ব্রতদীপ ভট্টাচার্য, কলকাতা: লোন নেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট (Bank Fraud) থেকে গায়েব হয়েছিল লোনের ২০ লক্ষ টাকা! সাইবার প্রতারণার (Cyber Crime) অভিযোগ জানিয়েও মেলেনি সুরাহা। উল্টে ৬ বছর ধরে লোনের পুরো অঙ্কের ওপর সুদ নিয়ে গিয়েছে সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক। শেষ পর্যন্ত তথ্যপ্রযুক্তি দফতরের সাইবার ফোরামে (Cyber Forum) মামলা ঠুকে বিচার পেলেন সল্টলেকের ব্যবসায়ী (Saltlake Businessman)। 


সল্টলেকের (Saltlake) বাসিন্দা হরিশ চোপড়া। একটি কাগজ তৈরি সংস্থার কর্ণধার। ৬ বছরের আইনি লড়াইয়ে শেষ পর্যন্ত বিচার পেলেন তিনি। তাঁর দাবি, ২০১৫ সালের ডিসেম্বরে ব্যবসার জন্য একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে মোটা অঙ্কের ক্যাশ ক্রেডিট লোন নিয়েছিলেন। 


অভিযোগ, লোন নেওয়ার ২০ দিনের মধ্যে তাঁর ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে ২০ লক্ষ টাকা গায়েব হয়ে যায়। অথচ তাঁর কাছে কোনও ওটিপি আসেনি! বিধাননগর সাইবার ক্রাইম থানা ও সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্কে সাইবার প্রতারণার অভিযোগ জানান ব্যবসায়ী।  


তাঁর দাবি, অভিযোগ ব্যাঙ্কের তরফে কোনও সহায়তা তো মেলেইনি। উল্টে লোনের পুরো অঙ্কের ওপর প্রায় ৬ বছর ধরে সুদ নিয়ে গিয়েছে তারা। আর আসামিকে পাওয়া যাচ্ছে না, এই যুক্তি দেখিয়ে ২ বছরের মাথায় পুলিশি তদন্ত বন্ধ করে দেওয়া হয়। 


অভিযোগকারী ব্যবসায়ী হরিশ চোপড়া জানিয়েছেন, ব্যাঙ্ক আমাকে বলেছিল নেট ব্যাঙ্কিং চালু করতে। আমার কাছে ওটিপি এল না। অথচ টাকা কেটে নিল। তার মানে অন্যের অ্যাকউন্টে টাকা গিয়েছে। ব্যাঙ্ক দায়ই নিতে চায়নি। উল্টে টাকা নিয়ে গেল।


শেষ পর্যন্ত তথ্য-প্রযুক্তি দফতরের সাইবার অ্যাডজুডিকেশন ফোরামে মামলা দায়ের করেন ব্যবসায়ী। মঙ্গলবার সাইবার অ্যাডজুডিকেশন ফোরাম সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ককে নির্দেশ দিয়েছে। ব্যবসায়ীকে দেওয়া ২০ লক্ষ টাকা লোনই মকুব করতে হবে। ৬ বছরে সুদ বাবদ নেওয়া ৭ লক্ষ টাকার পুরোটাই ফেরত দিতে হবে। সেই সঙ্গে দিতে হবে ৪০ হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ। 


সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়ের কথায়, ফোরাম পরিষ্টার জানিয়ে দিয়েছে টাকা ফেরত দিতে হবে। ওটিপি উনার কাছে যায়নি। আরবিআই এর গাইডলাইনেই বলা আছে গ্রাহক প্রতারিত হলে দায়ভার নেবে ব্যাঙ্ক। সাইবার আইন বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায় আরও বলেন, এই মামলা করতে গেলে কোনও আইনজীবী লাগে না। শুধুমাত্র ফর্ম ফিলাপ করে জানালেই হল। ব্যাঙ্ক কত তাড়াতাড়ি ব্যবসায়ীকে টাকা ফেরত দেয়, এখন সেটাই দেখার।