পার্থপ্রতিম ঘোষ, মনোজ বন্দ্য়োপাধ্য়ায়, কলকাতা: দিল্লি (Delhi) থেকে চুরি যাওয়া গাড়ি ব্যবহার করে খুন শক্তিগড়ে (Saktigarh)। পাটুলির বাসিন্দার বিক্রি করা গাড়ির নম্বর ব্যবহার করা হয় দিল্লি থেকে চুরি যাওয়া গাড়িতে। শক্তিগড়ে কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা খুনে আরও ঘনীভূত রহস্য। দ্বিতীয়বার ফরেন্সিক পরীক্ষার পর উদ্ধার হয় আততায়ীদের ব্যালেনো গাড়ির আসল ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পেরেছে, গাড়ির আসল মালিক হরিয়ানা গুরগাঁওয়ের বাসিন্দা। গত জানুয়ারি মাসে, ওই ব্যক্তি, থানায় অভিযোগ করেন দিল্লি জনকপুরী থেকে তাঁর গাড়িটি চুরি হয়ে যায়। 


কীভাবে খুনের ছক?  হরিয়ানার গুরগাঁওয়ের বাসিন্দার দিল্লির জনকপুরী থেকে চুরি যাওয়া গাড়ি তাতে লাগানো হয়েছিল কলকাতার পাটুলির বাসিন্দার বিক্রি করে দেওয়া গাড়ির নম্বর। সেই গাড়িতে করে এসেই পূর্ব বর্ধমানের শক্তিগড়ে খুন! এ যেন রহস্য়ের চতুর্ভূজ!৪দিন পার, শক্তিগড়ে কয়লা মাফিয়া খুনে জাল গোটানো তো দুরঅস্থ, রহস্য়ের জাল এবার ছড়াল ভিন্নরাজ্য়েও! পুলিশ সূত্রে দাবি, দিল্লি থেকে চুরি যাওয়া গাড়িতেই খুন হন কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা। 


এবিপি আনন্দের হাতে এক্সক্লুসিভ সিসিটিভি ফুটেজ: এর মধ্য়েই এবিপি আনন্দের হাতে এসেছে এই এক্সক্লুসিভ সিসিটিভি ফুটেজ। যেখানে দেখা যাচ্ছে, শনিবার, সন্ধে ৬টা ২০ নাগাদ রাজু ঝা-র গাড়ি পানাগড় টোলপ্লাজা পেরনোর পর এই নীল ব্যালেনো গাড়িও টোলপ্লাজা পেরোয়। এরপর, প্রথমে রাজু-লতিফদের গাড়িটি ছাড়িয়ে চলে যায় আততায়ীদের গাড়ি। ইউটার্ন নিয়ে ফের ফিরে আসে রাজুদের ফরচুনারের সামনে। তারপর, মাত্র ২৫ সেকেন্ডের অপারেশন! ভরসন্ধেয়, ভরা বাজারে খুন হয়ে যান কয়লা মাফিয়া রাজু ঝা। আততায়ীদের নীল ব্য়ালেনো গাড়ির পালিয়ে যাওয়ার দৃশ্য ভাইরাল হয়। এর পর, শক্তিগড় থানার অদূরে গাড়ি ফেলে পালিয়ে যায় আততায়ীরা। সেখান থেকেই উদ্ধার এই WB 06P3454- নম্বর প্লেটওয়ালা নীল ব্য়ালেনো গাড়ি। 


পুলিশ সূত্রে খবর, সেখান থেকেই পাওয়া যায়, ২টি ৭ এমএম পিস্তল ও ১২ রাউন্ড গুলি। এরপর জানা যায়, এই নীল ব্যালেনো গাড়ির নম্বর রেজিস্ট্রেশন হয়েছিল কলকাতার পাটুলির এক বাসিন্দার নামে। মঙ্গলবার দ্বিতীয়বার ফরেন্সিক পরীক্ষার পর উদ্ধার হয় আততায়ীদের ব্যালেনো গাড়ির আসল ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর। পুলিশ সূত্রে খবর, গাড়ির নম্বর ৪০ শতাংশ বিকৃত করা হয়েছিল। ফাইলার দিয়ে ঘষার পাশাপাশি, ছেনির ব্যবহার করা হয়েছিল বলেও পুলিশ সূত্রে খবর। 


মঙ্গলবার রাসায়নিক ও অত্য়াধুনিক যন্ত্র দিয়ে গাড়ির আসল ইঞ্জিন ও চেসিস নম্বর উদ্ধার হয়। এরপর শুরু হয় ব্যাক ক্যালকুলেশন! খোঁজ শুরু হয় প্রথম মালিকের। সেই সূত্র ধরে পুলিশ জানতে পেরেছে, গাড়ির আসল মালিক হরিয়ানার গুরগাঁওয়ের বাসিন্দা। গত জানুয়ারি মাসে, ওই ব্যক্তি, দিল্লি জনকপুরী থেকে তাঁর গাড়িটি চুরি গেছে বলে অভিযোগ করেন।গ্রাফিক্স আউট-
সেই ঘটনার তদন্তে নামে দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জানুয়ারিতে দিল্লিতে চুরি যাওয়া গাড়ি শক্তিগড়ে এল কীভাবে? তবে কি বেশ কয়েকমাস ধরে চলছিল খুনের প্ল্যানিং। 
সবমিলিয়ে, আরও ঘণীভূত রহস্য।