কলকাতা: না, কোনও রাজনৈতিক ইস্যু নয়। নাই বা ভোট পরবর্তী হিংসা (Post Poll Violence)। তবুও গত কয়েকদিনে যে যে মর্মান্তিক ঘটনার সাক্ষী হয়েছে বাংলা, তারপর রীতিমত 'সুরক্ষা' নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। প্রতিটা প্রেক্ষাপটই আলাদা। কিন্তু প্রায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কখনও ছেলেধরা, কখনও চোর 'সন্দেহে' গণপিটুনিতে মৃত্যুর ঘটনা উঠে আসছে। গত কয়েকদিনে বারাসাত, বউবাজার এবং আজ ফের মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল মহানগরে। এবারেও সেই 'সন্দেহের' বশবর্তী নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়ার অভিযোগ। মোবাইল চুরির সন্দেহে পিটিয়ে এবার 'খুন' সল্টলেকে !


সল্টলেক ইলেকট্রনিক্স কমপ্লেক্স থানা এলাকার পোলেরনাইটে, মোবাইল চুরির সন্দেহে পিটিয়ে এবার খুনের অভিযোগ উঠেছে। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।মোবাইল চুরির অভিযোগে মারধরে মৃত্যুর অভিযোগ। জানা গিয়েছে, মৃত যুবকের নাম প্রসেন মণ্ডল। পিটিয়ে খুনের অভিযোগে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।


বারাসাত,অশোকনগর ও মোহনপুর। উত্তর ২৪ পরগনা জেলা জুড়ে পুলিশের তরফে প্রচারের মধ্য়েই উত্তর ২৪ পরগনায়  গুজবকে কেন্দ্র করে গণপিটুনির অভিযোগ উঠেছিল।  অশোকনগর থানার ভুরকুণ্ডা গ্রাম পঞ্চায়েতের পুংলিয়া গ্রামে সাইকেলে ঘুরছিল এক মানসিক ভারসাম্য়হীন তরুণী। পুলিশ সূত্রে খবর, ছেলে ধরা সন্দেহে তাঁকে মারধর করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। ওই তরুণীকে উদ্ধার করতে গিয়ে আহত হন অশোকনগর থানার ৩ পুলিশ কর্মী। ঘটনায় ৫ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। 


অন্য়দিকে, ব্য়ারাকপুর কমিশনারেটের মোহনপুরের কাঁঠালিয়া পাড়ায় মেলায় এক যুবক এক মহিলার গলা টিপে ধরে কোলের শিশুকে চুরি করার চেষ্টা করেছিল বলে অভিযোগ। অভিযুক্ত যুবক নাসির হোসেনকে গণপিটুনি দেন স্থানীয়রা। তাঁকে উদ্ধার করে এনেছিল পুলিশ। ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। মেলায় আসায় ওই যুবক কোনও কারণে মহিলার হাত ধরেছিলেন তাই তাঁকে মারধর করা হয় বলে জানিয়েছিল পুলিশ। আহত যুবককে প্রথমে বারাসাতের বিএন বসু মহকুমা হাসপাতাল ও পরে সাগর দত্ত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল।


আরও পড়ুন, সার কারখানায় লোক নিয়োগ নিয়ে প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব, উত্তেজনা পানাগড়ে


অপরদিকে গতকাল মোবাইল চোর সন্দেহে খাস কলকাতায় গণপ্রহারে মৃত্যু হয় এক যুবকের। বউবাজারে ছাত্রাবাসের মধ্যে ৩৭ বছরের ইরশাদ আলমকে  পিটিয়ে খুনের অভিযোগ। বেলগাছিয়ার জে কে ঘোষ রোডের বাসিন্দা ইরশাদ। কাজ করতেন চাঁদনি চকের একটি টেলিভিশন সারাইয়ের দোকানে।গত  শুক্রবার সকালে বউবাজারের নির্মলচন্দ্র স্ট্রিটের ফুটপাথ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন তিনি। এই রাস্তাতেই রয়েছে উদয়ন হস্টেল। অভিযোগ, সেই সময়ই তাঁকে টেনে-হিঁচড়ে হস্টেলের ভিতরে নিয়ে যায় আবাসিকরা। হস্টেলের গেট বন্ধ করে, ভিতরের রুমে নিয়ে গিয়ে বেধড়ক মারধর করা হয় ইরশাদ আলমকে। পুলিশ পৌঁছনোর পরও হস্টেলের তালাই খোলেনি আবাসিকরা। প্রায় আধঘণ্টা পর খোলা হয় তালা। মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে যাওয়ার কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যু হয় গুরুতর জখম ইরশাদের। 


আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।