সন্দেশখালি: সকালে গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বেড়মজুরের যে তৃণমূল নেতা, সন্ধ্যায় সেই অজিত মাইতিকে আটক করে মিনাখাঁ থানায় নিয়ে গেল পুলিশ। চাপের মুখে দুর্নীতির দায় শেখ সিরাজউদ্দিনের ঘাড়ে চাপিয়ে অজিত মাইতির দাবি, ২০১৯-এ মারধর করে তাঁকে তৃণমূলে যোগ দান করানো হয়েছে। এদিকে, অজিতকে সরিয়ে দেওয়ার দাবি করে মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, অত্যাচার করলে দল পাশে নেই। সেই অজিত মাইতিকেই এদিন গ্রেফতার করল পুলিশ।
রবিবার দুপুরে গ্রামবাসীদের তাড়া খেয়ে স্থানীয় এক সিভিক ভলান্টিয়ারের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছিলেন বেড়মজুরের তৃণমূল নেতা অজিত মাইতি। প্রায় ৫ ঘণ্টা ধরে পুলিশ কার্যত সেই বাড়ি ঘিরে রাখে। অন্ধকার নামতেই নাটকীয়ভাবে অজিত মাইতিকে সেই বাড়ি থেকে আটক করেছিল পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে জমি দখলের পাশাপাশি, অন্যের জমি জালিয়াতি করে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। জমি দখলের অভিযোগে, শুক্রবারই বেড়মজুরের তৃণমূল নেতা অজিত মাইতির বাড়িতে চড়াও হয়েছিলেন গ্রামবাসীরা। জুতো পেটা করা হয়েছিল তাঁকে।
দু'দিনও কাটল না। রবিবার ফের গ্রামবাসীদের ক্ষোভের মুখে পড়লেন অজিত মাইতি। সেখানেও পৌঁছে যান বিক্ষোভকারীরা। বাড়ির বাইরে তখন মোতায়েন প্রচুর পুলিশ, র্যাফ। তাও বিক্ষোভকারীদের দেখে ভয়ে সিঁটিয়ে রইলেন তৃণমূল নেতা। অজিত মাইতি যখন অন্যের বাড়ির ভিতর ভয়ে সিঁটিয়ে রয়েছেন, তখন বাইরে তাঁর বিরুদ্ধে একের পর এক অভিযোগ তুলে ক্ষোভে ফেটে পড়েন স্থানীয় বাসিন্দারা। এদিকে, একের পর এক অভিযোগের মুখে চাপে পড়ে শেখ সিরাজউদ্দিনের ঘাড়ে দুর্নীতির দায় চাপলেন অজিত মাইতি।
অজিত মাইতির কথায়, 'এই তৃণমূলের সিরাজবাবুর সঙ্গে থাকাটা উনি যতকিছু দুর্নীতি করেছেন, আমি ওনার সঙ্গে থেকে যেন পচা আলুর মতো হয়ে গেছি, এক বস্তা আলুতে যেমন একটা আলু পচে গেলে যে দুর্গন্ধ ছড়িয়ে যায়, সেই দাগটা আমার মধ্যে এসেছে।
অজিত কথার অর্থ, অপরাজিত। যাকে কখনও পরাজিত করা যায় না। কিন্তু সন্দেশখালির বেড়মজুরের যে অজিতের দাপটে এতদিন ভয় পেতেন গ্রামবাসীরা, তাঁকেই তাড়া খেয়ে লুকোতে হল অন্যের বাড়িতে। এবার গ্রেফতারও হলেন তিনি।
আপনার পছন্দের খবর আর আপডেট এখন পাবেন আপনার পছন্দের চ্যাটিং প্ল্যাটফর্ম হোয়াটস অ্যাপেও। যুক্ত হোন ABP Ananda হোয়াটস অ্যাপ চ্যানেলে