দুর্গাপুর, মনোজ বন্দ্যোপাধ্যায় : ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে বিদেশে পাড়ি দিয়েছিল ঘরের মেয়ে। অনেক স্বপ্ন নিয়ে গিয়েছিল ইউক্রেন। কিন্তু, ভবিষ্যৎ-নিশ্চিত করতে গিয়ে পড়তে হয় দুই দেশের যুদ্ধের মাঝে। নেমে আসে সঙ্কট। এদিকে দেশে উৎকণ্ঠার প্রহর কাটতে থাকে পরিবারের। এবার অবশ্য কেটে গেল সেই উদ্বেগ। কারণ, ঘরে ফিরলেন দুর্গাপুরের বেনাচিতি বাজারের জিনাত আলম, স্টিল টাউনশিপের নেহা খান ও মায়াবাজারের বিপাশা সাউ।
অন্ডালের কাজি নজরুল ইসলাম বিমানবন্দরে এই তিন পড়ুয়ার পরিবারের সাথে ছিলেন দুর্গাপুর পশ্চিমের বিজেপি বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুই ও পাণ্ডবেশ্বরের তৃণমূল বিধায়ক নরেন্দ্র নাথ চক্রবর্তী । ঘরের মেয়েকে কাছে পেয়ে খুশি পড়ুয়ার পরিবারের সদস্যরা।
লক্ষ্মণ ঘোড়ুই জানান, দুর্গাপুর-বর্ধমানের সাংসদ সুরিন্দর সিংহ আলুওয়ালিয়ার পাশাপাশি তিনি নিজেও প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রককে আলাদা করে চিঠি দিয়েছিলেন এই পড়ুয়াদের দেশে ফেরানোর জন্য। দেশে ফিরতে পেরে খুশি ইউক্রেনে আটকে পড়া এই পড়ুয়ারা।
ইউক্রেনে পড়তে গিয়ে আটকে পড়েন অনেক ভারতীয় পড়ুয়াই। তাঁদের মধ্যে এই তিনজনও। এর মধ্যে নেহা ছিলেন ইউক্রেনের ইভানো শহরে। পড়াশোনার সূত্রেই সে দেশে পাড়ি। কিন্তু ভবিতব্যের গল্পগাঁথায় যে এমন নিকষ দিন দেখতে হবে তা স্বপ্নেও ভাবেননি। ইভানো ফ্রাঙ্কিভিস্ক ন্যাশানাল মেডিকেল কলেজ ইউনিভার্সিটি তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী তিনি। এই সময় চলছিল পরীক্ষাও। এরই মধ্যেই আরেক পরীক্ষা।
এদিকে, তাঁর পরিবারের লোকজনও চিন্তিত হয়ে পড়ে। যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে কেমন আছে মেয়ে, কবে ফিরবে তা নিয়ে চিন্তার শেষ ছিল না পরিবারে। নেহা এর আগে জানিয়েছিলেন, "আমার ফ্ল্যাট থেকে প্রায় ১২ কিলোমিটার দূরে ঘটনা ঘটছে। আমরা ফ্ল্যাটে বসে বোমা-মিসাইল বিস্ফোরণের শব্দ পাচ্ছি। পরিবারের লোকজন যাতে চিন্তিত না হয় তার জন্য ভিডিও কলে অনবরত কথা হচ্ছে। পরিস্থিতি বেগতিক হয়ে উঠলে ফ্ল্যাটের নিচে নালা দিয়ে একটি সুরঙ্গ দেখানো হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য সেখানে ঢুকে যেতে বলা হয়েছে। খুব আতঙ্কের মধ্যে আছি।"
একই রকম অভিজ্ঞতার সাক্ষী থাকতে হয় জিনাত ও বিপাশাদেরও। যদিও সেই আতঙ্কের প্রহর এখন কেটেছে।