কলকাতা: সারদা দুর্নীতির তিনটি মামলায় বেকসুর খালাস সুদীপ্ত সেন ও দেবযানী মুখোপাধ্যায়। কোটি কোটি টাকার চিটফান্ড সংক্রান্ত তিনটি মামলা থেকে ১২ বছর পর মুক্তি পেলেন তাঁরা। ভারতীয় দণ্ডবিধির অনুচ্ছেদ ৪০৬ (অপরাধমূলক বিশ্বাসভঙ্গ), ৪২০ (প্রতারণা)-এ অভিযুক্ত ছিলেন। তবে তিনটি মামলায় জামিন পেলেও, এখনই জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না সারদা কর্তা। (Saradha Scam Case)

২০১৩ সালের আর্থিক প্রতারণা সংক্রান্ত তিনটি মামলায় বেকসুর খালাস পেলেন সুদীপ্ত ও দেবযানী। এই প্রথম কোনও মামলায় একেবারে বেকসুর খালাস হলেন দু'জন। মঙ্গলবার কলকাতার ব্য়াঙ্কশাল কোর্ট তাঁদের বেকসুর খালাস করল। এদিন সশরীরে আদালতে হাজিরা দেন সুদীপ্ত ও দেবযানী। তবে তিনটি মামলায় জামিন পেলেও, এখনই জেল থেকে ছাড়া পাচ্ছেন না তাঁরা। এই মুহূর্তে প্রেসিডেন্সি জেলে রয়েছেন সুদীপ্ত। দেবযানী রয়েছেন দমদম জেলে। (Sudipto Sen)

এই তিনটি মামলার শুনানি চলাকালীন প্রায় ১৫ জন সাক্ষ্য দেন আদালতে। গোড়ায় ৫০ জন সাক্ষীর কথা বলা হলেও, বাকিদের সাক্ষ্যদানে হাজির করানো যায়নি। সেই নিয়ে সুদীপ্ত এবং দেবযানীর আইনজীবী আদালতে জানান, একটি মামলাতেও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে অপরাধ প্রমাণ করতে পারেননি সরকারি আইনজীবী। আর তাতেই সুদীপ্ত ও দেবযানীকে বেকসুর খালাস করা হল। ২০১৩ সালের ২৩ এপ্রিল এই চিটফান্ড মামলাতেই জম্মু ও কাশ্মীরের সোনমার্গ থেকে গ্রেফতার হন সুদীপ্ত ও দেবযানী। (Debjani Mukherjee)

সুদীপ্ত এবং দেবযানীর বিরুদ্ধে আরও একাধিক মামলা রয়েছে। বিচারবিভাগীয় হেফাজতে রয়েছেন তাঁরা। সুদীপ্ত এবং দেবযানীর বিরুদ্ধে ২৫০টি মামলা দায়ের হয়েছিল। তবে এখনও পর্যন্ত মামলার নিষ্পত্তি হয়নি। আগামী দিনে এই রায়ের  প্রভাব অন্য মামলাগুলিতেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। 

সারদা কেলেঙ্কারিকে ঘিরে একসময় রাজ্য রাজনীতি উত্তাল হয়ে উঠেছিল। ২০১৩ সালে সারদাকাণ্ড সামনে আসার দুজনের বিরুদ্ধে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ জানিয়ে হেস্টিংস থানায় অভিযোগ জানান আমানতকারীরা। সেই মামলার তদন্তভার ওঠে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা CBI এবং কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা ED-র হাতে। ১২ বছর পর সেই মামলাতেই দুজনকে বেকসুর খালাস করল ব্য়াঙ্কশাল কোর্ট। তিন মামলাতে বেকসুর খালাস হলেও আপাতত জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার কোনও সম্ভাবনাই নেই।

এদিন রায় শুনে দেবযানীর মা শর্বরী মুখোপাধ্যায় বলেন, "অনেক দেরি হল। তবে বিচার পেলাম। বিচারব্যবস্থার উপর আস্থা পেলাম। আশা করছি, দেরিতে হলেও বিচার পাব। সত্যের জয় হবেই।" এই মামলাকে ঘিরে রাজনৈতিক আক্রমণ, পাল্টা আক্রমণও চোখে পড়েছে বিস্তর। সারদাকাণ্ডের তদন্তে রাজ্য় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে যেমন প্রশ্ন তুলেছে রাজ্যের প্রধান বিরোধী দল বিজেপি। তেমনই কেন্দ্রে বিজেপি সরকারের অধীনে থাকা CBI-এর তদন্তপ্রক্রিয়া নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূলও। কিন্তু আমানতকারীরা কি বিচার পাবেন? নেই সদুত্তর।