কলকাতা: ভোটের আগে ফুলবদল করেছিলেন তিনি। আর তার পর থেকেই বড় বড় পরিচালক এবং প্রযোজকদের দরজা তাঁর সামনে জন্য বন্ধ হয়ে গিয়েছে বলে এ বার অভিযোগ তুললেন অভিনেতা রুদ্রনীল ঘোষ (Rudranil Ghosh)। তাঁর অভিযোগ, ২০২১ সালে পর থেকে গত ১৬ মাস ধরে মূল ধারার পরিচালক, প্রযোজকরা কেউ তাঁকে কাজ দিতে পারছেন না। ভোটের আগে যাঁরা বিজেপি-তে এসেছিলেন, তাঁদেরও একই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তাতে লড়াই করতে না পেরে অনেকে আবার শাসক শিবিরে ফিরে গিয়েছেন। তিনি দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করে চলেছেন। কিন্তু পরিচিত এবং ঘনিষ্ঠরাও তাঁকে কাজ দিতে ভয় পাচ্ছেন বলে দাবি রূদ্রনীলের।


ঠিক যে যে অভিযোগ করলেন রুদ্রনীল


রবিবার বিজেপি-র (BJP) রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের (Sukanta Majumdar) সঙ্গে দেখা করেন রুদ্রনীল। ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ না পাওয়া নিয়ে তাঁর কাছে অভিযোগ জানান। সেখান থেকে বেরনোর সময় সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হন অভিনেতা। বলেন, এক সময় পরিচালক-প্রযোজকদের অন্যতম পছন্দের অভিনেতা ছিলাম আমি। আজও মানুষের পছন্দের তালিকায় রয়েছি। কিন্তু ২০২১ সালের পর থেকে আজ প্রায় ১৬ মাস হয়ে গেল, মূলধারার পরিচিত পরিচালক-প্রযোজকরা আমাকে ছবিতে নিতে পারেন না।রাজনীতি তো আমার পেশা নয়, অভিনয়ই ভালবাসা এবং পেশা। কিন্তু পরিস্থিতি ভয়ঙ্কর জায়গায় পৌঁছেছে। দাঁতে দাঁত চেপে লড়াই করছি আমি। যাঁরা বিজেপি-তে এসেছিলেন, লড়াই করতে না পেরে অনেকেই ফিরে গিয়েছেন শাসক শিবিরে। সংবাদমাধ্যমের সামনে অনেক কথাই বলা যায় না। তাই শাসকদল (TMC) ঘনিষ্ঠ শিল্পী-বুদ্ধিজীবীরাও রামপুরহাট, আনিসকাণ্ড নিয়ে চুপ থাকেন।‘’


রুদ্রনীলকে শ্লেষ কুণালের


ভোটের আগে রীতিমতো চমক তৈরি করে বিজেপি-তে গিয়ে উঠেছিলেন রুদ্রনীল। কিন্তু ভোটের ফলাফল বেরনোর পর দেখা যায়, মুখ থুবড়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির। তার পর থেকেই রাজনীতিতে রুদ্রনীলের সক্রিয়তা সে ভাবে চোখে পড়ে না। তিনি রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিতে চলেছেন বলেও কিছু দিন আগে জল্পনা শুরু হয়েছিল। সেই সম্ভাবনার কথা যদিও এ দিন উড়িয়ে দেন রুদ্রনীল। তাঁর সাফ কথা, “বিজেপি ছাড়ছি বা ছেড়ব, এমন কোনও কথা নেই। মুখ্যমন্ত্রী শুধু তৃণমূলের মুখ্যমন্ত্রী নন, সমস্ত রাজনৈতিক দল, ধর্ম, জীবিকার মুখ্যমন্ত্রী। তিনি নিজেও তো শিল্পী! ছবি আঁকেন, কবিতা লেখেন, গান বাঁধেন, অনেক কিছুই করেন। তাই ওঁকে বলব, দেশের সংস্কৃতির রাজধানী যেন তৃণমূলের রাজধানীতে পরিণত না হয়!”


তবে রুদ্রনীলের অভিযোগ খারিজ করে দিয়েছেন তৃণমূল মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। তাঁর যুক্তি, বাংলা সিরিয়ালেও এমন অনেকে রয়েছেন, যাঁদের কেউ তৃণমূল, কেই বাম, কেউ বিজেপি আবার কেউ কংগ্রেস। দিব্যি কাজ করে চলেছেন তাঁরা। তাই রুদ্রনীলের অভিযোগ অবাস্তব এবং অসাড় বলে মন্তব্য করেন কুণাল। তুলনা টানতে অভিনেতা বাদশা মৈত্রর কথাও টেনে আনেন কুণাল। বলেন, “অন্য দল করলে কাজ পাওয়া যায় না, এই দাবি ভুল। বাদশা তো ঘোষিত ভাবে বামপন্থী! অত্যন্ত ভাল ছেলে, ভাল অভিনেতা। কাজ করছে তো! লকেট চট্টোপাধ্যায়ও যে দিন ইচ্ছে এসে কাজ করতে পারেন। উনি অন্য কাজে ব্যস্ত, তাই হয়ত করছেন না।” রুদ্রনীলের উদ্দেশে শ্লেষও দাগেন কুণাল। তাঁর কথায়, “বিজেপি এমনিতেই একটি নাট্যশালা। একটি কমেডি ধারাবাহিক। ওখানে অভিনয় করছেন তো রুদ্রনীল। তাহলে কাজ না পাওয়ার কথা আসছে কোত্থেকে!” কুণাল জানিয়েছেন, তৃণমূলে থাককালীন সরকারি কাজও করেন রুদ্রনীল। তার পর বিজেপি-তে গিয়ে বড় কথা বলতে শুরু করেন। এখন কিছু না পেয়ে যা নয় তা বলছেন।


আরও পড়ুন: Aliah University Update : গ্রেফতার আলিয়াকাণ্ডে অভিযুক্ত ছাত্রনেতা গিয়াসুদ্দিন মণ্ডল