সৌভিক মজুমদার, কলকাতা: গরুপাচার মামলায় আদালতে ধাক্কা ইডির (ED)। সায়গল হোসেনকে (Saigal Hossain) নিজেদের হেফাজতে পেল না ইডি। ট্রানজিট রিমান্ডে দিল্লি (Delhi) নিয়ে যাওয়ার আবেদন খারিজ কলকাতা হাইকোর্টে। প্রসঙ্গত,  নিম্ন আদালতের রায়কেই বহাল রাখলেন বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ।

  


যদিও আদালতে ইডির তরফে বলা হয়, সায়গল হোসেনের মায়ের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টেও ৪৬ লক্ষ টাকা জমা রাখা হয়েছিল। সায়গল হোসেন নিজেই এই টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছিলেন। এরপর বিচারপতি তীর্থঙ্কর ঘোষ প্রশ্ন করেন, ‘কেন দিল্লি নিয়ে যেতে চাইছেন ? কলকাতা নয় কেন ? আমেরিকায় আপনাদের ব্রাঞ্চ থাকলে সেখানে নিয়ে যাবেন ? অভিযোগ কোথায় দায়ের হয়েছে ?' 


সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া নিয়ে আদালতের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়ে ইডি। সায়গল হোসেনকে দিল্লি নিয়ে যাওয়া নিয়ে ইডির আবেদন খারিজ করে দেয় আদালত। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতির মন্তব্য, ‘কলকাতা আদালত কি পোস্ট অফিস ? এখানে কলকাতা কোর্ট কি করবে ? আবেদন খারিজ হওয়ার পর কি চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে ?’ পাশাপাশি সিবিআইয়ের কাছে লিখিত উত্তর চাইল কলকাতা হাইকোর্ট। বলা হয়, ‘ইডিকে হস্তান্তর করলে সিবিআইয়ের কি কোনও অসুবিধা আছে ?’


আরও পড়ুন, অসুররূপে মানিক সাজলেন চাকরিপ্রার্থীরা, আদালত চত্বরে জুতো দেখানো হল পর্ষদের প্রাক্তন সভাপতিকে


আদালতকে সিবিআইয়ের তরফে বলা হয়,  ‘সায়গল হোসেনকে ইডির হাতে তুলে দিতে কোনও সমস্যা নেই।' এদিকে, আদালতে জানাল ইডি জানিয়েছে যে, সায়গল হোসেনের নিরাপত্তা আমরা সুনিশ্চিত করব। ১০০ জন সিআরপিএফ জওয়ান তার নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করবে। আসানসোল থেকে কলকাতা নিয়ে এসে পরবর্তী বিমানে দিল্লি নিয়ে যাওয়া হবে’।   


প্রসঙ্গ সায়গল


গরু পাচার মামলায় অনুব্রত মণ্ডল ও তাঁর দেহরক্ষী সায়গল হোসেনকে আগেই গ্রেফতার করা হয়েছে। সিবিআই সূত্রে দাবি, তদন্তে নেমে, অনুব্রত মণ্ডলের বিপুল সম্পত্তির হদিশ মিলেছে। অনুব্রত মণ্ডলের দেহরক্ষী সায়গল হোসেনের ফ্ল্যাট, বাড়ি, জমি মিলিয়ে যে পরিমাণ সম্পত্তির হদিশ মিলেছে, তা একজন রাজ্য পুলিশের কনস্টেবলের আয়ের সঙ্গে মোটেই সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। যার প্রেক্ষিতে বিভিন্ন মহলে প্রশ্ন উঠেছে, এই সম্পত্তি কি সায়গলের ? নাকি তাঁর নামে অন্য কেউ সম্পত্তি কিনেছে ? এই বিপুল টাকার উৎস কী ? এবার তা নিয়ে সক্রিয় আরেক কেন্দ্রীয় এজেন্সি এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এর আগে জেলে গিয়ে সায়গল হোসেনকে জেরা করে ED। আসালসোলের বিশেষ সিবিআই আদালত সেই অনুমতি দেয়। 


১৫ সেপ্টেম্বর CBI’এর রিমান্ড লেটারে দাবি করা হয়, অনুব্রতর দেহরক্ষীর মাধ্যমেই গরু পাচারের টাকা বিভিন্ন ব্যক্তির কাছে গেছে এবং বেনামি সম্পত্তি কেনা হয়েছে। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সূত্রে দাবি, সায়গলকে গিয়ে জেরা করে তাঁর সম্পত্তি, টাকার উত্‍স ও বেআইনি লেনদেন সম্পর্কে জানার চেষ্টা করবে ED।