ছাব্বিশের বিধানসভা ভোটের আগে, রাজ্য বিজেপির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব নিয়ে তৃণমূলকে বিসর্জনের ডাক দিয়েছেন শমীক ভট্টাচার্য। সেই সঙ্গে বার্তা দিয়েছেন, বিজেপির লড়াই সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে নয়। শমীক ভট্টাচার্যর হাত ধরে রাজ্য় বিজেপি কি জয়ের রাস্তা খুঁজে পাবে? শিয়রে বিধানসভা নির্বাচন। হাল আমলে সব নির্বাচন, উপনির্বাচনে জয়ের মুকুট উঠেছে তৃণমূলের মাথাতেই। এই টুকু সময়ে কি দলের ঘর গুছিয়ে ভোটের ময়দানে ছক্কা হাঁকাতে পারবে শমীকের নেতৃত্বাধীন বিজেপি। প্রশ্ন অনেক। একেএকে সব প্রশ্নের উত্তর দিলেন বিজেপির নতুন রাজ্যসভাপতি। কথা বললেন, এবিপি আনন্দ-র সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট (নিউজ অ্য়ান্ড প্রোগ্রামিং) সুমন দে । সেই সঙ্গে এমন অনেক প্রশ্নের উত্তর দিলেন যা রাজ্য বিজেপির নতুন কাণ্ডারীর কাছ থেকে শুনতে চায় দর্শক।
প্রশ্ন : অটলবিহারী বাজপেয়ী না নরেন্দ্র মোদি?উত্তর : দুজনেই প্রশ্ন : লৌহপুরুষ কে? লালকৃষ্ণ আডবাণী না অমিত শাহ? উত্তর : লালকৃষ্ণ আডবাণী, দ্য টলেস্ট পিলার অফ দ্য বিগেস্ট ডেমোক্রেসি। দুজনের কোনও তুলনা হয় না। লালকৃষ্ণ আডবাণীর মাপের, উচ্চতার নেতা দেশে খুব কম জন্ম নিয়েছেন। এবং অমিত শাহও সেটা বিশ্বাস করেন। তাঁর পথ থেকে শিক্ষা নিয়েছেন অমিত শাহও।
প্রশ্ন : জয় শ্রীরাম, না জয় মা কালী?উত্তর : স্লোগান একটাই । ২০২৬ এর নির্বাচন, তৃণমূলের বিসর্জন।
প্রশ্ন : তপন শিকদার না দিলীপ ঘোষ?উত্তর : তপন শিকদার ও দিলীপ ঘোষ দুজনকেই সঙ্গে নিয়ে, একজনের স্মৃতি ও একজনের উপস্থিতিকে সঙ্গে নিয়েই, বিজেপি তৃণমূলকে সরিয়ে দেবে।
প্রশ্ন : তুলনামূলকভাবে ভালো কোনটা বাম জমানা না তৃণমূল জমানা?উত্তর : উত্তর দেওয়াটা কঠিন নয়, ঠিক নয়। বাম আমলে, কর্মীরা, যাঁদের বাড়ি সিপিএম পুড়িয়ে দিয়েছিল বা খুন করেছিল, যাদের শরীরে সিপিএমের বোমার স্প্লিন্টারে দাগ আছে, আমার মতো, সিপিএমের ভালবাসার বা অনুরাগের ছোঁয়া আছে, তৃণমূলের অত্যাচার সেটা ভুলিয়ে দিয়েছে। ফলে এরা দুজনেই সমান্তরাল ভাবে পশ্চিমবঙ্গকে ধ্বংস করার কাজেই লিপ্ত ছিল। একজন কবি তো বলে দিয়েছেন, কবির উপরে আর কী কথা থাকতে পারে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ইজ দ্য মাদার অফ দ্য নিও কমিউনিজম। সেখানে তো আমরা মতামতগত ভাবে কমিউনিজমের বিরোধী, সম্পূর্ণ বিরোধী।
প্রশ্ন : মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে কে এগিয়ে? মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় না বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য?উত্তর : আমি ব্যক্তিগত ভাবে যেটা বিশ্বাস করি, রাজনীতিতে রাজনৈতিক আঙ্গিক কিংবা রাজনৈতিক প্রেক্ষিতটাই আলাদা। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর খুব একটা বেশি ভূমিকা থাকে না। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আমি একজন বিরোধী দলনেত্রী হিসেবে ...
প্রশ্ন : বিরোধী নেতা হিসেবে কে এগিয়ে? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় না শুভেন্দু অধিকারী?উত্তর : এই মুহূর্তে শুভেন্দু অধিকারী। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে কঠিন অবস্থা ফেস করেননি , তা শুভেন্দু অধিকারী করেছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিঃসন্দেহে ... তাঁর রক্ত ঝরেছে ...তিনি অনেক বেশি পরিশ্রম করেছেন, এটা যদি অস্বীকার করি ...দুটি রাজনৈতিক প্রেক্ষিত ভিন্ন, সময়টা ভিন্ন। এবং যে রাজনৈতিক দল ক্ষমতায় ছিল, সেই রাজনৈতিক দল রাজনীতিটাকে কী দৃষ্টিতে দেখছেন, সেটাও ভিন্ন। একটা রাজ্যের বিরোধী দলনেতা, যাঁর অবস্থান রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর ঠিক পরে, তাঁকে একটা সভা করতে গেলে, হাইকোর্ট ছুটতে হচ্ছে। গণতন্ত্রে এই অবস্থা কাঙ্খিত নয়। এটা বলতে পারো একটা বড় চ্যালেঞ্জ, আমি উত্তর দিতে পারছি না, আমি যেখানেই যাচ্ছি ...মানুষ জিগ্যেস করছে আমাকে, যেখানে সংবিধানের চারটে স্তম্ভই আক্রান্ত, রক্তাক্ত, ক্ষতবিক্ষত, টোটাল ব্রেকডাউন অফ কনস্টিটিউশনাল মেশিনারি, তারপরও এই সরকারটা কী করে আছে, এর উত্তর আমার জানা নেই। আমরা বলছি, আমরা আমাদের নীতিগত অবস্থান থেকে, দল ৩৫৬ ধারা প্রয়োগের বিরুদ্ধে, কংগ্রেসের ডিএনএ আমাদের নয়। আমরা চাই, কাউকে আমরা শহিদ হতে দেব না।
প্রশ্ন : শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায় না দীনদয়াল উপাধ্যায়?উত্তর : শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায়ের ব্যক্তিত্ব, জনপ্রিয়তা, তাঁর রাজনৈতিক সচেতনতা, বোধশক্তি এমন যে তিনি সংখ্যায় কম হয়েও বিরোধী দলনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পেরেছেন। দীনদয়াল উপাধ্যায় এ দল তৈরি করার কারিগর। তাঁর পাণ্ডিত্য, তাঁর সাংগঠনিক শক্তির যে মিশ্রণ , তা অতুলনীয়। শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্য়ায় বলেইছিলেন, আমি যদি ৫ টা দীনদয়াল পেতাম, তাহলে কোনও আইএএস অফিসার ছাড়াই দেশ চালিয়ে দিতে পারি।
সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার শুনতে নিচের লিঙ্কে ক্লিক করুন