সমীরণ পাল, উত্তর ২৪ পরগনা: ভুয়ো সংস্থা খুলে, শেখ শাহজাহানকে (Sheikh Shahjahan) কালো টাকা সাদা করতে সাহায্য় করেছিলেন কারা? ইডি সূত্রে দাবি, তদন্তে উঠে এসেছে পাঁচজনের নাম। সোমবার শেখ শাহজাহান, আলমগীর মোল্লা, দিদার বক্স মোল্লাদের আদালতে (Court) পেশ করা হয়। তাঁদের আইনজীবীরা জামিনের আর্জি জানালেও, আদালত সেই আর্জি খারিজ করে দেয়।
সন্দেশখালির তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানের ভেড়ির মাধ্য়মে, কোটি কোটি কালো টাকা সাদা হয়েছিল বলে ইডি সূত্রে আগেই দাবি করা হয়। এবার ভেড়ির পাশাপাশি সামনে এল ভুয়ো সংস্থার তথ্য়। সোমবার শেখ শাহজাহানদের আদালতে পেশ করা হয়। তাঁদের আইনজীবীদের হাতে দেওয়া হয় চার্জশিটের কপি। সূত্রের দাবি,তদন্তে ৫ জনের নাম উঠে এসেছে। তাঁরা হলেন, জর্জ কুট্টি, রাবেয়া বিবি মোল্লা, প্রতাপ বিশ্বাস, সিরাজ এবং জয়া সাউ। ইডি সূত্রে দাবি, এই পাঁচজন ভুয়ো সংস্থা খুলে শেখ শাহজাহানকে কালো টাকা সাদা করতে সাহায্য় করেন।
ইডি সূত্রে দাবি, ২০১৮ থেকে ২০২৩ সালের মধ্য়ে শেখ শাহজাহানের একটি সংস্থার মুনাফা হয় ৪ কোটি ৪৮ লক্ষ টাকা। ওই সংস্থার প্রায় ১৯৮ কোটি ৫২ লক্ষ টাকা রফতানি হয় বলেও ইডি সূত্রে দাবি। গ্রেফতার হওয়া তৃণমূল নেতা শিবপ্রসাদ হাজরার সম্পর্কেও ইডি সূত্রে চাঞ্চল্য়কর দাবি করা হয়েছে। সোমবার আদালতে, শেখ শাহজাহানকে ইডি-র হেফাজতে নেওয়ার পদ্ধতি নিয়ে, প্রশ্ন তোলেন তাঁর আইনজীবী। সন্দেশখালিকাণ্ডে এই ধৃতদের ২৩ তারিখ ফের আদালতে পেশ করা হবে।
গত ৫ জানুয়ারি, রেশন দুর্নীতির তদন্তে, সন্দেশখালির সরবেড়িয়ায় শেখ শাহজাহানের বাড়িতে গিয়ে রক্তাক্ত হতে হয় ED-র আধিকারিকদের। ভাঙচুর করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর গাড়ি। কার্যত তাড়া করে মারতে মারতে, এলাকা ছাড়া করা হয় কেন্দ্রীয় বাহিনীর সশস্ত্র জওয়ানদের। কোনওরকমে প্রাণ হাতে করে বেঁচে ফেরেন ইডির আধিকারিকরা। এরপর, ৫৫ দিন অন্তরালে থাকার পর, শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করে রাজ্য় পুলিশ।
চার্জশিটের ছত্রে ছত্রে রয়েছে একাধিক চাঞ্চল্য়কর তথ্য়। নকল ঠিকাদার দিয়ে সরকারি টাকা লুঠ থেকে, ঠিকাদার নয়, এমন ব্যক্তিকে ঠিকাদারের সাজিয়ে সরকারি কাজের বরাত আদায়। ইটভাটার মাধ্যমে কোটি কোটি কালো টাকা সাদা করা থেকে গরিব মানুষের জমি দখল। একের পর এক চাঞ্চল্য়কর দাবি করা হয় ED-র চার্জশিটে।
আরও পড়ুন, আদালতের অনুমতি ছাড়া হিরণকে গ্রেফতার করা যাবে না, নির্দেশ বিচারপতি অমৃতা সিনহার
সম্প্রতি, শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে চার্জশিটে ED দাবি করেছে, নকল সংস্থার মাধ্য়মে সরকারি প্রকল্পের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করেছেন শেখ শাহজাহান। একাধিক ভুয়ো সংস্থা তৈরি করেছিলেন তিনি।সেই ভুয়ো সংস্থাকে তিনিই সরকারি কাজ পাইয়ে দিতেন। ঠিকাদার নয়, এমন ব্যক্তিকে ঠিকাদারের সাজিয়ে সরকারি কাজের বরাত আদায় করতেন।এইভাবে কোটি কোটি সরকারি প্রকল্পের টাকা ঘুরপথে আসত শেখ শাহজাহানের কাছে।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে।