কলকাতা: রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ (Russia-Ukraine War) আজ সপ্তম দিনে পড়ল। ইতিমধ্যেই এই যুদ্ধে অন্তত দুই ভারতীয়র (Indian) মৃত্যু হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে ভারতীয়দের দ্রুত দেশে ফেরানো নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারকে তীব্র আক্রমণ করলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। তিনি বলেছেন, ‘ইউক্রেন থেকে ছেলেমেয়েদের কেন আগে ফিরিয়ে আনা হল না? ফিরিয়ে আনা তো সরকারের কর্তব্য। বিমানে কেন ভাষণ দিচ্ছে? আমি যুদ্ধের পক্ষে নয়, শান্তির পক্ষে। একটা কোভিড যুদ্ধ হয়ে গেছে। আবার যুদ্ধ হলে মূল্য দিতে হবে। সমন্বয়ের অভাবে আমরা পিছিয়ে পড়েছি, ছাত্রছাত্রীরা এর মূল্য দিচ্ছে। সরকার আগে থেকে সব জানলে, কেন ছাত্রছাত্রীদের ফেরানো হল না? ৩ মাস আগেই ইউক্রেন থেকে ফেরানো উচিত ছিল। ভোট চলবে, কিন্তু রাজনীতির চেয়েও জীবনের মূল্য বেশি। ইউক্রেনে আটক বাঙালিদের নিয়ে কেন্দ্রকে তথ্য দেওয়া হয়েছে।’ 


আরও পড়ুন পুতিনকে মূল্য চোকাতেই হবে, হুঁশিয়ারি বাইডেনের


যাবতীয় হুঁশিয়ারি অগ্রাহ্য করে ইউক্রেনে ধ্বংসলীলা জারি রেখেছে রাশিয়া। রাজধানী কিভে টিভি টাওয়ারে রুশ হামলায় মৃত্যু হয়েছে পাঁচজনের। আহত আরও পাঁচজন। কিভের ১৪৯ কিলোমিটার দূরে জোরেমার শহরে রুশ বিমান হানায় ক্ষতিগ্রস্ত ১০টি বহুতল। গতকাল খারকিভে রুশ হামলায় মৃত্যু হয় এক ভারতীয় পড়ুয়ার। আজ আরও এক ভারতীয় পড়ুয়ার মৃত্যুর খবর পাওয়া গিয়েছে। 


এদিকে, রুশ হামলা রুখতে পথে নেমেছেন ইউক্রেনের সাধারণ মানুষ। নিপ্রো শহরের বাসিন্দারা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে যুদ্ধে নেমেছেন। সেনাবাহিনীর কাছে বেসিক কমব্যাট ট্রেনিং নিয়ে কেউ তুলে নিয়েছেন বন্দুক, কেউ বানাতে শিখেছেন মলোটভ ককটেল বোমা অথবা হাত পাকিয়েছেন গ্রেনেড ছোড়ায়। রাশিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধে যোগ দিতে পোল্যান্ড ছেড়ে দেশে ফিরছেন ইউক্রেনিয়রা। 
এই পরিস্থিতিতে রাশিয়ার আগ্রাসন ঠেকাতে বদ্ধপরিকর ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কি। ইউরোপীয় ইউনিয়নে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি দ্বিতীয়বার শান্তি বৈঠকে বসার আগে রাশিয়ার গোলাবর্ষণ থামানোর আর্জি জানিয়েছেন।


অন্যদিকে, ইউক্রেনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে বিশ্বজুড়ে কোণঠাসা রাশিয়া। মাইক্রোসফট, গুগলের পর এবার রাশিয়ায় যাবতীয় সামগ্রী সরবরাহ ও বিক্রি নিষিদ্ধ করল অ্যাপল, ফোর্ড ও নাইকি। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রেও জারি হয়েছে নিয়ন্ত্রণ। বন্ধ করা হল ইউরোপীয় সেন্ট্রাল ব্যাঙ্কের রাশিয়ার শাখা। রুশ ব্যাঙ্কে মাস্টার কার্ড ও ভিসা কার্ডের পরিষেবাও বন্ধ। ক্রীড়া ক্ষেত্রেও প্রতিরোধের মুখে পড়েছে রাশিয়া। বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স সংস্থা, বিশ্ব টেনিস সংস্থা ও আন্তর্জাতিক শ্যুটিং স্পোর্টস ফেডারেশনের তরফে রাশিয়া ও বেলারুশের জন্য জারি করা হয়েছে নিষেধাজ্ঞা।