কৃষ্ণেন্দু অধিকারী, অরিত্রিক ভট্টাচার্য ও ময়ূখ ঠাকুর চক্রবর্তী: লোকসভা নির্বাচন চলাকালীন ফের খবরের শিরোনামে সন্দেশখালি, তবে এবার সম্পূর্ণ ভিন্ন কারণে। নির্বাচনের আগে সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের কর্মকাণ্ড  ঘিরে উত্তাল হয়েছিল বাংলার রাজনীতি। আর এবার সন্দেশখালি স্টিং ভিডিও ঘিরে চরমে রাজনৈতিক টানাপোড়েন। সন্দেশখালিতে ধর্ষণের কোনও ঘটনাই ঘটেনি, গোটাটাই শুভেন্দু অধিকারীর পরিকল্পনা ছিল বলে ভাইরাল ভিডিও-য় দাবি করতে শোনা গিয়েছে বিজেপি নেতাকে। ভিডিওটি সামনে আসার পর দু'বার বয়ান বদল করেছেন তিনি। সেই আবহেই সন্দেশখালি নিয়ে আরও একটি দাবি সামনে এল, যাতে শাহজাহান ঘনিষ্ঠের ডেরা থেকে যে অস্ত্র CBI উদ্ধার করেছিল, সেটি সাজানো ছিল কি না, এই প্রশ্ন উস্কে দিয়েছে। যদিও চক্রান্তের অভিযোগ তুলছে বিজেপি। (Sandeshkhali Sting)


এমনিতে লোকসভা নির্বাচন ঘিরে পারদ চড়ছে রাজ্য রাজনীতির, সেই আবহেই শনিবার রাজনৈতিক ভাবে ঘটনাবহুল দিন হয়ে রইল। সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্ষণ সংক্রান্ত অভিযোগ নিয়ে একটি স্টিং অপারেশনের ভিডিও সামনে আসে, তাতে অস্ত্র উদ্ধার নিয়েও চাঞ্চল্যকর দাবি করতে শোনা যায় বিজেপি-র আর এক মণ্ডল সভাপতিকে। শাহজাহানের ঘনিষ্ঠের ডেরা থেকে যে অস্ত্র CBI উদ্ধার করেছিল, তার পুরোটাই সাজানো বলে দাবি করেছেন তিনি। এক্ষেত্রেও কথোপকথনে নাম উঠে আসছে শুভেন্দুর। এবিপি আনন্দ এই ভাইরাল ভিডিও-র সত্যতা যাচাই করেনি। (Sandeshkhali Case)


ভিডিও-য় অস্ত্র উদ্ধার নিয়ে কথা বলা ব্যক্তিকে বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি শান্তি দলুই নামে শনাক্ত করা গিয়েছে। ভিডিও-তে যে কথোপকথন শোনা গিয়েছে, তা হল-


প্রথম ব্যক্তি : আজকে এই যে আপনারা, শুভেন্দুদা বা আপনাদের টিমের নির্দেশে এভাবে অস্ত্র রেখে CBI-কে ফোন করবে...প্রশাসন ঠিক থাকলে হত?

শান্তি দলুই, বিজেপি মণ্ডল সভাপতি' সন্দেশখালি (১): না। প্রশাসন ঠিক থাকলে হত না।

প্রথম ব্যক্তি : আজকে আপনাদের, শুভেন্দুদার কথাতে রিস্কের কাজগুলো করছেন, এই রিস্কগুলো কেন নিয়েছেন? যেন আগামী দিন সুস্থ থাকবেন। ...তাকে আপনি সহজভাবে ফেলতে পারবেন না। আপনি তো রাজনীতি করেন। সাধারণভাবে কি তৃণমূলকে ফেলতে পারবেন?

শান্তি দলুই, বিজেপি মণ্ডল সভাপতি' সন্দেশখালি (১) : না। আমি পারব না।


প্রথম ব্যক্তি : সরকার ঠিক থাকলে এত কিছু সম্ভব হত?

শান্তি দলুই, বিজেপি মণ্ডল সভাপতি' সন্দেশখালি (১): না। এভাবে হত না।

প্রথম ব্যক্তি : না আজকে এই শুভেন্দুদাকে এভাবে অস্ত্র রাখতে হত, না CBI-কে দিয়ে তোলাতে হত, যদি প্রশাসন ঠিক থাকত।

শান্তি দলুই, বিজেপি মণ্ডল সভাপতি' সন্দেশখালি (১): যদি প্রশাসন ঠিক থাকত।

তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণের আগে রাজ্য-রাজনীতিতে আলোড়ন ফেলে দিয়েছে সোশাল মিডিয়ায় তৃণমূলের পোস্ট করা ৩২ মিনিটের এই ভিডিও। যদিও এবিপি আনন্দ এই ভিডিওর সত্যতা যাচাই করেনি। এই ভিডিওর একাংশে যখন শোনা যাচ্ছে, সন্দেশখালির আন্দোলনের নেপথ্য়ে শুভেন্দু রয়েছেন, আরও  একটি অংশে দাবি করা হচ্ছে, সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহানের ঘনিষ্ঠের ডেরা থেকে যে অস্ত্র CBI উদ্ধার করেছিল, তার পুরোটাই সাজানো। এক্ষেত্রেও কথোপকথনে নাম উঠে আসছে শুভেন্দুর।


গত ২৬  এপ্রিল, দ্বিতীয় দফার ভোটগ্রহণ চলাকালীন দুপুরে সন্দেশখালিতে শেখ শাহজাহান ঘনিষ্ঠের বাড়ি থেকে অস্ত্র উদ্ধার, CBI-এর তল্লাশি অভিযান, NSG কমান্ডো থেকে, অস্ত্র খুঁজতে অত্যাধুনিক রোবট নামানো, এসব ঘিরে তোলপাড় পড়ে যায়। কিন্তু সে সবই কি ছিল সাজানো? এই প্রশ্ন তুলে দিল তৃণমূলের পোস্ট করা ভিডিও।



আরও পড়ুন: Sandeshkhali Sting Video: ‘সন্দেশখালির ঘটনা সাজানো, শুভেন্দুর নির্দেশে সব হয়েছে’, ভাইরাল ভিডিও-য় স্বীকারোক্তি BJP নেতার?

শনিবার বিকেলে ওই ভিডিও দেখিয়ে সাংবাদিক বৈঠক করেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্য়োপাধ্য়ায়। বিষয়টি ঘিরে তোলপাড় পড়ে গিয়েছে রাজ্য রাজনীতিতে। এ নিয়ে প্রতিক্রিয়া চাইলে ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তুলেছে বিজেপি। মেদিনীপুর থেকে দলের প্রার্থী অগ্নিমিত্রা পাল বলেন, "মণ্ডল সভাপতিকে কিনে ভিডিও করা হয়েছে, নাকি বিকৃত, সে তো আমি বলতে পারব না! অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের যদি এত অভিযোগ থাকে, তাহলে কোর্টে যাচ্ছেন না কেন?" তবে অগ্নিমিত্রা বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে না চাইলেও, তৃতীয় দফায় ভোটগ্রহণেপ আগে এবার ভাইরাল ভিডিও ঘিরে শিরোনামে সন্দেশখালি।