কলকাতা: বাংলায় রাহুল গান্ধীর 'ভারত জোড়ো ন্যায়যাত্রা'-র আগেই ছন্দপতন ।  লোকসভা নির্বাচনের আগে BJP বিরোধী I.N.D.I.A শিবিরে জোর ধাক্কা। আসন সমঝোতা নিয়ে টানাপোড়েনের জেরে বাংলায় একা লড়ার ঘোষণা করেছেন তৃণমূলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার ব্যাপারে কংগ্রেসের সঙ্গে কোনও সম্পর্ক নেই বলে যেমন জানিয়েছেন, তেমনই জানিয়েছন, নির্বাচনের পর পরিস্থিতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেবেন। মমতার এই ঘোষণায় স্বাভাবিকভাবেই উত্তাল জাতীয় রাজনীতি। এদিকে এহেন সময়েই অধীর চৌধুরীকে (Adhir Ranjan Chowdhury)  কাঠগড়ায় দাঁড় করালেন তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন। বললেন, 'বাংলার জোটের কবর খুড়েছেন অধীর চৌধুরী।'


'দিল্লিতে দোস্তি, বাংলায় কুস্তি' অনেক আগেই বলেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সেই আশঙ্কাই সত্যি হল ! গত বৃহস্পতিবার সংবাদমাধ্যমে দলের সিদ্ধান্তের কারণ নিয়ে মুখ খোলেন ডেরেকও। তিনি একেবারেই সরাসরি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীররঞ্জন চৌধুরীকে এই ঘটনার কারণ হিসেবে কাঠগড়ায় তোলেন। বলেন, বাংলায় তৃণমূলে এবং কংগ্রেসের মধ্যে জোটের সমীকরণ কাজ না করার জন্য় দায়ি, 'অধীর রঞ্জন চৌধুরী।' কংগ্রেসের সঙ্গে সম্পর্ক নেই বলে  মমতা দাবি করার পর থেকেই অধীরের সঙ্গে তাঁর তিক্ততার কথা উঠে আসছিল বারবার। আর সেখানেই যবনিকা টানলেন ডেরেক। আর এবার'বাংলার জোটের কবর খুড়েছেন অধীর চৌধুরী। বাংলার সরকার নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করে', রাহুল গাঁধীর সভায় অনুমতি না মেলার প্রসঙ্গে মন্তব্য শান্তনু সেনের। 


জোটধর্ম ভাঙার দায় কংগ্রেসের ওপর চাপানোর কৌশল তৃণমূলের? কংগ্রেস সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, কংগ্রেসের অধ্যক্ষ কথা বলেছেন। রাহুলজি কথা বলেছেন। আমাদের সংগঠনের সেক্রেটারি কথা বলেছেন। আর যদি কোনও লিখিত আমন্ত্রণ পত্র থাকে আমি কপি চেয়ে আপনাদের দিতে পারি। কিন্তু, আমি জানি যে ৩-৪ বার খাড়গেজি, নিজের ভাষণে বলেছেন, সব I.N.D.I.A-র অন্তর্ভুক্ত সব দলের নেতাদের সঙ্গে কথা বলেছেন।' 


মূলত, মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় যখন কংগ্রেসে ছিলেন, তখন থেকেই অধীর চৌধুরীর সঙ্গে তাঁর তিক্ত সম্পর্ক। সোমেন মিত্রর উদ্যোগে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ার পরে ১৯৯১ সালের বিধানসভা ভোটে মুর্শিদাবাদের নবগ্রামে প্রার্থী হয়েছিলেন অধীর। সে বার হাজার দু’য়েক ভোটে তিনি হেরে যান। ১৯৯৬ সালে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র ফের ওই কেন্দ্রে প্রার্থী করেছিলেন অধীরকে। তৎকালীন রাজ্য যুব কংগ্রেস সভাপতি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে জোরালভাবে সরব হয়েছিলেন। কিন্তু সেবার প্রায় ২০ হাজার ভোটে জিতেছিলেন অধীর। সেই তিক্ততা আজও যায়নি। অধীর চৌধুরী মানেই কট্টর মমতা বিরোধী।


আরও পড়ুন, I.N.D.I.A থেকে আবার এনডিএ-তে? বিহারে BJP-র সঙ্গে সরকার গড়তে পারেন নীতীশ


কয়েকদিন আগেই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী পশ্চিমবঙ্গে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার দাবি তোলেন। অধীর চৌধুরী বলেন, 'এই যেখানে অবস্থা পশ্চিমবঙ্গের আইনশৃঙ্খলার, সেখানে এটা রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার উপযুক্ত ক্ষেত্র। রাষ্ট্রপতি শাসন করার জন্য় উপযুক্ত আইনশৃঙ্খলার অবনতি হয়েছে বাংলায়।'  এমন বক্তব্যের প্রেক্ষিতে বারবার অধীর চৌধুরীকে তীব্র আক্রমণ করেছেন তৃণমূল নেতারা।