কলকাতা: RG Kar- কাণ্ডে সিবিআইয়ের হাতে গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষ। জিজ্ঞাসাবাদের ১৫ দিনের মাথায় গ্রেফতার করা হল সন্দীপ ঘোষকে। সোমবার সিবিআইয়ের অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চ সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করেছে। আরজি করে মহিলা চিকিৎসক ধর্ষণ ও খুনের ২৬ দিনের মাথায় গ্রেফতার হলেন সন্দীপ ঘোষ। সিজিও কমপ্লেক্স থেকে সিবিআইয়ের অ্যান্টি করাপশন ব্রাঞ্চের অফিসারেরা সন্দীপ ঘোষকে গাড়িতে তুলে নিজাম প্যালেসে নিয়ে আসেন। তারপরেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছে। 


আরজি করে আর্থিক তছরুপের যে একাধিক অভিযোগ জমা পড়েছে। তার ভিত্তিতে তদন্ত করছে সিবিআইয়ের দুর্নীতি দমন শাখা। এদিন সেই শাখার হাতেই গ্রেফতার হয়েছেন সন্দীপ ঘোষ। আরজি কর হাসপাতালের প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি এর আগে একাধিক মারাত্মক অভিযোগ এনেছিলেন সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে। আরজি কর হাসপাতালে পরিচালনা নিয়ে একাধিক অভিযোগ করেছিলেন তিনি। ইতিমধ্যেই তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদ করেছে সিবিআই। 


দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করলেই ডাক্তারদের বদলি করে দিতেন সন্দীপ ঘোষ, এমনই অভিযোগ করেছিলেন আখতার আলি। ২০২৩ সালে জুলাইয়ে ভিজিল্যান্স কমিশনারকে একটি অভিযোগপত্র পাঠিয়েছিলেন আখতার আলি। সেখানে ১৫ রকম অভিযোগের কথা উল্লেখ করেছিলেন। যেখানে সন্দীপ ঘোষের বিরুদ্ধে, সরকারি অর্থের অপচয়, টেন্ডার না ডেকে সরকারি জায়গা খাবারের দোকান, ক্যাফে, ক্যান্টিন, সুলভ শৌচালয়ের জন্য বরাদ্দ করা, ভেন্ডার বাছাইয়ের ক্ষেত্রে স্বজন পোষণ, অযোগ্য়দের কোটি কোটি টাকার বরাত, ইচ্ছাকৃতভাবে আর্থিক নিয়ম এড়িয়ে যাওয়ার অভিযোগ করেন প্রাক্তন ডেপুটি সুপার আখতার আলি। তিনি জানিয়েছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর অফিসে গিয়েও একটা অভিযোগ জানিয়েছিলেন তিনি। আগেই তিনি একবার অভিযোগ করেছিলেন, 'উনি ছাত্রদের কাছ থেকে পয়সা নিয়ে ফেল করাতেন। উনি ছাত্রদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার করতেন। ওনার কতগুলো পেটোয়া ছাত্র ছিল যাঁরা অন্য ছাত্রদের ওপর নির্যাতন করত। তাঁদের মারধর করা, পয়সা কালেকশন করা-এটার বিরুদ্ধে ছাত্ররা এক মাসের ওপরে আন্দোলন করেছে। ছাত্ররা কুকুরের মতোন ওনাকে তাড়া করেছিল। তখনও কিন্তু সরকার কোনও ব্যবস্থা নেয়নি ওনার বিরুদ্ধে।উনি আবার চেয়ারে বসে গেলেন।'


এ দিন আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষর গ্রেফতারির খবর পেতেই খুশির হাওয়া ছড়িয়ে পড়ে আন্দোলনরত জুনিয়র ডাক্তারদের মধ্যে। তবে তাঁদের আরও দাবি, সব দোষীদের গ্রেফতার করতে হবে। তাঁদের দাবি, যেটা পুলিশ-স্বাস্থ্যভবন করতে পারেনি সেটা সিবিআই করে দেখিয়েছে। আন্দোলনকারী জুনিয়র চিকিৎসকদের তরফে অনিকেত মাহাতো জানান, 'আর্থিক তছরূপ কাণ্ডে সন্দীপ ঘোষকে গ্রেফতার করা হয়েছে। মেডিক্যাল এথিক্সের জায়গা থেকে এখন স্বাস্থ্যভবনকে কী করা উচিত তা বলে দেওয়ার দরকার আছে বলে মনে হয় না।' সন্দীপ ঘোষের গ্রেফতারি আন্দোলনের আংশিক নৈতিক জয় বলে মনে করছেন তাঁরা।  


আরও পড়ুন: CBI-এর হাতে গ্রেফতার সন্দীপ ঘোষ, কী বললেন নির্যাতিতার বাবা ?