নয়াদিল্লি: ১৯৪৩ সালের ২৯ ডিসেম্বর আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী পোর্ট ব্লেয়ারে অবতরণ করেছিল নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসুর বিমান। তিনি সেখানে প্রথমবার ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। সেই ঘটনার ৭৮ বছর পর নেতাজির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে পোর্ট ব্লেয়ার বিমানবন্দরে বিশেষ ‘সংকল্প স্মারক’ উদ্বোধন করা হল। ১৯৪৩ সালে নেতাজিকে নিয়ে আসা বিমান যে রানওয়েতে অবতরণ করেছিল, তার পাশেই স্মারকটি স্থাপন করা হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজির অবদানের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর জন্যই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।


ভারতীয় সেনাবাহিনীর আন্দামান ও নিকোবর কম্যান্ডের কমান্ডার-ইন-চিফ লেফটেন্যান্ট জেনারেল অজয় কুমার আজ এই স্মারক উদ্বোধন করেন। স্মারকটির তিনটি অংশ, তার মধ্যে মাঝখানে নেতাজির একটি ছোট মূর্তি আছে। তার নিচে লেখা, ‘নিষ্ঠা, কর্তব্য ও বলিদান’।


স্মারকটি উদ্বোধন করার পর লেফটেন্যান্ট জেনারেল অজয় কুমার স্বাধীনতা সংগ্রামে নেতাজি ও তাঁর আজাদ হিন্দ বাহিনীর বিশেষ অবদানের কথা উল্লেখ করেন। তিনি নেতাজি ও আজাদ হিন্দ বাহিনীর সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন।


দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন জাপানের সেনাবাহিনী ব্রিটিশদের কাছ থেকে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ছিনিয়ে নেয় এবং এই অঞ্চলটি নেতাজির হাতে তুলে দেয়। নেতাজি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে ব্রিটিশ শাসনমুক্ত বলে ঘোষণা করেন। ফলে ১৯৪৭ সালের ১৫ অগাস্ট ভারত স্বাধীনতা পাওয়ার অনেক আগেই আন্দামান ও নিকোবর স্বাধীন হয়ে যায়। পোর্ট ব্লেয়ারে পৌঁছে প্রথমে রস আইল্যান্ডে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন নেতাজি। তিনি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপের নতুন নামকরণ করেন। আন্দামানের নাম দেন ‘শহিদ’ এবং নিকোবরের নাম দেন ‘স্বরাজ’। সেলুলার জেলে গিয়ে সেখানে বন্দি থাকা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সঙ্গে দেখাও করেন নেতাজি।


নেতাজি আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে স্বাধীন করলেও, এই স্বাধীনতা অবশ্য বেশিদিন ধরে রাখা যায়নি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জাপানের পরাজয়ের পর ব্রিটিশরা ফের এই দ্বীপপুঞ্জ দখল করে নেয়। ১৯৪৭ সালে ভারত স্বাধীন হওয়ার পর অবশ্য আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ফের স্বাধীন হয়ে যায়। এখন রস আইল্যান্ডের নামকরণ করা হয়েছে ‘নেতাজি আইল্যান্ড’।