কলকাতা : যুদ্ধে ছারখার অবস্থা ইউক্রেনের (Ukraine)। কঠিন সময়ের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে তাঁর দেশ। তাই কয়েক হাজার মাইল দূরে থাকলেও যেন নিজের জন্মভিটেতেই পড়ে রয়েছে বাঙালির ইউক্রেনিয়ান বউ ইরিনা দে-র মন। বিয়ে করে প্রায় ১২ বছর আগে নিজের দেশ ছেড়েছেন পশ্চিম ইউক্রেনের তার্নোপিল (Ternopil) শহরে জন্মানো ইরিনা। এখন বাংলাই তাঁর আবাসস্থল। থাকেন দমদমে। ডাক্তারি পড়তে ২০০৯-এ ইউক্রেন গিয়েছিলেন হাওড়ার আন্দুলের বাসিন্দা সৌরভ দে। সেখানেই পরের বছর ইরিনাকে বিয়ে করেন তিনি। শ্বশুরবাড়ি নিয়ে চিন্তায় শিশুরোগ বিশেষজ্ঞও।


এমন দিন যে কখনও আসবে তা স্বপ্নেও ভাবতে পারেননি ইরিনা। কী অবস্থায় ইউক্রেনে রয়েছে পরিবার, সেই চিন্তা কুরো কুরে খাচ্ছে তাঁকে। ইরিনা দে বলছিলেন, ২০২১ এ গেছিলাম, ভাবিনি এমন হবে, বাড়িতে বাবা-মা-ভাই আছে, ঠাকুমা আছে। গতকাল ভাইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারিনি নেটওয়ার্কের সমস্যায়। আজ সকালে কথা হয়েছে। ভাইয়ের কাছে বেশ কয়েকবার ফোন এসেছে যুদ্ধে যাওয়ার জন্য। আজ চিঠিও এসে গিয়েছে। চিন্তা হচ্ছে। সঙ্গে চিন্তায় রয়েছি বাবারও না ডাক আসে। 


যুদ্ধে দেশরক্ষার জন্য ১৮ থেকে ৬০ বছর বয়সী সব পুরুষকে যুদ্ধের জন্য ডাক পাঠাচ্ছে ইউক্রেনের সরকার। ইরিনার বাবার বয়স এখনও ষাট ছোঁয়েনি, তাই বাবাকে যদি যুদ্ধে যেতে বলা হয়, তা নিয়ে চিন্তায় ইরিনা। আশা রাখছেন বাবাকে হয়তো ডাকা হবে না, তবে তাঁর ভাইকে যে যুদ্ধে যেতেই হবে, এই খবর নিশ্চিত হওয়ার পর থেকেই মন মুচড়ে উঠছে ইরিনার। তাঁর শহর এই মুহূর্তে ঠিক কীরকম রয়েছে জানাতে গিয়ে ইরিনা বলেন, ভোরবেলা বোমার আওয়াজ শুনতে পেয়েছে বাড়ির লোক।


তবে শুধু ইউক্রেন নয়, আক্রমণকারী রাশিয়ানদের নিয়েও সমান চিন্তায় ইরিনা। তাই তাঁর আকুতি, অবিলম্বে থামুক এই রক্তক্ষয়ী লড়াই। ইরিনা বলেছেন, 'আমি প্রার্থনা করছি এটা যেন থামে, রাশিয়ানদেরও একই অবস্থা, সবার জন্য প্রার্থনা করব, মা-বাবাকে অন্য জায়গায় যাওয়ার কথা বলেছি।' শ্বশুরবাড়িকে নিয়ে চিন্তায় রয়েছেন ইরিনার স্বামী তথা শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ সৌরভ দেও।






আরও পড়ুন- যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেনে আটকে বঙ্গের বহু ডাক্তারি পড়ুয়া, উৎকণ্ঠায় দিন কাটছে অভিভাবকদের