উত্তর ২৪ পরগনা: লোকসভা ভোটের আগে সন্দেশখালিকাণ্ড (Sandeshkhali Violence) একটা বড় ইস্যু। শেখ শাহজাহান গ্রেফতার হলেও , প্রত্যেক নির্যাতিতাই আজ বিচার চান। এবং সদ্য বঙ্গ সফরে এসে এনিয়ে বারংবার কথাও বলেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। তাই বলাইবাহুল্য, এই ইস্যু বঙ্গ রাজনীতিতে বড় প্রভাব ফেলেছে। গত কয়েকদিনে সন্দেশখালি যেতে গিয়ে বাধা পড়েছেন অনেকেই। শুভেন্দু,সুকান্ত থেকে শুরু করে নৌশাদ কেউই বাদ যাননি, সেই তালিকায়। আর এদিন বিজেপির এসটি মোর্চাকে সন্দেশখালি যেতে বাধা। ১৪৪ ধারা দেখিয়ে মালঞ্চতেই আটকে দিল পুলিশ (Police)। পুলিশের সঙ্গে বিজেপি বিধায়ক জুয়েল মুর্মুর বচসা। কার্যত অবরুদ্ধ বাসন্তী হাইওয়ে।
শেখ শাহজাহানের গ্রেফতার হওয়ার পর, সন্দেশখালিতে রাজনৈতিক কর্মসূচি তৃণমূলের। ১০ মার্চ ব্রিগেডে জন গর্জন সভার প্রস্তুতি বৈঠক করবেন সুজিত বসু, পার্থ ভৌমিক, নারায়ণ গোস্বামীরা। সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লকের রামপুরে দলীয় কর্মী, সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলবে তৃণমূল নেতৃত্ব। প্রসঙ্গত, প্রবল চাপের মুখে, শেষমেশ ED-র উপর হামলার ৫৬ দিনের মাথায় তৃণমূল নেতা শেখ শাহজাহানকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।কিন্তু, ২০১৭ সালে তাঁর আমলে যে অত্যাচার হয়েছে,সেই দগদগে স্মৃতি যেন কোনওভাবেই ভুলতে পারছেন না সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকার বাসিন্দারা।সন্দেশখালিতে মানুষ বিক্ষোভের সামিল হওয়ার পর অনেকেই প্রশ্ন তুলেছিলেন, এতদিন কেন মুখ বুজে ছিলেন তাঁরা? এই প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় সন্দেশখালির রাজবাড়ি এলাকায় গেলে।
এখন থেকে প্রায় ৭ বছর আগে শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে প্রতিবাদে সামিল হয়েছিলেন এলাকার মানুষ। মিছিল করে, পথ অবরোধ করে বিক্ষোভ জানিয়েছিলেন। কিন্তু তার পরিণতি যা হয়েছে, তা শুনে সিউড়ে ওঠার মতো। ঘটনার সূত্রপাত, শাহজাহান বাহিনীর বিরুদ্ধে এক মহিলাকে কটূক্তি করার অভিযোগকে ঘিরে। ওই মহিলার পরিবারের দাবি,রাস্তায় কটূক্তি করার পর, পাল্টা একজনকে চড় মেরেছিলেন ওই গৃহবধূ।অভিযোগ, এরপরই মহিলাকে ন্যাজাট থানার রাজবাড়ি আউটপোস্টের সামনে ফেলে বেধড়ক মারধর করা হয়। মাথায় এমন আঘাত করা হয়েছিল যে, মানসিক ভারসাম্য হারান তিনি।
আ রও পড়ুন, ভোটের আগে তমলুকে মমতা, নাম না করে শুভেন্দুকে জোর নিশানা, বললেন..
সন্দেশখালির আক্রান্ত মহিলার স্বামী ও বাসিন্দা বলেন, ১৭ সালে আমার এই জায়গা নিয়ে, মোটামুটি এই জায়গার উপরে নজর ছিল। শাহজাহান শেখ, সিরাজউদ্দিন মোল্লা, আলমগির ও জিয়া মোল্লা, এদের নজর ছিল। এটা দখল করে মার্কেট করার পরিকল্পনা ছিল। কিন্তু আমরা না দেওয়ার ফলে, তারপরে চেপে যায়। ওকে একটা খারাপ ইঙ্গিত করে কটূক্তি করে, আমার স্ত্রীকে। ও প্রতিবাদ করে। যখন প্রতিবাদ করে, এরা ওকে ঘিরে নেয়। এরা মারতে যায়, তখন ও একটা চড় মারে। জিয়াউদ্দিন। আমার স্ত্রীর কোলে আমার ভাইয়ের বাচ্চা ছিল, ৩ বছরের মেয়ে। ওকে মারে, মেয়েটাকে টেনে ছুড়ে ফেলে দেয়, ফেলে দেওয়ার পরে, একদম আউটপোস্টের সামনে। পুলিশ ৫ হাত দূরে আছে, দাঁড়িয়ে আছে, কোনও কিছু করছে না, ওকে মেরে অচৈতন্য করে ফেলে রেখেছে। একজন, কাউকে ধরেনি। উপরন্ত আমাদের নামে দু'জন কেস করে। আমাদের দু'জনকে জামিন নিতে হয়েছে।