বাচ্চু দাস, শিলিগুড়ি (দার্জিলিং): যুদ্ধবিধ্বস্ত ইউক্রেন। বিদেশে ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখে পড়ে অসহায় ভারতীয় পড়ুয়ারা । প্রাণ বাঁচিয়ে দেশে ফিরতে তাঁদের অনেককেই চূড়ান্ত দুর্ভোগের শিকার হতে হয়েছে এবং হচ্ছে। এরইমধ্যে প্রতিকূল পরিস্থিতিতে পায়ে হেঁটে দুর্গম পথ পাড়ি দিয়ে পোল্যান্ড সীমান্তে পৌঁছে কোনওক্রমে দেশে ফেরার বিমান (Return From Ukraine) ধরতে পারেন দার্জিলিংয়ের দুই পড়ুয়া (Darjeeling Student)।
গোলাগুলির মাঝেই মাইনাস ৫ ডিগ্রি তাপমাত্রায় কখনও জঙ্গল, কখনও গ্রামের রাস্তা ধরে ৪৫ কিলোমিটার হেঁটে ওঁরা পৌঁছেছিলেন পোল্যান্ড সীমান্তে। সেখান থেকে দেশে ফেরার বিমান ধরেন লাভিভ মেডিক্যাল মিশন ইউনিভার্সিটির দুই পড়ুয়া দ্বিতীয় বর্ষের ক্যালসেইন ক্যালসো ভুটিয়া ও তৃতীয় বর্ষের অলক মিশ্র। দু’জনেই দার্জিলিঙের বাসিন্দা। এদিন তাঁরা বাগডোগরা বিমানবন্দরে নামেন। ইউক্রেন-ফেরত দুই পড়ুয়ারই ভয়াবহ অভিজ্ঞতা।
তাঁরা জানিয়েছেন, তাঁদের এই এক সপ্তাহের যাত্রার অভিজ্ঞতা অত্যন্ত কঠিন ছিল। কোনও যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল না। প্রচণ্ড ঠাণ্ডায় কখনও জঙ্গল পেরিয়ে, কখনও গ্রামের রাস্তা ধরে তাঁরা অবিরাম হেঁটে গিয়েছেন। লক্ষ্য ছিল পোল্যান্ড সীমান্ত। অবশেষে গন্তব্যে পৌঁছন তাঁরা। সেখানে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগের পর দেশে ফেরার বিমানে ওঠেন তাঁরা। দেশে ফেরার জন্য তাঁরা যখন চূড়ান্ত দুর্ভোগের মধ্যে ছিলেন, তখন উৎকণ্ঠায় ছিল পরিবার। অবশেষে দেশে ফিরে আসতে পেরে স্বস্তিতে সবাই।
এমনই ভয়ঙ্কর অবস্থা হয়েছে আরও অনেকেই। ইউক্রেনে আটক ভারতীয়দের দেশে ফেরাতে চলছে অপারেশন গঙ্গা। দেশে ফিরে অনেকেই জানিয়েছেন, তাঁদের অসহনীয় অভিজ্ঞতার কথা। তাঁরা বলছেন, দেশে ফিরতে পেরে তাঁদের খুশির শেষ নেই। দেশে ফিরে নিরাপদ বোধ করছেন তাঁরা। ওই পড়ুয়ারা জানিয়েছেন, ইউক্রেনের পরিস্থিতি অত্যন্ত ভয়াবহ। এরপরও সেখানকার লোকজন তাঁদের সাহায্য করেছেন বলে কেউ কেউ জানিয়েছেন। তাঁরা বলেছেন, ইউক্রেন পেরিয়ে বর্ডার পয়েন্টে আসাটা ছিল দারুণ চ্যালেঞ্জিং। তারপর ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করার পর পেয়েছেন আশ্রয়, খাওয়া-দাওয়া। শেষপর্যন্ত বিমানে করে দেশে ফিরতে পেরেছেন।