয় পতাকা।


আরও পড়ুন ; ক্ষুধার্ত মুখে খাবার তুলে দেওয়াই লক্ষ্য, কীভাবে লড়াই করেন কলকাতার 'রবিনহুড'রা?


এনিয়ে ঘোড়ামারা দ্বীপের বাসিন্দা নারায়ণ পাত্র বলেন, "আজ খেলে কাল কী খাব, তা জানি না। এই ওয়েদারে ঘরে কিছুই নেই। এক বছর প্রায় চাষ হয়নি। ইয়াসের পর থেকে নোনা জলের কারণে চাষ হয়নি। খাবার পেয়ে তো ভালই লাগছে।" শ্রাবন্তী দাস নামে অপর এক বাসিন্দা বলেন, ঘরে কিছু নেই। চাল ডাল দিয়েছে।


রবিন হুড আর্মির প্রায় ৪০ জন সদস্য খাদ্যসামগ্রী তুলে দেন দ্বীপবাসীর হাতে। রবিন হুড আর্মির সদস্য সায়নী পাল বলেন, আমরা স্বাধীনতা দিবসের প্রাক্কালে প্রতি বছরই কোথাও না কোথাও যাই। এবার এসেছিলাম ঘোড়ামারা দ্বীপে। এভাবেই আমরা উদযাপন করলাম। জাতীয় পতাকাও দিয়েছি।


অন্যদিকে, শিলিগুড়ি মাটিগাড়ার লেনিন কলোনিতে ১৭৫টি পরিবারের হাতে রবিন হুড আর্মির তরফে তুলে দেওয়া হয় চাল, আটা। বিশেষভাবে সক্ষম ২ জনকে দেওয়া হয় হুইল চেয়ার। রবিন হুড আর্মির শিলিগুড়ি শাখার ইনচার্জ অনামিকা দত্ত বলেন, আমাদের লক্ষ্য মানুষ যাতে অভুক্ত না থাকে। আমরা লোককে বলি, উদ্বৃত্ত খাবার আমাদের দিন আমরা অভুক্তদের পৌঁছে দিই। স্বাধীনতার অমৃত মহোত্‍সব উপলক্ষে আজ ও কাল আমরা খাবার দেব।


রবিন হুড আর্মির অপর এক সদস্য আজিম আখতার বলেন, এই ধরনের কাজ করতে ভাল লাগে। সময় বের করে এই কাজ করা হয়।


২০১৪ সালে পথ চলা শুরু হয় রবিন হুড আর্মির। তারপর এই সংগঠন ছড়িয়ে পড়েছে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে।