কলকাতা: সারদা কর্তা (Saradha Scam) সুদীপ্ত সেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা অধুনা বিজেপি নেতা (Sudipta Sen) শুভেন্দু অধিকারীকে (Suvendu Adhikari) টাকা দেওয়ার কথা জানিয়েছেন। রীতিমতো তাঁকে ব্ল্যাকমেইল করা হতো বলে অভিযোগ করেছেন। তা নিয়ে বিরোধী দলনেতার বিরুদ্ধে এ বার এককাট্টা হতে শুরু করল তৃণমূল (TMC)। শুভেন্দুর অবিলম্বে গ্রেফতারির দাবিতে এ বার রাস্তায় নামছে তারা। সোমবার  বিধাননগরে সিজিও কমপ্লেক্সের (CGO Complex) সামনে সভার ডাক দিল তৃণমূলের যুব সংগঠন এবং তৃণমূল ছাত্র পরিষদ (TMC)। সেখানে অবিলম্বে শুভেন্দুকে গ্রেফতারির দাবি তুলবেন তাঁরা।


শুভেন্দুকে গ্রেফতারের দাবি তৃণমূলের


সারদা কর্তার থেকে টানা নেওয়ার অভিযোগ ঘিরে শুক্রবারই  শুভেন্দুকে তীব্র আক্রমণ করেন তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক তথা মুখপাত্র কুণাল ঘোষ (Kunal Ghosh)। সারদা এবং নারদ, দুই কাণ্ডে নাম থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র বিজেপি-র ছত্রছায়ায় থাকার ফলে শুভেন্দু পার পেয়ে যাচ্ছেন বলে অভিযোগ করেন তিনি। শনিবার তিনিই শুভেন্দুর বিরুদ্ধে সভার কথা জানান। সাংবাদিক বৈঠকে কুণাল বলেন, সোমবার বিধাননগরে সিজিও কমপ্লেক্সের সামনে সভা করবে। মূল বক্তব্য, সারদা এবং নারদ কেলেঙ্কারিতে অবিলম্বে শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করতে হবে। আমরা মনে করি, সিবিআই এবং ইডি-তে অেক দক্ষ অফিসার রয়েছেন। তাঁরা নিরপেক্ষ ভাবে কাজ করতে চান। কিন্তু বিজেপি নিজেদের রাজনৈতিক দেউলিয়াপনা ঢাকতে, কেন্দ্রীয় সংস্থআগুলিকে নিজেদের স্বার্থে অপব্যবহার করছেন।"


এর পাল্টা রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেন, "তদন্তের প্রয়োজন থাকলে, দাবির ভিত্তি থাকলে, সরাসরি আদালতে যান না! আদালতের দরজা খোলা। যত তদন্ত হচ্ছে আদালতের নির্দেশেই হচ্ছে। সিবিআই দফতরের সামনে গিয়ে আন্দোলন করলেই, কাউকে গ্রেফতার করবে, এটা হতে পারে!"


আরও পড়ুন: Ankita Adhikari SSC : অঙ্কিতার জায়গায় ববিতা এসে ভাল করে পড়াক বাচ্চাদের,বলছেন অভিভাবকরা


সিপিএম-এর কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, "সারদা চিটফান্ড কাণ্ডে কেন শুভেন্দু অধিকারীকে গ্রেফতার করা হবে না? কুণাল ঘোষ একসময় দাবি করেন, সারদা থেকে সবচেয়ে বেশি সুবিধা নিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাহলে এক নম্বরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দুই নম্বরে শুভেন্দু অধিকারী। সেই ভাবেই গ্রেফতারির দাবি হোক। নইলে বিষয়টি হাস্যকর বলেই মনে হবে। শুভেন্দুর থেকে ভাগ পায়নি বলেই তৃণমূলের রাগ। তাই সারদাকাণ্ডে শুভেন্দু-সহ সকলকে গ্রেফতার হোক।"


বিরোধীদের কটাক্ষের মুখে তৃণমূলও


প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরীও তৃণমূলকে একহাত নেন। তাঁর কথায়, "আরও তদন্ত হোক। কালিম্পংয়ের ডেলো পাহাড়ে ভোটের আগে সুদীপ্ত সেনের সঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কী কথা হয়েছিল নির্বাচনের? তৃণমূল নিজে কত টাকা খেয়েছে, তদন্ত হোক। দলের নেতা এর আগে ৯০-১০০ পাতার চিঠি দিয়েছিল। তার মর্মার্থ বার করা হোক। শুভেন্দু যদি চোর হন, তৃণমূল যেমন বলছে, তৃণমূলের বাকি লোকেরাও চোর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে চোরদের নেতৃত্ব দিয়েছেন এবং আজও দিয়ে চলেছেন।"


সুদীপ্ত সেনের মন্তব্যের পর গত কাল থেকেই শুভেন্দুকে নিয়ে সুর চড়িয়েছে তৃণমূল। কিন্তু এ নিয়ে বিরোধী দলনেতা কোনও প্রতিক্রিয়া জানাননি।